ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ববির ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২ এপ্রিল ২০১৯

ববির ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ‘এক দফা এক দাবি ভিসি তুই কবে যাবি। ভিসির পদত্যাগ ছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি নাই’ স্লোগান নিয়ে চলমান আন্দোলনের সপ্তমদিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে সোমবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভিসি পদত্যাগ না করলে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনসহ কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর ভিসির বিরুদ্ধে ২৫টি অভিযোগ উল্লেখ করে স্মারকলিপি পেশ করেন। স্মারকলিপিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হকের অপসারণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও স্মারকলিপিতে জাতীয় দিবসগুলো (১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ)’র অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত না করা এবং এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে কটূক্তি করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে ২৫টি পয়েন্টে ভিসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নির্দিষ্ট আকারে তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে অর্থ আত্মসাত, অবৈধভাবে পদোন্নতি, নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের ওপর জরিমানাসহ বিভিন্ন অজুহাতে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর ও সবুজায়ন না করা ইত্যাদি। স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে মৌখিকভাবে বিভাগীয় কমিশনার, সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান করবেন। এ সময় তিনি (জেলা প্রশাসক) বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। স্মারকলিপি প্রদান শেষে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত। লিখিত বক্তব্যে আন্দোলনকারীদের পক্ষে তিনি বলেন, ভিসি শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে কটূক্তি করেননি বলে দাবি করে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের কর্মকা- রাজাকার সদৃশ। আমাদের প্রশ্ন রাজাকার সদৃশ, রাজাকারের পক্ষের শক্তি ও রাজাকারের মধ্যে পার্থক্য কি? এর আগেও দুইবার বর্তমান ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে, তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে মেডিক্যাল সেবা ও ডাইনিং বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরেও আমরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবির বিষয়ে কোন সুরাহা না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচীসহ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচীকে আরও কঠোর কর্মসূচীতে পরিণত করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়- ভিসির নির্দেশে গত তিনদিন যাবত ডাইনিং বন্ধ করে দেয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা বিভিন্নস্থানে বসে কেউ খেতে পারছে আবার অনেকে না খেয়ে আছেন। এতে অনেক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আয়োজন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। পরে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ভিসি রাজাকারের সন্তান বলে গাদিলে আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
×