ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় স্ত্রীকে মারধর

প্রকাশিত: ০৯:২০, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে  অস্বীকার করায়  স্ত্রীকে মারধর

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৫ এপ্রিল ॥ বাবার বাড়ি থেকে বিল্ডিং নির্মাণের টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় নাজমা আক্তার (৩০) নামের দু’সন্তানের জননীকে মারধর করেছে স্বামী ইব্রাহিম মাঝি। আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলার চাওড়া পাতাকাটা গ্রামে। জানা গেছে, উপজেলার চাওড়া বেতমোর গ্রামের ছালাম ফকিরের কন্যা নাজমাকে একই ইউনিয়নের পাতাকাটা গ্রামের সেকান্দার মাঝির ছেলের সঙ্গে ২০০৩ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ২০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে হয় স্বামীকে। টাকা এনে না দিলেই নামে অমানসিক নির্যাতন। গত বুধবার বিল্ডিং নির্মাণ করবে বলে নাজমাকে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দিতে বলে স্বামী ইব্রাহিম। নাজমা এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করেন তিনি। পরে একটি ইজিবাইকে তুলে স্ত্রী নাজমাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এবং শাসিয়ে দেয় টাকা না নিয়ে বাড়িতে না আসার। স্বজনরা তাকে ওইদিন রাতে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। চিকিৎসা নেয়ায় শুক্রবার সকালে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে শাসিয়ে গিয়েছে ইব্রাহিম। হুমকি দিয়েছে কিছু করলে সেও দেখিয়ে দেবে এমন অভিযোগ স্ত্রী নাজমা ও তার স্বজনদের। শুক্রবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, নাজমার বাহু, উড়ু, পায়ের গোড়া, হাটুতে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। শরীরের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। আহত গৃহবধূ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিয়ের ১৬ বছরে বহুবার টাকার জন্য নির্যাতন করেছে। একটু কিছু হলেই বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে হয়। টাকা না এনে দিলেই নামে অমানসিক নির্যাতন। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করছি। আরেক গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা ॥ স্বামী হেলাল হাওলাদারের অপবাদ সইতে না পেরে নববধূ রুনা আক্তার (২০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আহত রুনাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে তালতলী উপজেলার মোমেশেপাড়া গ্রামে। জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে বরগুনা সদর উপজেলার রক্ষাচন্দ্রী গ্রামের মৃত্যু ছালাম প্যাদার মেয়ে রুনার তালতলী উপজেলার মোমেশেপাড়া গ্রামের সুলতান হাওলাদারের ছেলে হেলাল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নববধূ রুনাকে স্বামীর বাড়িতে তুলে নেয়া হয়। তুলে নেয়ার পর থেকেই রুনাকে স্বামী হেলাল বিভিন্নভাবে অপবাদ দিয়ে আসছিল এমন অভিযোগ রুনার। স্বামীর অপবাদ সইতে না পেরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নববধূ রুনা বাবার বাড়িতে চলে যায়। এ নিয়ে মঙ্গলবার স্থানীয়রা মীমাংসা বৈঠকে বসে। বুধবার রুনা স্বামীর বাড়িতে আসলে স্বামী হেলাল হাওলাদার স্ত্রী রুনাকে পাঁচ মাসের অবৈধ সন্তান নষ্ট করেছে বলে অপবাদ দেয়। স্বামীর অপবাদ সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার রাতে রুনা বাড়ির সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বাড়ির একটি শিশু তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার দেয়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। দ্রুত চিকিৎসায় বেঁচে যায় রুনা।
×