ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিদের হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ২ এপ্রিল ২০১৯

পাকিদের হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান ক্রিকেটে শনির দশা যেন কাটছেই না। এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ড সিরিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর এবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামের উত্তরসূরিরা। নিজেদের হোম ভেন্যু আরব আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজে ৫-০ ব্যবধানে ‘হোয়াইটওয়াশ’ শোয়েব মালিক, ইমাদ ওয়াসিমের দল। দুবাইয়ে লজ্জা এড়ানোর শেষ সুযোগ পঞ্চম ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়েও হার ২০ রানে। অস্ট্রেলিয়ার ৭ উইকেটে ৩২৭ রানের জবাবে ৩০৭/৭-এ থামে পাকিস্তানের সংগ্রহ। বিফলে যায় হারিস সোহেলের (১৩০) সেঞ্চুরি। মাত্র ৩৩ বলে ৭০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সয়েল। দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ১১২.৭৫ গড়ে ৪৫১ রান করে সিরিজসেরা অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চ। বিশ্বকাপ সামনে রেখে এ নিয়ে ভারতের টি২০, ওয়ানডের পর টানা তিনটি সিরিজ জিতল ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অসিরা। ওয়ানডেতে জয় টানা ৮ ম্যাচে। ২০০৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে পেল ৫-০’ সাফল্যের স্বাদ ক্রিকেটের কুলিন এ দেশটি। এমন জয় অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসেরই তৃতীয়। এর আগে ৫ ম্যাচের কোন সিরিজে সব ম্যাচ তারা জিতেছিল মাত্র দু’বার। আর ১৯৯৮ সাল থেকে এ নিয়ে অসিদের কাছে চতুর্থবারের মতো ‘হোয়াইটওয়াশের’ শিকার হলো পাকিস্তান। সিরিজে পাঁচটি সেঞ্চুরি করলেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। সবই গেল বিফলে। সিরিজে চতুর্থবারের মতো টস জিতে তারা ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়াকে। আগের ম্যাচগুলোর মতোই দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন উসমান খাজা ও এ্যারন ফিঞ্চ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনারের গড়া ১৩৪ রানের জুটি ভাঙ্গে অধিনায়কের বিদায়ে। ৬৯ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে ৫৩ রান করা ফিঞ্চকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন উসমান শিনওয়ারি। গতিময় এই পেসার পরে বিদায় করেন খাজাকেও। দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়া বাঁহাতি এই ওপেনার মাত্র ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফেরেন। ১১১ বলে খেলা তার ৯৮ রানের ইনিংস গড়া ১০ চারে। সর্বশেষ সাত ইনিংসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি আউট হলেন নার্ভাস নাইনটিতে। খাজার সঙ্গে ৮০ রানের জুটি গড়া শন মার্শ ছন্দে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে গড়েন ৬০ রানের আরেকটি ভাল জুটি। সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগোনো মার্শকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙ্গেন জুনাইদ খান। ক্রিজে যাওয়ার পর থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া ম্যাক্সওয়েল ২৬ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। খুনে ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ১০ চার ও তিন ছক্কায় ফেরেন ৭০ রান করে। তার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে শেষ ৫ ওভারে ৫৩ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তান পেসার শিনওয়ারি ৪ উইকেট নেন ৪৯ রানে। জুনাইদ ৭৩ রানে নেন তিনটি। পাকিস্তানের হয়ে জবাব দিতে নেমে আগের ম্যাচে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা অবিদ আলি এবার পান উল্টো স্বাদ। ফিরে যান মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে। আরেক ওপেনার শান মাসুদ পান নিজের প্রথম ফিফটি। দ্বিতীয় উইকেটে হারিসের সঙ্গে গড়েন ১০৮ রানের জুটি। তিন চারে ৫০ রান করা মাসুদকে বিদায় করেন এ্যাডাম জাম্পা। সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি করা মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফিরিয়ে দেন ম্যাক্সওয়েল। ক্রিজে যাওয়ার পর থেকে শট খেলতে থাকেন উমর আকমল। তার সঙ্গে দ্রুত জমে যায় হারিসের জুটি। নাথান লেয়নকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় আকমল ফিরে গেলে ভাঙ্গে এ জুটি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন হারিস। শেষ ম্যাচে পেলেন দ্বিতীয়টি। আগের সেরা অপরাজিত ১০১ ছাড়িয়ে এবার খেলেন ১৩০ রানের লড়াকু ইনিংস। বাজে শটে শেষ হয় বাঁহাতি এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের ১২৯ বলে ১১ চার ও তিন ছক্কায় গড়া ইনিংস। হার এড়াতে শেষের দিকে যে বিস্ফোরক ব্যাটিং প্রয়োজন ছিল তা করতে পারেনি পাকিস্তান। শেষের দিকে ৩৪ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংসে ব্যবধান কমিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া- ৩২৭/৭ (৫০ ওভার; খাজা ৯৮, ফিঞ্চ ৫৩, মার্শ ৬১, ম্যাক্সওয়েল ৭০; জুনাইদ ৩/৭৩, শিনওয়ারি ৪/৪৯)। পাকিস্তান- ৩০৭/৭ (৫০ ওভার; মাসুদ ৫০, হারিস ১৩০, রিজওয়ান ১২, আকমল ৪৩, ইয়াসির ১১; বেহরেনডর্ফ ৩/৬৩, রিচার্ডসন ১/৬১, লেয়ন ১/৫০, ম্যাক্সওয়েল ১/৪৫, জাম্পা ১/৬৮)। ফল ॥ অস্ট্রেলিয়া ২০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)। সিরিজ ॥ পাঁচ ওয়ানডে অস্ট্রেলিয়া ৫-০ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ এ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)।
×