ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এই প্রথম ধরা দিল কৃষ্ণগহ্বর!

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ৪ এপ্রিল ২০১৯

এই প্রথম ধরা দিল কৃষ্ণগহ্বর!

সেই ভয়ঙ্কর বিশালাকার সর্বগ্রাসী ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের শেষ পর্যন্ত দেখা মিলল। মহাকাশে কিভাবে সে বিশাল বিশাল নক্ষত্রকে নিজের দিকে টেনে নিচ্ছে। আশপাশে ছড়িয়ে থাকা সবকিছুকেই টেনে নিচ্ছে। অনেক চেষ্টা করে দুবছর ধরে তার ছবি তোলা হয়েছে। যে ছবি প্রকাশ করা হবে ১০ এপ্রিল। ইউএসএ টুডে, এ্যাস্ট্রোনমি ম্যাগাজিন, স্পেস ডট কম, আনন্দবাজার পত্রিকা। মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ঠিক মাঝখানে রয়েছে সেই কৃষ্ণগহ্বর। আমাদের পৃথিবী থেকে ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। তার নাম ‘স্যাজিটেরিয়াস এ-স্টার’। যে আসলে একটি বিশালাকার সর্বগ্রাসী কৃষ্ণগহ্বর। যাকে দেখার আগ্রহ আমাদের প্রায় একশ বছর ধরে। মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ঠিক মাঝখানে থাকা কৃষ্ণগহ্বরের ওজন সূর্যের ভরের ৪০ লাখ গুণ বেশি। শুধু ব্যাসার্ধই এক কোটি ২০ লাখ কিলোমিটার লম্বা। এমন ভয়ঙ্কর কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তোলার কাজটি করেছে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ (ইএইচটি)। যা বানানো হয় পৃথিবীর সবগুলো মহাদেশে বসানো অত্যন্ত শক্তিশালী ৮টি রেডিও টেলিস্কোপের নেটওয়ার্ক দিয়ে। কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এতদিন পর্যন্ত কৃষ্ণগহ্বরের কোন ছবি পাওয়া সম্ভব হয়নি। গাণিতিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৮২ সালেই প্রথম কল্পনায় একটি ছবি আঁকা হয়েছিল। সেটা এঁকেছিলেন জঁ পিয়ের ল্যুমিয়ের নামে এক চিত্রশিল্পী। আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুই আমাদের গ্যালাক্সির ঠিক মাঝখানে থাকা কৃষ্ণগহ্বরটিরই ছবি তোলেনি ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ বরং ছবি তুলেছে আরও একটি বিশাল গ্যালাক্সির ঠিক মাঝখানে থাকা আরও ভয়ঙ্কর আরও বড় চেহারার একটি গহ্বরের। সেই গ্যালাক্সির নাম- ‘এম-৮৭’। যা আমাদের চেয়ে রয়েছে পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরে। দুটি রাক্ষসেরই বিরলতম ছবি অনলাইনে প্রকাশ করা হবে এই এপ্রিলে। কৃষ্ণগহ্বর এমনই একটি মহাজাগতিক বস্তু যার সর্বগ্রাসী গহ্বরে টেনে নেয়ার হাত থেকে কারওরই রেহাই পাওয়া যায় না। এমনকি, বেরিয়েও যেতে পারে না আলো। কৃষ্ণগহ্বরের শক্তিশালী অভিকর্ষ বলের টানে সব কিছুকেই তার দিকে টেনে নিয়ে যায়। তারপর সেগুলোকে খেয়ে ফেলে। যাদের কাছে টেনে নিয়ে যায় কৃষ্ণগহ্বর, তাদের কাউকেই আর পরে দেখা যায় না। তাই এই ব্রহ্মাণ্ডের কোন কৃষ্ণগহ্বরেরই ছবি তোলা সম্ভব হয়নি এতদিন। কৃষ্ণগহ্বর আসলে পুরোপুরি কালো হয় না। তাদেরও কিছুটা ‘আলো’ থাকে। সেই আলোটা অবশ্য দেখা সম্ভব হয় না। কারণ, সেই আলোটা বেরিয়ে যায় অসম্ভব ঠা-ায়। অথচ তার চেয়ে অনেক বেশি গরম এই ব্রহ্মাণ্ডের কসমোলজিক্যাল মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (সিএমবি)। সিএমবির তাপমাত্রায় কৃষ্ণগহ্বরের সেই আলো ঢাকা পড়ে যায়। তাকে দেখা সম্ভব হয় না। সেই ‘আলো’র ওপারে কি আছে, যেখানে রয়েছে কৃষ্ণগহ্বর) তাও জানা যায় না, দেখা যায় না। শুধু বোঝা যায়, ওপারে যেন কিছুই নেই। রয়েছে শুধুই শূন্যতা।
×