ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চক ও বনানীর অগ্নিকান্ডে বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

প্রকাশিত: ১১:০১, ২ এপ্রিল ২০১৯

চক ও বনানীর অগ্নিকান্ডে বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে সাত তলার অধিক উচ্চতার ভবনগুলোতে আগুন দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার দুই মেয়র, রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালককে চার মাসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি, লোকবলসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স সক্ষমতা জানতে এক মাসের মধ্যে সংস্থাটির মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি চকবাজার ও বনানীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না সে বিষয়ে রুল জারি করেছে আদালত। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার শুকলা সারওয়াত সিরাজ নিজেই শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক। আদেশের পর ব্যারিস্টার শুকলা সারওয়াত সিরাজ দুটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত এ দুটি আদেশ ছাড়াও রুল জারি করেছে। জারি করা রুলে জানতে চাওয়া হয়, অগ্নিকা- নিয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত করার পর চকবাজার ও এফআর টাওয়ারের অগ্নিকা-ে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না? অপর রুলে জনমনে সচেতনতা বাড়াতে দেশের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে আগুন ও অন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয় কেন অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দেয়া হবে না -তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় ফায়ার স্টেশন স্থাপনে সিভিল ডিফেন্সকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ফায়ার স্টেশনের জন্য জমি বরাদ্দে রাজউককে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না আদালত তাও জানতে চেয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, শিক্ষা এবং খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ও রাজউক চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে হবে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত রবিবার গুলশান সোসাইটির মহাসচিব সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শুকলা সারওয়াত সিরাজ জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদেশে ফায়ার ফাইটারদের কাজের সুবিধার্থে আধুনিক যন্ত্রপাতি, পোশাক ও যানবাহন পর্যাপ্ত আছে কি না সে বিষয়েও একটি প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বহুতল ভবনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ১০ তলা বা ৩৩ মিটারের উর্ধে যে কোন ভবন। আর অগ্নিপ্রতিরোধ আইনে অন্যূন সাত তলাবিশিষ্ট ভবনকে বহুতল ভবন বলা হয়েছে। আইনগত এই অসঙ্গতির কারণে ঢাকার ৭, ৮ ও ৯ তলা ভবনগুলো গড়ে উঠছে কোন ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই। রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) অংশ হিসেবে ২০১৬ সালে করা এক ভৌত জরিপ অনুযায়ী, ঢাকা মহানগর এলাকায় সাত তলা বা তার চেয়ে উঁচু ভবন আছে ১৬ হাজার ৯৩০টি। গত দুই বছরে নিশ্চিতভাবে তা এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। অগ্নিপ্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, এসব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু দুটি আইনে বহুতল ভবনের সংজ্ঞা দুই রকম হওয়ায় অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছাড়াই বেশির ভাগ আবাসিক ভবন গড়ে উঠছে।
×