ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এম.এইচ.উল্লাহ

ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৪ এপ্রিল ২০১৯

ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি

সফলতাই ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক দিক। সফলভাবে হয়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ‘ডাকসু’ নির্বাচনের পর সারাদেশে এখন ছাত্র রাজনীতিতে ইতিবাচক সাড়া পড়তে শুরু করেছে। এটাকে একটা শুভলক্ষণ রূপে গণ্য করা যায়। আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের ভবিষ্যত আর এরাই আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যত রূপে বেরিয়ে আসবে। জীবনের উন্নতির জন্য সবকিছুতেই ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন। ছাত্র জীবনে রাজনীতির ট্রেনিং গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে জাতীয় জীবনে ভাল নেতা হয়ে দেশ শাসন করতে পারা যাবে না। তাই ছাত্র রাজনীতিতে ট্রেনিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। মহাত্মা গান্ধী, প-িত জওহর লাল নেহরু, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এরা সকলেই ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন- এমনকি ছাত্র জীবনে এরা সকলেই জুলুম-নির্যাতন, জেল-জরিমানা, অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করে পরবর্তী জীবনে জাতীয় নেতা হতে পেরেছিলেন। তাঁদের রাজনীতিতে জয়-জয়কার অস্বীকার করা যায় না। পৃথিবীর উন্নত দেশে যে সব নেতার আবির্ভাব হয়েছে তারাও ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন থেকে শুরু করে রাজনীতিতে যারা খ্যাতিমান হয়েছেন তারাও ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। বিগত বছরগুলোতে আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ছিলই বলা যায়, ২৮ বছর পরে এবারই সফলভাবে ‘ডাকসু’ নির্বাচন সম্পন্ন হলো- অথচ এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র সংগঠন। রাজনীতিতে যোগ্য ব্যক্তি না থাকলে দেশের নেতৃত্বে যোগ্য লোক পাওয়া যাবে না আর যোগ্য লোকের অভাবে দেশ শাসনে শূন্যতা নেমে আসবে। আনাড়ি লোক ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব তাই যোগ্য লোকের বিকল্প নেই। রাজনীতি করতে গেলে অশান্ত পরিস্থিতি বা পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে এটা ভেবেই রাজনীতিতে নামা উচিত। কোন একটি দেশে যখন অন্যায়, অত্যাচার, আর নিপীড়ন এর মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যায় তখনই প্রতিবাদমুখর মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষ ও ছাত্র সমাজ প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল আর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে তারা দেশ স্বাধীন করেছিল। সেদিন ছাত্র সমাজ অগ্রণী ভূমিকা না নিলে বা প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলে এত তাড়াতাড়ি দেশ স্বাধীন হতো না। দেশকে ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ। দেশের জনগণ দেশকে ভালবেসেছে বলেই দেশের জন্য যুদ্ধ করতে পেরেছে আর দেশের ছাত্র সমাজ তাদেরকে সহযোগিতা করতে পেরেছে। তাই ছাত্র সমাজকে অবহেলা করে কোন জাতির ভবিষ্যত উজ্জ¦ল হতে পারে না। ‘ডাকসু’ নির্বাচনের পর দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এখন নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি চালু হলে রাজনীতির ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে। একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেটা সরকারী হোক আর বেসরকারী হোক, ছাত্র সমাজ যদি সেই প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক রাজনীতি করে কারও কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। লেক সার্কাস, কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×