ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আল্পনায় রঙিন হবে যশোর

প্রকাশিত: ০৯:২২, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 আল্পনায় রঙিন হবে যশোর

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আবহমান বাংলার সর্বজনীন প্রাণের উৎসব ‘বাংলা বর্ষবরণ’। চিরায়ত নিয়মে নতুনকে জায়গা দিতে আর মাত্র ১১ দিন পর কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে বাংলা বর্ষ ১৪২৫। শুরু হবে নতুন বছর ১৪২৬। তাই প্রকৃতির নিয়মে পুরাতনকে বিদায় আর নতুনকে স্বাগত জানাতে উৎসব আমেজে মেতেছে বাংলার জনপদ। ১৪২৫ বিদায় আর ১৪২৬ স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে আবেগপ্রবণ ও উৎসবপ্রিয় আপামর বাঙালী। সেই সঙ্গে পহেলা বৈশাখে বর্ণিল সাজে ঢাক-ঢোলের বাদ্যে উৎসবে মাততে প্রস্তুত হচ্ছে যশোরবাসী। এ বছর জেলা প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা বর্ষবরণে আল্পনায় রাঙানো হবে যশোরের রাজপথ। রাষ্ট্রীয়ভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ উদ্যাপনের লক্ষ্যে একই সঙ্গে যশোরের ঐতিহ্য বজায় রেখে বরাবরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু জানান, দিন দিন উৎসবের পরিধি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিরাপত্তার পরিধি। এসব নিয়েই আমরা চাই মুক্ত পরিবেশে উৎসবের আমেজ। ভয়ভীতি শূন্য হয়ে আপামর বাঙালী এ উৎসবে শামিল হবে এটাই আমাদের চাওয়া। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানটি একটি সর্বজনীন উৎসব। এখানে কোন নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত নয়। আবার এ উৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম বাড়ানো উচিত। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা বা সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া কোন সমাধান নয়। এদিকে উৎসবকে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মাতাতে জেলা প্রশাসনসহ যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো প্রতিবছর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবারও তার ব্যত্যয় হবে না। নববর্ষের প্রথম দিন সকাল ৮টায় কালেক্টরেট চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে বকুলতলা-দড়াটানা-চৌরাস্তা-চারখাম্বার মোড়-সার্কিট হাউজ মোড়-মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার কালেক্টরেট চত্বর এসে শেষ হবে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের সুবিধামতো স্থানে স্ব-স্ব ব্যানারে দিনব্যাপী নানা আয়োজন করবে। এদিকে, বর্ষবরণের পথিকৃত যশোর তার ঐতিহ্য অনুযায়ী সাংস্কৃতিক সংগঠনে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চলতি বছরের শেষ অর্থাৎ ৩০ চৈত্র ও নতুন বছরের প্রথম দিনটি কে কিভাবে স্বাগত জানাবে তার জন্য আগেভাগেই শুরু হয়ে গেছে মহড়া ও সাজ-সজ্জা। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় স্বকীয়তা বজায় রাখতে প্রত্যেক সংগঠন নতুন বছরের প্রথম দিন তাদের নিজস্ব ভাবনায় উপহার দেবে ব্যতিক্রমী নানা আয়োজন। তারই প্রস্তুতিতে দিনরাতকে একাকার করে ফেলেছেন যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কেরানীগঞ্জ নিজস্ব সংবাদদাতা কেরানীগঞ্জ থেকে জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জে বৈশাখ উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেরানীগঞ্জের তৈরি পোশাক শ্রমিকরা । ‘বর্ণিল সাজে রঙিন পোশাক’ প্রবাদটি বাঙালীর প্রাণের উৎসবে সবচেয়ে বেশি পূর্ণতা পায় । প্রাণের এই উৎসবে সারাদেশে রঙিন পোশাকের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা কেরানীগঞ্জের তৈরি পোশাাক প্রতিষ্ঠানগুলো। পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিষ্ঠান ও কারখানাগুলোর মালিক-শ্রমিক। দিনরাত মেশিনের চাকা ঘুরছে। তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন নামের ও দামের বৈশাখী জামা, শাড়ি ও পাঞ্জাবি । তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা বলেন, পাঞ্জাবি, ফতুয়া সারাবছর বিক্রি হয় না। এটা মৌসুমি ব্যবসা। উৎপাদিত জামা পহেলা বৈশাখের একদিন আগেও যদি বিক্রি করতে পারি তাহলে টার্গেট মতো পৌঁছাতে পারব। তা না হলে লোকসান গুনতে হবে। খুচরা ব্যবসায়ীরা অনুরূপ লেনদেন করছে। মফস্বলের পাইকাররা পছন্দ মতো ডিজাইনের জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করে পোশাক ডেলিভারি নিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা দুই মাস আগ থেকে তৈরি শুরু করছে বৈশাখী পোশাক কয়েক দিন পরই পহেলা বৈশাখ। সারাদেশের চাহিদা মিটিয়ে কিছু পোশাক এখন বিদেশে যাচ্ছে। কেরানীগঞ্জের গার্মেন্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ স্বাধীন শেখ বলেন, উৎপাদিত এসব পোশাকের শতকরা ৯৫ ভাগ তৈরি করা হয়েছে বাঙালীর নান্দনিক ঐতিহ্য। এখানকার তৈরি পোশাক এখন সারাদেশের মার্কেট, বিপণিবিতান ও শপিংমলে শোভা পাচ্ছে ।
×