ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে শেষ বিকেলে শেয়ার কেনার চাপ

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ৫ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে শেষ বিকেলে শেয়ার কেনার চাপ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সূচকের উত্থানে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন। এদিন উভয় শেয়ারবাজারের প্রধান প্রধান সূচক সামান্য বেড়েছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। উভয়বাজারেই লেনদেনের শুরুতেই সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিআইএন নিয়ে শেয়ারবাজারে বিভ্রান্তি কমে গেলে সূচকের পতন কমতে থাকে। শেষ বিকেলে শেয়ার কেনার চাপ বাড়ার কারণে সূচক উর্ধমুখী অবস্থানে থেকে লেনদেন সম্পন্ন হয়। জানা গেছে, সকালের নেতিবাচক প্রবণতা কাটিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৬০ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.১৩ পয়েন্ট ও ডিএসই-৩০ সূচক ০.৫৯ পয়েন্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৬৯ ও ১ হাজার ৯৪৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৬৩ কোটি ২৬ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ৮৮ কোটি টাকা কমেছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৫১ কোটি টাকার। এদিন ডিএসইতে ৩৪৫টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৫৭টির বা ৪৫ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৩৭টির বা ৪০ শতাংশের এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির বা ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ফরচুন সুজ এবং ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকা লেনদেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে গ্রামীণফোন। টপটেন লেনদেন উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে - বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, মুন্নু সিরামিক, মুন্নু জুট স্টাফলার্স, ইস্টার্ন কেবল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৪০ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯১টির, কমেছে ১১৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির দর। সিএসইতে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। শেয়ারবাজারে টিআইএন নিয়ে গুজব না ছড়ানোর নির্দেশ ॥ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন বলেছেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য টেক্স আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়নি। এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি। এমনটি করার আগে কমিশনে মতামত নেবে। তাই বিষয়টি নিয়ে গুজব না ছড়ানোর জন্য শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান করেছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে শেয়ারবাজার নিয়ে আয়োজিত এক মেলায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খায়রুল হোসেন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে শেয়ারবাজার এখন সমৃদ্ধ ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা বেড়েছে। এ বাজারে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের সিদ্ধান্তে লাভ-লোকসান করবে, তবে প্রতারিত হবে না। যা প্রতিরোধে কমিশন বিভিন্ন আইন-কানুন করেছে। ২০১০-১১ সালের পরে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নানা ধরনের সংস্কার করা হয়েছে। যাতে বিগত ৮ বছরে শেয়ারবাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়নি। স্বাভাবিক উত্থান-পতন হয়েছে। যে বাজার আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে শেয়ারবাজারে গভীরতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী তৈরি করার কথা বলেছেন। কারণ এখন কান কথায়ও শেয়ারবাজারে পতন হয়। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী তৈরির মাধ্যমে তা রোধ হবে। খায়রুল হোসেন বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রী করের বিষয়ে প্রস্তাব চেয়েছেন। এই বাজারের গতি বাড়ানোর জন্য আগামী বাজেটে যেমন করের দরকার, তেমন করবেন বলে জানিয়েছেন। যিনি শেয়ারবাজারের উন্নয়নে যত ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের দরকার, তা করবেন বলে ২ দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
×