ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মিয়ামির নতুন রানী এ্যাশলে বার্টি

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১ এপ্রিল ২০১৯

 মিয়ামির নতুন রানী এ্যাশলে বার্টি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মিয়ামি ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হলেন এ্যাশলে বার্টি। ফাইনালে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। শনিবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিভাবান খেলোয়াড় এ্যাশলে বার্টি ৭-৬ (৭/১) এবং ৬-৩ গেমে পরাজিত করেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা ক্যারোলিনা পিসকোভাকে। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন ২২ বছরের এই তরুণী। টুর্নামেন্টের পঞ্চম বাছাই পিসকোভাকে হারিয়ে দারুণ খুশি এ্যাশলে বার্টি। এ বিষয়ে নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ান তারকা বলেন, ‘গত ১৫দিন আমার জন্য বিস্ময়কর। আজও আমি খুব ভাল টেনিস খেলেছি। আমার জন্য অবশ্যই এটা অনেক বড় ম্যাচ। মঞ্চটাও অনেক বড় ছিল। যেভাবে আমি এবং আমার টিম এখানে পারফর্ম করেছে তাতে সত্যিই গর্বিত। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, এই দুই সপ্তাহে খুব ভাল টেনিস খেলেছি আমি।’ অথচ এক সময় ক্রিকেট মাঠেও দাপট দেখিয়েছিলেন এ্যাশলে বার্টি। এই গল্পটাও ক্রীড়ামোদীদের অনেকের জানা। ২০১৪ সালে ইউএস ওপেনের পর টেনিস ছেড়ে দেন তিনি। কোর্ট থেকে নেমে পড়েন ২২ গজে। টেনিস খেলোয়াড় থেকে পুরোদস্তুর ক্রিকেটার বনে যান তিনি। অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে জায়গা করে নেন অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটেও। শুধু তাই নয়, নারীদের বিগ ব্যাশ টি-টোয়েন্টি লীগের মতো মঞ্চও মাতিয়েছেন তিনি। অবশ্য ক্রিকেটে দুই বছরের বেশি থিতু হতে পারেননি বার্টি। ২০১৬ সালেই আবারও টেনিস কোর্টে ফিরে আসেন তিনি। প্রত্যাবর্তনের সময়টাতে অবশ্য আশানুরূপ পারফর্মেন্স দেখা যায়নি বার্টির কাছ থেকে। তবে এ বছরের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেন এই অস্ট্রেলিয়ান তারকা। মেয়েদের এককে টেনিসের সাবেক শীর্ষ তারকা মারিয়া শারাপোভাকেও যে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে রুশ তারকা শারাপোভাকে ৪-৬, ৬-১ ও ৬-৪ গেমে হারিয়েছিলেন এ্যাশলে বার্টি। তার সেই জয়ের মধ্য দিয়ে ১০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শেষ আটে নিজ দেশের কোন নারীকে পায় অস্ট্রেলিয়া। পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা এখনও ধরে রেখেছেন তিনি। মিয়ামি ওপেনে পিসকোভাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ডব্লিউটিএ প্রিমিয়ার ম্যানডেটরি শিরোপা জিতলেন এ্যাশলে বার্টি। ফাইনালে উঠার পথে পেত্রা কেভিতোভা এবং সামান্থা স্টোসারের মতো তারকাদেরও পরাজিত করেন তিনি। মিয়ামি ওপেন জয়ের ফলে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়েও ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান তারকার। এবারই প্রথম শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। মিয়ামি ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সৌজন্যে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের নয় নম্বরে উঠে এসেছেন বার্টি। যা গত অর্ধ-যুগের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম কোন নারী টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। তার আগে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার কোন খেলোয়াড় হিসেবে শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছিলেন সামান্থা স্টোসার। ২০১৩ সালে সামান্থা স্টোসারের পর এবার সেই রেকর্ড গড়লেন এ্যাশলে বার্টি। পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার এ্যাশলে বার্টি ফ্লোরিডায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলে ব্যতিক্রমধর্মী এক রেকর্ডের সাক্ষী হলো বিশ্ব টেনিস। এ বছরের প্রথম ১৪টি একক ইভেন্টের সবগুলোতেই শিরোপা জিতেছেন ভিন্ন ভিন্ন টেনিস খেলোয়াড়। এদিকে বার্টির কাছে হেরে চরম হতাশ ক্যারোলিনা পিসকোভা। তবে চেক তারকা জানালেন কোর্টে খুব ক্লান্ত ছিলেন তিনি। আবহাওয়াও তার বিপক্ষে ছিল এদিন। এ প্রসঙ্গে বিশ্বের সাবেক নাম্বার ওয়ান খেলোয়াড় বলেন, ‘সার্ভ খুব লম্বা করতে পারছিলাম না আমি। আমার জন্য এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাছাড়া শুরুতেই সে আমাকে বিভ্রান্তের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। আমি খুব ক্লান্তও ছিলাম। অনেক বেশি ক্লান্ত থাকার কারণে কোর্টে নিজের সেরাটা দিতে পারছিলাম না।’ তবে সেমিফাইনালেও দুর্দান্ত খেলেন পিসকোভা। শেষ চারেও সরাসরি সেটে রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপকে পরাজিত করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফাইনালে এসেই জয়রথ থেমে যায় তার। এর আগে ইন্ডিয়ান ওয়েলস এবং দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপেও পিসকোভার সূচনা ছিল বেশ প্রশংসনীয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। দুই টুর্নামেন্টের দুটিতেই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যান তিনি। এবার মিয়ামির ফাইনালে হারটা পিসকোভার জন্য তাই আরও বেশি হতাশার।
×