স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিরাট কোহলি। সময়ের অন্যতমসেরা ব্যাটসম্যান। স্টিভেন স্মিথ, জো রুট, কেন উইলিয়ামসনের মতো গুটিকয়েক ক্রিকেটারকেই কেবল তার সঙ্গে তুলনা করা হয়। সেই তালিকায় ম্যাক্সওয়েলকে রাখলে অনেকে অবাক হবেন। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ ৩০ বছরের ভিক্টোরিয়ান তুমুল প্রতিভাবান হয়েও দীর্ঘদিনে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ঠিক নিজের গুরুত্ব বোঝাতে পারছিলেন না। স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চসহ এখন যে ক’জন আলো ছড়াচ্ছেন ম্যাক্স তাদের অন্যতম। আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ ওয়ানডেতে খেলেছেন ৭১ ও ৯৮ রানের দারুণ দুটি ইনিংস। প্রধান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেছেন, নিজের প্রতিভার ধারাবাহিক প্রকাশ ঘটাতে পারলে ম্যাক্সওয়েল হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার বিরাট কোহলি! বিশ্বকাপের আগে দলের সার্বিক পারফর্মেন্সেও খুশি প্রধান কোচ।
ল্যাঙ্গার বলেন, ‘ম্যাক্সওয়েলের প্রতিভায় আমার এতটুকু সন্দেহ নেই। প্রশ্ন সেটির সঠিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে। সাত বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ও অস্ট্রেলিয়ার বড় বড় সব তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলেছে। কিন্তু ধারাবাহিক হতে পারেনি। টি২০তে গড় প্রায় ৩৫, ওয়ানডেতে ৩২। অথচ নিজের প্রতিভার ধারাবাহিক প্রকাশ ঘটাতে পারলে এটা অনেক বাড়তে পারত। সবচেয়ে আশার কথা ও এখন অনেক পরিণত। দলে নিজের গুরুত্ব বুঝতে পারছে। সেই প্রয়োজনে ভাল বোলিং করে এবং অবশ্যই দুর্দান্ত ফিল্ডার। শৃঙ্খলা, আচরণ, ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন সব কিছু ঠিক রাখতে পারলে বিশ্বকাপেই ম্যাক্সওয়েলকে আমরা কোহলির ভূমিকায় দেখতে পারি!’ ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। প্রথমে আলোচনা ছিল টেস্ট দলে তার সুযোগ পাওয়া ও না পাওয়া নিয়ে। এরপর বিতর্কের বিষয় ছিল ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটসম্যানকে ৭ নম্বরে খেলানো ঠিক কি- না।
স্মিথ-ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে সম্প্রতি ভারত সফরে দ্বিতীয় টি২০তে চার নম্বরে নেমে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ২-০’র স্মরণীয় সাফল্যে হয়েছেন সিরিজসেরাও। আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজে আবার খেলছেন ৬ নম্বর পজিশনে। স্মিথ-ওয়ার্নার ফিরলে হয়তো ফের সাতে নেমে যেতে হবে। এ নিয়ে কোচ ল্যাঙ্গারের যুক্তি, ‘আমরা যদি বিশ্বকাপ জিততে চাই, তাহলে ম্যাক্সওয়েল হবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমি সত্যিই মনে করি, সে সাত নম্বরেই সেরা। হ্যাঁ, যখনই আমাদের ওপরের দিকে কোন ঝড়ো ইনিংস দরকার হবে, আমরা তাকে আগে নামাব।’ ল্যাঙ্গার এই প্রসঙ্গে মাইকেল ক্লার্ক বা মাইক হাসির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন,‘ ক্লার্ক যখন সাত নম্বরে ব্যাট করতো বা হাসি যখন সাত নম্বরে, সেই সময়ের কথা মনে করতে পারি আমি। আমি হাসির পাশে দাঁড়িয়ে রসিকতা করতাম যে বন্ধু, তোমার তো ব্যাটই করতে হয় না। তোমার কাজটাই সবচেয়ে ভাল। হাসি তখন এসে একটা শেষের ছোঁয়া দিতো। সে রকম ম্যাক্সি এসে যা করতে অভ্যস্ত, সেই শেষের ছোঁয়াটা যখন দেয় সেটা অসাধারণ একটা ব্যাপার হয়।’
ল্যাঙ্গার স্বীকার করেন পরিস্থিতির কারণেই গত কয়েক মাস ধরে তারা ব্যাটিং অর্ডারে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনে করছেন, ম্যাক্সওয়েল এই নিচের দিকেই দলকে সেরাটা দিতে পারবেন। তিনি বলছেন, ‘আমরা যখন ভিন্ন ভিন্ন জিনিস চেষ্টা করেছি, তখন আমরা যে ধরনের সাফল্য আশা করেছিলাম তা পাইনি। আমার কাছে ম্যাক্সি হলো বিশ্বের সেরা ফিল্ডার। তার যে অসীম প্রাণশক্তি সেটাকে আমরা খুব পছন্দ করি।’ ২০১২ থেকে সাত বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ৭ টেস্ট, ৯৯ ওয়ানডে (রবিবারের ম্যাচ বাদে) ও ৫৯টি টি২০ খেলছেন ম্যাক্সওয়েল।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: