ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যে কোন মুহূর্তে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

রাসিকের নোটিসে সাড়া নেই দখলদারদের

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ৬ এপ্রিল ২০১৯

রাসিকের নোটিসে সাড়া  নেই দখলদারদের

মামুন-অর-রশিদ রাজশাহী ॥ নগরবাসীর নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবে ফুটপাথ দখলমুক্ত ও সরকারী জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নোটিস জারি করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) কর্তৃপক্ষ। গত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত নিজ নিজ দায়িত্বে ফুটপাথ দখলমুক্ত ও অভৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিস দেয়া হয়েছে। নগরজুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। তবে এসব নোটিস ও মাইকিংয়ে কর্ণপাত করেনি অবৈধ দখলদাররা। এখনও তারা ফুটপাথ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে যে কোন সময় উচ্ছেদ অভিযানে নামবে তারা। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতাও চেয়েছেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তা মানেননি দখলদারেরা। এর আগে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর পরই প্রতিটি ওয়ার্ডে ও সড়কগুলোতে উপস্থিত হয়ে অবৈধভাবে ফুটপাথ দখল করে রাখা ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে বলে এসেছিলেন ফুটপাথ দখলমুক্ত রেখে ব্যবসা করতে। যাতে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। তিনি এ সময় সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেও জানিয়েছিলেন, অনুরোধ না রাখলে এরপর জরিমানা করা হবে। এদিকে সর্বশেষ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়েছে। তারপরেই ফুটপাথ ছাড়েননি ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার সরেজমিনে নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ফুটপাথ ও সড়ক ঘুরে দেখা যায়, অবৈধ দখলদারেরা ফুটপাথের পাশাপাশি সড়কেও তাদের দখল বজায় রেখেছে। এমনকি অবৈধভাবে যে সকল স্থাপনা রয়েছে তাও বহাল তবিয়তেই আছে। কার্যত এই দখলদারেরা মেয়রের অনুরোধকে উপেক্ষা করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিতে পিছু হটেনি। নগরের সাহেববাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা প্রধান সড়ক দখল করে তাদের ব্যবসার পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। আর ফুটপাথ সংলগ্ন অনেক দোকানদাররা তাদের মালামাল ফুটপাথজুড়েই সাজিয়ে রেখেছেন। একই চিত্র গণকপাড়া মোড়, সাগরপাড়া, ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকা, কামারুজ্জামান চত্বর, নিউমার্কেট এলাকা, উপশহর নিউমার্কেট এলাকা, ভদ্রার মোড়, লক্ষীপুর মোড়, কাজলা মোড়, বিনোদপুর মোড়সহ প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সড়কের। সবখানেই অবৈধ দখলদাররা এখন ফুটপাথের পাশাপাশি সড়কগুলোকেও তাদের দখলে নিয়ে রেখেছে। এদিকে ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্থানীয় বাড়ির মালিকেরা ফুটপাথ ও সড়ক দখল করে ভবন নির্মাণ সামগ্রী দিনের পর দিন রেখে কাজ করছেন। এতে একদিকে যেমন সড়ক ও ফুটপাথ দিয়ে নগরবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনি নির্মাণ সামগ্রীর কারণে নষ্ট হচ্ছে সেই ফুটপাথ ও সড়ক। ফলে নগরবাসীকে ঝুঁকি নিয়ে এ সকল ফুটপাথ ও সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা বসির আহমেদ বলেন, সময়ের পরিক্রমায় রাজশাহী নগরে এখন জনসংখ্যা প্রায় ৯ লাখ। এক সময়ের অবহেলিত নগরী নানা কারণে উত্তরাঞ্চলসহ পুরো দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর এ কারণেই প্রতিনিয়তই শহরে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই যে কোন মূল্যে এখনই রাসিকের পাশাপাশি সরকার সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে নগরীতে শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে হতে হবে কঠোর। নগরীর সাগরপাড়া বটতলা এলাকার বাসিন্দা সিকান্দার ফয়েজ অভিযোগ করে বলেন, ফুটপাথ অবৈধ দখলদারমুক্ত নগরী করা স্থানীয় রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিষয়। কারণ অবৈধ দখল বসিয়ে যে ক’জন ব্যবসা করে তার চাইতে বহুগুণ বেশি মানুষ তাদের কর্মকান্ডে দুর্ভোগে পড়ে। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চাইলেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর ফুটপাথগুলো দখলদারমুক্ত করে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এলাকায় এখন রাস্তার ওপর কাঁচাবাজার বসানো হচ্ছে। এই বাজার থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলারদের প্রতিনিধি গিয়ে ব্যবসায়ীদের থেকে প্রতিদিন টাকা তুলছে। যোগাযোগ করা হলে রাসিকের ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল বলেন, অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের স্বেচ্ছায় সরে যেতে সময় দিয়ে নগরীতে মাইকিং করা হয়েছে।
×