ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাটকল শ্রমিকদের রাজপথ রেলপথ অবরোধ

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৪ এপ্রিল ২০১৯

পাটকল শ্রমিকদের রাজপথ রেলপথ অবরোধ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন এবং বকেয়া বেতন আদায়সহ ৯ দফা দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) অধীন পাটকল শ্রমিকরা। বুধবার আন্দোলন কর্মসূচীর তৃতীয় দিনে চট্টগ্রাম ও খুলনা ছিল বিক্ষোভে উত্তাল। এদিকে, ধর্মঘটী শ্রমিকরা কাজে না থাকায় স্থবির হয়ে আছে রাজশাহীর পাটকলগুলো। -খবর স্টাফ রিপোর্টারদের। চট্টগ্রাম অফিস জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুধবারও তারা চট্টগ্রামে রাজপথ ও রেলপথ আটকে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সড়ক ও রেলপথে অবরোধ সৃষ্টির ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। বুধবার সকাল ৮টার পর থেকে আমিন জুটমিল শ্রমিকরা সড়কে নামে। তারা ৯ দফা মেনে নেয়ার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। কর্মসূচী চলাকালে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বেলা বারটার দিকে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। খুলনায় ধর্মঘট অব্যাহত, অবরোধ খুলনা ॥ খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে টানা ৭২ ঘণ্টাব্যাপী এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে শ্রমিকেরা সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছেন। আগের দিনের মতো বুধবার খালিশপুর এলাকার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর ও দৌলতপুর এবং দিঘলিয়ার স্টার জুট মিলের শ্রমিকেরা স্ব স্ব মিল থেকে মিছিল নিয়ে নগরীর নতুন রাস্তা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে নতুন রাস্তার মোড় এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করেন। এ সময় তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ফলে গোটা শহর উত্তাল হয়ে ওঠে। এদিকে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে মিল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর খালিশপুরে ক্রিসেন্ট জুট মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন কার্যালয়ে আন্দোলরত শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ৯ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাজশাহী পাটকলে উৎপাদন হ্রাস রাজশাহী ॥ একদিকে উৎপাদন হ্রাস অন্যদিকে শ্রমিকদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে এখন ডুবতে বসেছে রাজশাহী পাটকল। মহানগরের উপকণ্ঠে পবা উপজেলার কাটাখালিতে অবস্থিত রাজশাহী পাটকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৩ মেট্রিকটন হলেও উৎপাদন আটকে আছে মাত্র ৩ থেকে ৫ মেট্রিক টনের মধ্যে। সময় মতো পাট ক্রয় ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতে অব্যবস্থাপনা এবং অতিরিক্ত কর্মকর্তার কারণে এ কারখানাকে লোকসান গুণতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শ্রমিকরা। তবে উৎপাদন কম হওয়ার দায় কর্মকর্তাদের নয় বলে জানিয়েছে এখানকার প্রকল্প প্রধান। রাজশাহী পাটকলে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৮৩০ শ্রমিক। যারা তিনমাস থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছে না। এরই মধ্যে বেতন-ভাতাসহ নয় দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটে নেমেছেন শ্রমিকরা। এদিকে, বুধবার পাটকলে গেলেও এ নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি প্রকল্প প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউল হক। তবে কথা প্রসঙ্গে উৎপাদন কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, ‘মিলে উৎপাদন কম হওয়ার দায় আমার নয়। উৎপাদন কমের বিষয়ে অডিট হয়েছে। অডিটে ২১টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।’ তবে সে কারণগুলো বলেননি তিনি।
×