ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাটির নিচে বসবাস

প্রকাশিত: ১০:৪২, ৩ এপ্রিল ২০১৯

মাটির নিচে বসবাস

উপর থেকে দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে, মাটি থেকে প্রায় ২৩ ফুট গভীরে একটা পুরো গ্রামে বসবাস করছে মানুষ! আসলে পুরো গ্রামটাই গড়ে উঠেছে মাটির নিচে। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির স্থাপত্য পরিকল্পনা এক কথায় অসাধারণ। ঘরগুলোতে তাপমাত্রা শীতকালে ১০ ডিগ্রীর কম হয় না আর গ্রীষ্মে ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি থাকে না। চীনের হেনান প্রদেশের সানমেনশিয়ায় রয়েছে এই অদ্ভুত গ্রাম। প্রায় ২০০ বছর ধরে এখানে মাটির নিচেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ। সানমেনশিয়া এলাকায় এমন অন্তত ১০ হাজার ঘরের সন্ধান মিলেছে। এগুলোর বেশির ভাগই বর্তমানে পরিত্যক্ত। মাটির নিচে তৈরি এই ঘরগুলোকে চীনা ভাষায় বলা হয় ‘ইয়ায়োডং’, যার অর্থ হলো গুহা ঘর। একটা সময় এখানে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অভাবে এবং প্রতিকূল জীবনযাত্রার চাপে অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে যান। তবে এখনও সানমেনশিয়া এলাকার এই গুহাঘরগুলোতে প্রায় তিন হাজার মানুষ বসবাস করেন। মাটি থেকে প্রায় ২৩ ফুট গভীরে তৈরি এই ঘরগুলো লম্বায় ৩৩ থেকে ৩৯ ফুট পর্যন্ত। ঐতিহাসিকদের মতে, হেনান প্রদেশের সানমেনশিয়ায় ‘ইয়ায়োডং’-য়ে বসবাসের ইতিহাস ২শ’ বছরের বেশি প্রাচীন নয়। তবে চীনের পার্বত্য এলাকায় ব্রোঞ্জ যুগে এ ধরনের গুহাঘর তৈরি করে বসবাস করতেন একদল মানুষ। ২০১১ সাল থেকে এই গ্রামটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন। বর্তমানে এসব ‘ইয়ায়োডং’ বা গুহা ঘরগুলোতে বিদ্যুত সংযোগসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, গুহা ঘরগুলো ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আশ্চর্য এই ঘরগুলোর আকর্ষণে এই এলাকায় বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনা অনেকটাই বেড়ে গেছে। পর্যটক টানার জন্য এখন ‘ইয়ায়োডং’ ভাড়া দেয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক মাসের জন্য ভাড়ায় এই ‘ইয়ায়োডং’-এ থাকতে চাইলে গুনতে হবে ২১ ইউরো। পছন্দ হয়ে গেলে কিনেও নিতে পারেন এ রকম একটি গুহাঘর। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই ‘ইয়ায়োডং’-এর দাম ৩২ হাজার ইউরো। Ñওয়েবসাইট
×