ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সৎভাইকে বন্দী রেখে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ৬ এপ্রিল ২০১৯

  সৎভাইকে বন্দী রেখে বাড়ি থেকে  উচ্ছেদের পাঁয়তারা

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ গৌরীপুরে সৎভাই ওয়াজিদুল হককে গৃহবন্দী রেখে একঘরে করে নানাভাবে হয়রানিসহ পৈত্রিক বাড়ি ভিটা থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে একই পরিবারের অপর সদস্যরা। অভিযোগ, ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় ওয়াজিদুলের পরিবারকে এলাকা ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে সৎভাই শামসুল হক ওরফে শামসু মেকারসহ অপর ৩ ভাই। এমতাবস্থায় উদ্বেগ আর আতঙ্কে দিন কাটছে নিরীহ ওয়াজিদুল পরিবারের। তবে নিরাপত্তা প্রদানসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। পৈত্রিক জমির দখল ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এই বিরোধের উদ্ভব বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানায়, গৌরীপুর উপজেলার তাতকুড়া মৌজায় বাড়ি ভিটার এক একর ১২ শতক জমি ছাড়া আরও কিছু জমির মালিক ছিলেন মৃত তালে হোসেন। অভিযোগ, কনিষ্ঠ ওয়াজিদুল হক জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকার সুযোগে পৈত্রিক বাড়িভিটার কতক জমিসহ আরও একখন্ড জমি জবরদখল করে নেয় অপর ৩ সৎভাই নুরুল হক, শামসুল হক ওরফে শামসু মেকার ও সিরাজুল হক। ভাগবণ্টন ছাড়াই পৈত্রিক জমির বেশিরভাগ এবং নিজের নামে থাকা আরও ১০ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখলে নিয়েছে শামসুল হক। দলিলে যে স্বাক্ষর দেখানো হচ্ছে সেটি নিজের নয় বলে দাবি পড়ালেখা না জানা ওয়াজিদুলের। এমতাবস্থায় গত জানুযারি মাসে পৈত্রিক ভিটাতে ফিরে এসে জমির ভাগ দাবি করলে ওয়াজিদুলকে নানাভাবে হয়রানিসহ উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালায় সৎ ভাইয়েরা। এ সময় ওয়াজিদুলের বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়ার পথে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিসহ অনেকটা গৃহবন্দী ও একঘরে করারও চেষ্টা করা হচ্ছে। ওয়াজিদুলের অভিযোগ, পৈত্রিক জমির ন্যায্য হিস্যা দাবি করার অপরাধে ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে তার পরিবারকে। একঘরে করে রাখতে বাড়ি ভিটা থেকে বের হওয়ার পথে করা হচ্ছে পাকা স্থাপনাসহ দেয়াল নির্মাণের কাজ। ওাজিদুলের স্ত্রী মমতাজ অভিযোগ করে জানান, স্বামী ঢাকায় থাকেন। সৎ ভাইদের অত্যাচারে বসতভিটায় টিকতে পারছেন না তিনি। কদিন আগেও শামসু মেকারের ছেলে ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সৎভাই শামসুল হক ওরফে শামসু মেকার জানান, তিনি বাড়িতেই থাকেন না। পৈত্রিক জমির যে ভাগ ওয়াজিদুল হক দাবি করছেন সেটি তার বাবা তাদের ৩ ভাই ও তার সন্তানের নামে রেজিস্ট্রি করে রেখে গেছেন। বসতভিটার বাইরে ওয়াজিদুল হকের নিজের নামে থাকা ১০ শতাংশ জমি গত ১৯৯৮ সালে তার কাছে বিক্রি করে ঢাকায় চলে যায়। শামসু মেকারসহ ৩ ভাই ও তার সন্তানের নামে রেজিস্ট্রি করা পৈত্রিক ভিটা জমির যে দলিল দেখানো হয় তাতে বেশ কয়েটি দাগ ও খতিয়ান ভুল বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার দেনদরবার হলেও মহলবিশেষের কারসাজিতে সমস্যার সমাধান ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে স্থানীয়দের বেশিরভাগ মনে করেন সামাজিকভাবে উদ্যোগ নিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব। সৎভাই ও তাদের ভাড়া সন্ত্রাসীদের হুমকিসহ উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকা ওয়াজিদুল জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৫ মার্চ গৌরীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তারপরও নানা শঙ্কায় দিন কাটছে ওয়াজিদুল ও তার পরিবারের।
×