ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সানিয়া রমার একক সঙ্গীতসন্ধ্যা

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ৪ এপ্রিল ২০১৯

সানিয়া রমার একক সঙ্গীতসন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এই সময়ের অন্যতম প্রতিভাময়ী সঙ্গীতশিল্পী সানিয়া রমা। শুদ্ধধারার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সংগঠন শুভজনের আয়োজনে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী সানিয়া রমার একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের জনপ্রিয় সব গান গেয়ে মাতিয়ে তোলেন সানিয়া রমা। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানে শিল্পী ২০ টির মতো গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিল্পীকে শুভাশিস জানান, দেশের প্রথম খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী নারী সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট গ্লরিয়া ঝর্ণা সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কবি ও প্রাবন্ধিক মোঃ শহিদুল আলম, গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জি, কথাসাহিত্যিক মইনুদ্দিন কাজল, কবি আসলাম সানী, সরগম সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন, গীতিকবি এম আর মনজু ও শেখ মফিজুর রহমান প্রমুখ। শুভজনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী তরুণ রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পীকে শুভাশিস জানাতে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বের সভাপতিত্ব করেন শুভজন সভাপতি কবি নইম হাসান। অনুষ্ঠানে শুভজনের মানবিক ও সেবামূলক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শুভজনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গীতিকার কাজরী তিথি জামানের মেধাবী সন্তানের সুশিক্ষার জন্য শুভজনের নিজস্ব তহবিল থেকে দশ হাজার টাকা মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়। এ প্রজন্মের প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী সানিয়া রমার এটি প্রথম একক মঞ্চ পরিবেশনা। সঙ্গীতের উদীয়মান তারকা তারুণ্যে উচ্ছল কণ্ঠশিল্পী সানিয়া রমার বেড়ে ওঠার গল্পটা বেশ মজার। যখন মাত্র হাঁটি হাঁটি পা পা করত সেই ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে তার সখ্য। হারমোনিয়ামের বোল ঠিকমতো নাগাল না পেলেও গানের সুরে ঠিকই মুগ্ধ করত চারপাশের সবাইকে। পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী হলেও বাবার কর্মস্থলের সুবাদে জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাগেরহাট মংলায়। ছোটবেলা থেকেই গান নিয়ে আগ্রহ ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে কখনও ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইত না। সবসময়ই সে শিল্পী হতে চাইত। আর এই বেলায় এসে হয়েছেও তা। দিনরাত এখন গান নিয়েই তার সকল ব্যস্ততা। সঙ্গীতে তার প্রথম হাতেখড়ি বাবা সুরঞ্জন হালদারের কাছে, কারণ তার বাবাও যে একজন গানের মানুষ ছিলেন। আর অন্যদিকে মমতাময়ী মা অঞ্জলি হালদার তো সবসময়ই তাকে অনুপ্রেরণা দেয়, আগলে রাখে। সঙ্গীতকে আরও নিবিড়ভাবে রপ্ত করতে তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ মহান্দ বিশ্বাসের কাছে। সেইসঙ্গে এখন ক্ল্যাসিক্যাল গানে দীক্ষা নিচ্ছেন বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ সঞ্জীবের নিকট। এ পর্যন্ত সানিয়ার দুটি একক এ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রথম অডিও একক এ্যালবাম ‘ডাগুর ডুগর চাহনি’ বছর তিনেক আগে লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশ হয়েছে। এরপর তার দ্বিতীয় একক এ্যালবাম ‘মাটির গান’ একই ব্যানারে বাজারে আসে। সম্পূর্ণ লোকধারার সাতটি গানে সাজানো এই এ্যালবামে রাধারমণ দত্ত, আব্দুর রহমান বয়াতি, বিজু ভূষণ, সোহেল রাজ এবং সানিয়ার নিজের লেখা ও সুর করা একটি গান স্থান পেয়েছে। সুকণ্ঠী গায়িকা সানিয়া রমা শুধু যে গানেই পারদর্শী তা নয় একইসঙ্গে গান লেখা ও সুর করায়ও বেশ দক্ষতা আছে তার। পাশাপাশি যুক্ত আছেন শুদ্ধধারার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সংগঠন শুভজনের সঙ্গে। এ পর্যন্ত তার ১৫টিরও বেশি মিউজিক ভিডিও ইউটিউবে রিলিজ হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন মঞ্চ ও টেলিভিশনে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুরেলা শিল্পী সানিয়া রমা। অন্যদিকে নতুন একটি এ্যালবামের কাজ শুরু করেছেন বলে তিনি জানান। দেশের গুণীসঙ্গীত ব্যক্তিত্ব গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জির একটি গানের কাজও শেষ। এছাড়া বর্তমানে কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের সঙ্গে একটি গানের কাজ চলছে তার। আগামীতে আরও ভাল কিছু গান নিয়ে শ্রোতাদের মাঝে আসতে পারবেন বলে শিল্পী আশাবাদী সঙ্গীতশিল্পী সানিয়া রমা। আজকের সঙ্গীতানুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতা ও তার ভক্তদের প্রায় সব ধরনের গানই উপহার দেন তিনি। তার প্রতি রইল নিরন্তর শুভকামনা।
×