ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্রেতা-দর্শনার্থীর অভাব

প্রচারের অভাবে শিল্পমেলা জমে ওঠেনি

প্রকাশিত: ১০:১১, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 প্রচারের অভাবে শিল্পমেলা জমে ওঠেনি

সৈকত দত্ত ॥ প্রচারের অভাবে জাতীয় শিল্পমেলা জমে ওঠেনি। ক্রেতা-দর্শনার্থীর অভাবে উদ্যোক্তাদের নিজস্ব পণ্য বিক্রয়ের পরিমাণও অনেক কম। উদ্যোক্তারা যে লক্ষ্যে নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তা পূরণ হয়নি। বেচাকেনা কম হওয়ার কারণে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হতাশায় পড়েছে। শুক্রবার ছিল মেলার ষষ্ঠ দিন, কিন্তু মেলাতে সেভাবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়নি। স্টলের বিক্রেতারা বলতে গেলে অলস সময় পার করছে। হাতেগোনা কিছু দর্শনার্থীর দেখা পাওয়া গেলেও, তারাও শুধু ঘুরে ঘুরে দেখছে। তবে কিছু ক্রেতাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ক্রয় করতে দেখা গেছে। শিল্পমেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পণ্যে বিক্রি হলেও, বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বা অর্ডারের হার প্রায় শূন্যের কোঠায়। মেলার ষষ্ঠ দিনেও একটিও ব্রয়লার মেশিন ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারেনি গোল্ডেন ব্রয়লার কোম্পানি। বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মেলা কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার জন্য ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হওয়ার অভিযোগ করেছে। তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, খারাপ আবহাওয়ার জন্য মেলাতে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। আমরা শিল্পমেলা উপলক্ষে ব্যাপক প্রচার করেছি। জাতীয় শিল্পমেলা এবার প্রথম আয়োজন হওয়ার কারণে মেলাতে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম। আগামীতে শিল্পমেলায় কোন রকম সমস্যা থাকবে না। মোস্তাফিজুর রহমানের কথার ওপর ভিত্তি করে জনকণ্ঠের অনুসন্ধানে উঠে আসে, খারাপ আবহাওয়ার জন্য যেমন ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হয়েছে। তেমনি বড় মেলা আয়োজন করতে যেভাবে প্রচার লাগে, তা শিল্পমেলায় অভাব ছিল। ঢাকা শহরের অনেক মানুষ জানে না যে, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শিল্পমেলা হচ্ছে। অনুপম সিল্ক গার্মেন্টসের কর্ণধার হতাশার কণ্ঠে জনকণ্ঠকে বলেন, মেলাতে যেভাবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিত আশা করেছিলাম, তা পূরণ হয়নি। বাণিজ্যমেলাতে একমাত্র প্রচারের কারণে ক্রেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু শিল্পমেলায় তেমন প্রচার চোখে পড়েনি। যদি আরও ব্যাপকভাবে প্রচার করা যেত তাহলে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে মেলা সরগরম থাকত। বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি এবং ৯০ লাখ টাকার একটি গাড়ির অর্ডার পেয়েছে, কিন্তু মোটরসাইকেলের ক্রেতা নেই বললেই চলে। মেলার ছয়দিনেও একটি বাইকও ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারে নাই। মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলোও বিক্রি না হওয়ার কারণ হিসেবে শিল্পমেলার প্রচারের অভাবকে দায়ী করছে। মেলায় বিশাল জায়গা জুড়ে নাদিয়া ফার্নিচার স্থান পেয়েছে। তাদেরও বিক্রি বা অর্ডার সেভাবে আসে নাই, কিন্তু তাদের পণ্যের ওপর ব্যাপক মূল্যছাড় রয়েছে। নাদিয়া ফার্নিচারের সহকারী ম্যানেজার জনকণ্ঠকে বলেন, মেলাতে অংশগ্রহণ করার প্রধান উদ্দেশ্য পণ্যের প্রচার। যদি ক্রেতা-দর্শনার্থী সরগরম না থাকে, তাহলে মেলাতে পণ্যের প্রচার কিভাবে করব? শিল্পমেলার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে, কিন্তু সেটাও সঠিকভাবে প্রচার হয়নি। আজকে মেলার শেষদিন ছিল, কিন্তু দুইদিন সময় বৃদ্ধি করে আগামী সোমবার পর্যন্ত মেলার সকল কার্যক্রম চলমান থাকবে। উল্লেখ্য, ৩১ মার্চ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শিল্পমেলার উদ্বোধন করেন। জাতীয় শিল্পমেলা এবারই প্রথম আয়োজিত হচ্ছে। মেলায় স্থায়িত্ব সাতদিন থেকে বৃদ্ধি করে নয় দিনব্যাপী করা হয়েছে।
×