ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তীরন্দাজ নাট্যদলের ‘তামসিক’ নাটকের দুই প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৪ এপ্রিল ২০১৯

তীরন্দাজ নাট্যদলের ‘তামসিক’ নাটকের দুই প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে মঙ্গলবার তীরন্দাজ নাট্যদলের ‘তামসিক’ নাটকের দুটি প্রদর্শনী হয়। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় ‘তামসিক’ নাটকের একাদশ এবং সন্ধ্যা ৭-১৫ মিনিটে নাটকটির দ্বাদশ প্রদর্শনী হয়। তীরন্দাজের চতুর্থ প্রযোজনা ‘তামসিক’ নাটকটি রচনা করেছেন অপু মেহেদী। নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী রাকীব। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন তামান্না তমা, তমাল খান, সোলায়মান মামুন, নিলয় চৌধুরী, রফিকুল সেলিম, হাসান মাহদী লাল্টু, কাজী রাকীব, অমিত শিবরাম, মারুফ মুন্না, সোহাগ লিটন, নুসরাত তিথি, সানজিদা প্রমি, আরিয়ান সোহাগ, মামুন, সৌরভ, শাহী, মাসুম, তানভীর, রিয়ান। নাটকের সহনির্দেশনা হাসান মাহদী লাল্টু, মঞ্চ সোহাগ তালুকদার, আলো রহিম সুমন, সঙ্গীত দ্রুত ঘোষ, হারমোনিয়াম ও মাদল শাওন কুমার, বাঁশি রফিকুল সেলিম দোতরা জাহিদ মোহাম্মদ, প্রকাশনা অলঙ্করণ শাহিন রেজা রাসেল, কোরিওগ্রাফি ফরহাদ শামীম, মঞ্চ ব্যবস্থাপনা এনাম রিপন, কস্টিউম ডিজাইনার তাসনোভা শিশির, পোশাক সহযোগী তাহমিনা লিজা মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা সাব্বির হাসান, শরীফ অভি, রোমান, শরীফ খান। ‘তামসিক’ নাটকের বক্তব্যে তুলে ধরা হয়েছে পৃথিবীতে মানুষের জন্মের ইতিহাস প্রায় তিন কোটি বছরের। আদিম মানুষেরা পৃথিবীর অনেক অজানাকেই রহস্যময় করে তুলেছিল। তবে তাদের কোন দুরভিসন্ধি ছিল না ছিল অজ্ঞতা। কিন্তু পুঁজিবাদের এই যুগে বিজ্ঞান যখন সকল রহস্যের দ্বার খুলে দিচ্ছে তখন সত্য জানার পরও কিছু মানুষ তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পৃথিবীকে রহস্যময় করে তুলছে ভিন্ন উপায়ে। তারা পৃথিবীকে অস্থিরতা ও নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ এক গ্রহ করে তুলছে। আর এ জন্য তারা প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে ধর্মকে। মানুষের বেড রুম থেকে কবরস্থান পর্যন্ত সবকিছুতেই এখন ব্যবসা আর সেই ব্যবসার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে ধর্মের মাঝেও। পৃথিবীতে বিরাজমান সকল ধর্ম নিয়েই মানুষ এখন ব্যবসা করছে, কেননা ধর্ম ব্যবসাতে কোন পুঁজির প্রয়োজন হয় না। ধর্মের অপব্যবহার, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিজের স্বার্থে ধর্মকে ইচ্ছেমতো অপব্যবহার চলছে নিরন্তর বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সত্য, ন্যায় ও মানবতার যাত্রা। এ যেন সহস্র আলোর মাঝে জমাট অন্ধকারের রাহুগ্রাস আধুনিক উন্নয়নের মাঝে অদ্ভুত অন্ধত্বের পিছুটান তবুও সত্য অনিবার্য সহস্রকালের সহস্র প্রাণের বলিদান হলেও অন্ধকার ভেদ করে সূর্য উদ্ভাসিত হবে এই মহত্বম সম্ভাবনায় বিশ্বাস রেখে মানুষের নিরন্তর যাত্রা। মানুষের এই নিরন্তর যাত্রার গল্প ‘তামসিক’। ‘তামসিক’ নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক কাজী রাকীব বলেন, থিয়েটার একটি লাইফ স্টাইল। ঘুমভাঙানি থেকে ঘুমানো পর্যন্ত থিয়েটারের ভেতর থাকতে হয়। নিত্যদিনের সমস্ত কাজকর্মের ভেতরেও থিয়েটার চলমান থাকে। শুধু দু’তিন ঘণ্টা রিহার্সাল আর শো করার মধ্যেই থিয়েটার সীমাবদ্ধ নয়। প্রযোজনা থিয়েটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এবং দল বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। সেই একমাত্র অবলম্বন হিসেবে ধর্মীয় গোঁড়ামি, অজ্ঞতা, উগ্রতা আর পুঁজিবাদের নিষ্পেষণ এ বিপন্ন মানুষ মনুষ্যত্ব মানবতাবাদ। অপ্রতিরোধ্য এই ব্যাধির বিরুদ্ধে মানুষের অস্তিত্বহীনতা ও অস্তিত্বের লড়াইয়ের উপাখ্যান ‘তামসিক’ নিয়ে আমাদের এই নবযজ্ঞ। রিহার্সাল রুমের অপ্রতুলতা, সামাজিক নানা রকম সঙ্কটের মধ্য দিয়ে কিছু তরুণ প্রতিভাবান নাট্যবন্ধুদের প্রাণপণ সহযোগিতায় নাটকটির মঞ্চায়ন সম্ভব হচ্ছে। থিয়েটার হয় অভিনেতা ও দর্শকের সরাসরি মিথস্ক্রিয়ায়। আমি বিশ্বাস করি পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথের সৃষ্টি করে। এই বিশ্বাসের কারণেই এই প্রযোজনাটি আমি হাতে নিয়েছি।
×