ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি

প্রকাশিত: ১০:৩০, ৫ এপ্রিল ২০১৯

ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকায় রাজধানীতে ভ্যাপসা গরম যেন একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গেছে ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ওপরে। চলতি মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাস পাচ্ছে। এটাও ভ্যাপসা গরমের অন্যতম কারণ। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তিতে পড়েছে সারাদেশ। ঘরে-বাইরে সব খানেই বিরাজ করে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। আজ শুক্রবারও দেশের দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে বাতাসের আর্দ্রতা দ্বারা পরিমাপ করা হয়। দৈনন্দিন জীবনে আর্দ্রতা বলতে আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে বোঝানো হয়। আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলো কোন নির্দিষ্ট জায়গার বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের আংশিক চাপ ও ওই তাপমাত্রায় জলীয় বাষ্পের সম্পৃক্ত বাষ্পচাপ। নির্দিষ্ট তাপে ও চাপে বাতাসে সর্বোচ্চ কি পরিমাণ জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে তা সুনির্দিষ্ট। আপেক্ষিক আর্দ্রতা আবহাওয়ার পূর্বাভাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর্দ্রতা বেশি হলে বেশি গরম অনুভূত হয়, কারণ তা ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপ বের করে দেয়ার প্রক্রিয়াটির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাপ সূচক ছকে এই প্রভাব হিসাব করা হয়। মূলত কোন স্থানের বায়ু কতটুকু জলীয় বাষ্প আছে অর্থাৎ বায়ু কতখানি শুষ্ক বা ভিজা আর্দ্রতা দিয়ে তাই নির্দেশ করা হয়। বর্তমানে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাতাসের আর্দ্রতার হার ছিল ৯০ শতাংশ। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তাপমাত্রা বাড়তে থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য যতই কমে আসে, গরমের তীব্রতা তত বেশি অনুভূত হবে। বর্তমানে ঢাকায় এমন অবস্থাই বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবারও ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল মাত্র ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস, যা কমপক্ষে ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকার কথা ছিল। দেশের অনেক জেলাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দই থেকে তিনদিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র তিন থেকে চারদিন হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় হতে পারে। দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে একটি তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্র ১ থেকে ২ মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ঢাকা বিভাগে ১৫০ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ১৫২, চট্টগ্রামে ১৪৩ মিমি, সিলেটে ২৯৬ মিমি, রাজশাহীতে ৮২ মিমি, রংপুরে ৯৪ মিমি, খুলনায় ৭৬ মিমি ও বরিশাল বিভাগে ১৩২ মিলিমিটার থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানায়, আগামী মে মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ওই মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ওই দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনদিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪ হালকা থেকে মাঝারি কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় হতে পারে। ওই মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১ থেকে ২ তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩ মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
×