ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় প্রস্তুত হচ্ছেন মিরাজ

প্রকাশিত: ১০:৫০, ১ এপ্রিল ২০১৯

বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় প্রস্তুত হচ্ছেন মিরাজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিন ওয়ানডে ও এক টেস্ট খেলেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু ব্যাটে-বলে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। সফর শেষ করে দেশে ফেরার পরই এ অলরাউন্ডার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তাই চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) প্রথম ৬টি ম্যাচ খেলতে পারেননি। তবে সর্বশেষ ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে নেমেছিলেন এ অফস্পিন অলরাউন্ডার। এখন নিয়মিতই লীগ খেলবেন বলে জোরালো অনুশীলন শুরু করেছেন। মূলত ডিপিএল দিয়েই আসন্ন বিশ্বকাপ প্রস্তুতি সেরে নিতে চান ২১ বছর বয়সী খুলনার এ ক্রিকেটার। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ব্যাটে-বলে বিশ্বকাপে সতীর্থদের ভাল সহায়তা দিতে পারবেন। উপমহাদেশের বাইরের কন্ডিশনগুলো স্পিনারদের জন্য তেমন সহায়ক নয়। এবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে অফস্পিনার মিরাজ ভালভাবেই বুঝেছেন এমন কন্ডিশনে তার জন্য তেমন কিছুই করার থাকবে না। তবে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে স্পিনারদের মধ্যে একমাত্র মিরাজের থাকারই সম্ভাবনা প্রবল। আর সে জন্য এখন থেকেই বিশ্বকাপের পরিকল্পনা মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি। কারণ ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ হতে চলেছে এটি। সে জন্য ফিটনেস নিয়েও কাজ করছেন। তাই লীগের মাঝখানেই চলবে তার প্রস্তুতি। মিরাজ বলেন, ‘প্রিমিয়ার লীগ চলাকালীন যে ১ মাস সময় পাব এই সময়ের মধ্যেই নিজেদের গুছিয়ে নিতে হবে। কারণ আমাদের হাতে ওইরকম সময় নেই। প্রিমিয়ার লীগের ফাঁকে ফাঁকে যতটুকু প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ততটুকুই নেব। আর অবশ্যই আমাদের স্পিনারদের যে দায়িত্ব সেটা হলো পেসারদের সহযোগিতা করা। কারণ উপমহাদেশে খেলা হলে স্পিনারদের ভূমিকাটা বেশি থাকতো। কিন্তু ইংল্যান্ডে পেসারদের সাপোর্ট করতে হবে। এই কাজটা যতটা সম্ভব করতে পারলে আমাদের দল আরও ভাল করবে।’ বিশ্বকাপের আগেই মে মাসের শুরুতে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, তারপর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। উভয় পরিবেশেই স্পিনারদের জন্য চ্যালেঞ্জটা বেশি। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় স্পিনারদের রানটা আটকে দেয়া খুব জরুরী। ওইসব দেশে কিন্তু স্পিনাররা বেশি সাহায্য পাবে না। উইকেট না বের করতে পারলেও মিতব্যয়ী বোলিং করতে হবে। ওভার প্রতি পাঁচ বা সাড়ে পাঁচ করে রান দিলে আমার কাছে মনে হয় অনেক ভাল বোলিং ফিগার। এর মধ্যে দুই-একটা উইকেট নিতে পারলে তো অনেক ভাল। এটাই যে, পেসারদের সাহায্য করা আর রান কম দেয়া স্পিনারদের মূল ভূমিকা থাকবে বিশ্বকাপে।’ এর আগে ইংল্যান্ডে জাতীয় দলের হয়ে একবারই খেলেছেন মিরাজ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেছিলেন একটি ম্যাচ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান তিনি। ব্যাট হাতেও রাখতে চান ছোটখাটো অবদান। মিরাজ বলেন, ‘আমার একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। উইকেট খুব কাছ থেকেই দেখেছি, অনেক ভাল উইকেট থাকে। আমি যদি চেষ্টা করি ভাল জায়গায় বোলিং করার তাহলে ব্যাটসম্যান অনেক সময় ভুল করে বসতে পারেন। ওইখানে তেমন স্পিন থাকবে না, সুন্দরভাবে বল ব্যাটে আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে হবে, সেটা নিয়েই এখন থেকে কাজ করব। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দলটা অনেক ভাল এবং বিপদের সময় ২০-৩০টা রান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়েই কাজ করছি, অনেক বড় ইনিংস খেলার সুযোগ হয়তো আমি পাব না। আমার কাছ থেকে দল আশা করে ২০-৩০-৪০, এমন রান যদি স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারি বা শেষের দিকে একটা জুটি গড়তে পারি তাহলে দলের জন্য অনেক সাহায্য হবে। এটা নিয়েই কাজ করছি শেষের ২০-৩০টা রান কিভাবে করতে হবে। ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন অনেকটা একই। তাই আমাকে কোন্ জায়গায় উন্নতি করতে হবে সেটা নিউজিল্যান্ড থেকে অনেক কিছু ধরতে পেরেছি। দেশে এগুলো কাজে লাগাতে চাই এখন।’ নিউজিল্যান্ডে ৩ ওয়ানডে খেলেছিলেন। পেয়েছিলেন মাত্র দুই উইকেট। সে জন্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মিরাজকে। তাই নিজের উন্নতি করতে মনোযোগী হচ্ছেন তিনি। এ অলরাউন্ডার সে বিষয়ে বললেন, ‘ফিটনেসের কাজ করতে হবে আবার ড্রিল আছে বোলিংয়ের, কিছু বোলিং স্কিলের উন্নতি করতে হবে। হয়তো সময় তেমন পাব না কিন্তু যতটুকু পাব ৩০-৪০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা, সেটা যেন কাজে লাগাতে পারি। যেমন আজকে (রবিবার) অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছি, কালকে (আজ) ম্যাচ খেলব পরশু আবার বোলিং করব, জিম করব। ম্যাচের ফাঁকে একদিন বা দুইদিন যে বিরতি থাকবে এটাকে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার কাছে মনে হয়। আমরা আয়ারল্যান্ডে যাচ্ছি, সেখানেও প্রস্তুতির সুযোগ পাব, ইংল্যান্ডেও ১০-১২ দিন সময় থাকবে। এই যে ১৫-২০ দিন সময় পাচ্ছি সেগুলো যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে ভল ফলাফল আসবে।’
×