ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফরহাদ রেজার দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২ এপ্রিল ২০১৯

ফরহাদ রেজার দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগেরদিন টর্নেডো আর বৃষ্টিতে মাঠ ছিল খেলার অনুপযুক্ত। তাই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচটি দেরিতে শুরু হয় এবং ২৬ ওভারে নেমে এসেছিল দৈর্ঘ্যটা। আর সোমবার ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) সেই ম্যাচ খেলতে নেমে দোলেশ্বরের পেস অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা তার ব্যাটে টর্নেডো সৃষ্টি করেন। মাত্র ১৮ বলে ফিফটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের পক্ষে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এরপরও মাত্র ২৬ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩৯ রান করেও শেখ জামালকে ১ রানে হারিয়েছে দোলেশ্বর। অপরদিকে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বিকেএসপিকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আর গতবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড ছুটে চলেছে দুরন্ত বেগে। এবার তারা খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ১৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে। প্রাইম দোলেশ্বর-শেখ জামাল ম্যাচ, মিরপুর ॥ বৃষ্টিতে খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়া মাঠে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে ২৬ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই তা-ব শুরু করেন দোলেশ্বরের ইমরান উজ্জামান ও সাইফ হাসান। মাত্র ১২.৩ ওভারে ৯৭ রানের যে উড়ন্ত জুটি গড়েন তারা তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত ওঠে। সাইফ ৪০ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ৩৬ রানে সাজঘরে ফিরলেও ইমরান মাত্র ৫৪ বলে ৬ চার, ৪ ছক্কায় ৭৫ রানের একটি বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন। এরপর সা’দ নাসিমও ৩৬ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৫১ রান উপহার দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। এর আগেই ১৯তম ওভারে ব্যাট হাতে নামেন লীগের সর্বাধিক উইকেট শিকারি ফরহাদ। বিপিএল ও ডিপিএল টি২০ আসরে ঝড় তোলা এ ৩২ বছর বয়সী তারকা এবার দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন যেন আরও। যখন তিনি নামেন তখন দলের রান ১৩৭। মাঠ ছাড়লেন ২৫তম ওভারে, ততক্ষণে দলের রান ২৩৩। ৭ ওভারেই যে দোলেশ্বর ৯৬ রান তুলতে পেরেছে তাতে মূল অবদান ফরহাদের। ২০ বলে ৫৬ রান তুলেছেন ফরহাদ ৩ চার ও ৬ ছক্কায়। এ ঝড়ের মাঝেই ১৮ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম লিস্ট ‘এ’ ফিফটির আগের রেকর্ড ছিল নাজমুল হোসেন মিলনের। এই ব্যাটসম্যান ২০০৭ সালে জাতীয় লীগে একদিনের ম্যাচে ঢাকা বিভাগের হয়ে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে ফিফটি ছুঁয়েছিলেন ১৯ বলে। এবার ফরহাদ ১৮ বলেই সেই রেকর্ড পেছনে ফেলেছেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২৬ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দোলেশ্বর। ৩ উইকেট নেন শেখ জামালের পেসার সালাউদ্দিন সাকিল। জবাব দিতে নেমে শেখ জামাল ৬৪ রানেই ৩ উইকেট হারায়। তবে ইমতিয়াজ হোসেনের ২২ বলে ৬ চারে ৩৪, অমিত মজুমদারের ৪২ বলে ৫ চারে ৪৪, নুরুল হাসানের ২০ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৩৭ ও জিয়াউর রহমানের ২১ বলে ৪ চার, ৪ ছক্কায় করা ৪৬ রানে জয়ের পথেই ছিল তারা। কিন্তু শেষদিকে ফরহাদ রেজার বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে শুধু তানবীর হায়দারই ২৫ বলে ৬ চারে ৩৬ রান করতে পেরেছেন। শেষ ওভারে ১৪ রান প্রয়োজন থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেনি শেখ জামাল। ৯ উইকেটে ২৩৮ রানে থেমে ১ রানের পরাজয়বরণ করে তারা। ফরহাদ ও আবু জায়েদ রাহী ৩টি করে উইকেট নেন। স্কোর ॥ দোলেশ্বর ইনিংস- ২৩৯/৬; ২৬ ওভার (ইমরান ৭৫, ফরহাদ ৫৬, সা’দ ৫১, সাইফ ৩৬; সাকিল ৩/৪০)। শেখ জামাল ইনিংস- ২৩৮/৯; ২৬ ওভার (জিয়া ৪৬, অমিত ৪৪, নুরুল ৩৭, তানবীর ৩৬, ইমতিয়াজ ৩৪; ফরহাদ ৩/৩৫, জায়েদ ৩/৪৮)। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ফরহাদ রেজা (প্রাইম দোলেশ্বর)। রূপগঞ্জ-বিকেএসপি ম্যাচ, ফতুল্লা ॥ আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১৮১ রান তোলে বিকেএসপি। শামীম হোসেন ১০৭ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ৫২, প্রান্তিক নওরোজ ৮১ বলে ২ চারে ৩৮ রান করেন। রূপগঞ্জের হয়ে ৫ উইকেট নেন ঋষি ধাওয়ান। জবাবে ৯ রানে প্রথম উইকেট হারালেও মুমিনুল হকের ১১২ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৯৩, নাঈম ইসলাম ৬৪ বলে ৩১ রান করলে ৪৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮২ রান তুলে ৫ উইকেটের জয় পায় রূপগঞ্জ। স্কোর ॥ বিকেএসপি ইনিংস- ১৮১/৯; ৫০ ওভার (শামীম ৫২, প্রান্তিক ৩৮, ফাহাদ ২০; ঋষি ৫/৫১)। রূপগঞ্জ ইনিংস- ১৮২/৫; ৪৫ ওভার (মুমিনুল ৯৩, নাঈম ৩১, মারুফ ২৭; কাইয়ুম ২/২৮, সুমন ২/৩২)। ফল ॥ রূপগঞ্জ ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ঋষি ধাওয়ান (রূপগঞ্জ)। আবাহনী-খেলাঘর ম্যাচ, বিকেএসপি ৪ ॥ আগে ব্যাট করে আবাহনী ৪৮.৪ ওভারে মাত্র ২৬২ রানেই গুটিয়ে যায়। যদিও নাজমুল হোসেন শান্ত ৭৯ বলে ৯ চারে ৬০, সাব্বির রহমান ৪৯ বলে ৭ চারে ৪৯ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৪ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৪৭ রান করেছিলেন। খেলাঘরের হয়ে ৬৪ রানে ৫ উইকেট নেন রবিউল হক। জবাব দিতে নেমে প্রথম থেকেই আবাহনী বোলারদের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ে খেলাঘরের ব্যাটসম্যানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩২.৫ ওভারে ১৩০ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। মোসাদ্দেক ইফতেখার ৫৮ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪২ বলে ৫ চারে ৩২ রান করেন শাহরিয়ার কমল। ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। ১৩২ রানের বড় জয় পায় আবাহনী। স্কোর ॥ আবাহনী ইনিংস- ২৬২/১০; ৪৮.৪ ওভার (শান্ত ৬০, সাব্বির ৪৯, মিরাজ ৪৭, জহুরুল ২৫; রবিউল ৫/৬৪, ইরফান ৩/৪২)। খেলাঘর ইনিংস- ১৩০/১০; ৩২.৫ ওভার (ইফতেখার ৩৬*, কমল ৩২; সানজামুল ৪/৩৬, অপু ২/১৪, মিরাজ ২/১৮)। ফল ॥ আবাহনী ১৩২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাজমুল হোসেন শান্ত (আবাহনী)।
×