ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়াশিংটন পোস্টে জাকারবার্গের খোলা চিঠি

ইন্টারনেটের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহায়তা চাই

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ১ এপ্রিল ২০১৯

 ইন্টারনেটের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহায়তা চাই

ইন্টারনেটের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সহায়তা চেয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। ওয়াশিংটন পোস্টের ‘মতামত কলামে’ ফেসবুকের প্রধান জাকারবার্গ বলেন, শুধু কোম্পানিগুলোর একার পক্ষে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকর বা নেতিবাচক বিষয়বস্তু নজরদারি করা কঠিন। ক্ষতিকর বা নেতিবাচক বিষয়বস্তু, নির্বাচনী শুদ্ধতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও তথ্য সরানো- চারটি বিষয়ের ওপর নতুন আইন করার আহ্বান জানান তিনি। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা বন্দুকধারী ফেসবুকের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করার দুই সপ্তাহ পর এ ঘোষণা দিলেন মার্ক জাকারবার্গ। জাকারবার্গ লেখেন, আইনপ্রণেতারা প্রায়ই আমাকে বলেন, কথা বলার বিষয়ে আমাদের অত্যধিক ক্ষমতা রয়েছে। আর আমি সেটা অকপটে স্বীকার করি। তিনি আরও লেখেন, ব্যবহারকারীরা যাতে তাদের করা পোস্ট এবং যেসব পোস্ট সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তা নিয়ে আপীল করতে পারে সেজন্য ফেসবুক একটি স্বতন্ত্র কমিটি করছে। টেক কোম্পানিগুলোর ওপর যাতে কিছু আইনপ্রয়োগ করা যায়, সেজন্য তিনি কিছু আইনেরও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এসব নতুন নিয়ম-কানুন সব ওয়েবসাইটের জন্য একই রকম হওয়া উচিত, যাতে সবাই ক্ষতিকর বিষয়বস্তুর দ্রুত বিস্তার সহজেই রোধ করতে পারে। মার্ক জাকারবার্গ যেসব বিষয়ের প্রতি জোর দিয়েছেন সংক্ষেপে তা হলো- ক্ষতিকর বিষয়বস্তুর বিস্তার রোধে সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য একই নিয়ম-কানুন থাকবে, যেগুলো তদারকি করবে তৃতীয় কোন পক্ষ, বড় বড় টেক কোম্পানি প্রতি তিন মাস অন্তর একটি স্বচ্ছতা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে, যা আর্থিক প্রতিবেদনের সঙ্গে থাকবে, নির্বাচনী স্বচ্ছতা রক্ষায় বিশ্বব্যাপী আরও কঠিন আইন করতে হবে, যেখানে সব ওয়েবসাইটের জন্য একটি আদর্শ ব্যবস্থা থাকবে যাতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যায়, রাজনৈতিক প্রচারে অনলাইনে কিভাবে ভোটারদের টার্গেট করা হয় সেটা প্রতিরোধে নতুন একটি আদর্শ ব্যবস্থা সৃষ্টি করা, গতবছর থেকে কার্যকর জিডিপিআরের (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’ন জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশন) মতো ব্যক্তিগত সুরক্ষা আইন আরও বেশি দেশে প্রবর্তন করা, এসব আইন হবে বৈশ্বিকমানের, যা দেশে দেশে ভিন্ন হবে না, জনগণ যখন এক সেবা থেকে অন্য কোন সেবায় চলে যায় তখন তার তথ্যের সুরক্ষার দায়িত্ব কার এ বিষয়ে পরিষ্কার ও সুনির্দিষ্ট আইন থাকা। নির্বাচনী প্রচারের সময় তথ্যের অপব্যবহারের বিষয়ে ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এরপর মার্ক জাকারবার্গের এই খোলা চিঠি প্রকাশিত হলো। এই চিঠি ইউরোপের কিছু সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হবে। ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ভিডিও ফুটেজ ছড়ানো বন্ধ করতে না পারায়ও সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় ফেসবুককে। ওই হামলায় ৫০ মুসলিম নিহত হন। গত ১৫ মার্চ মসজিদে হামলাকারী তার ফেসবুকে হামলার লাইভস্ট্রিমিং করে। এটা ১৫ লাখবার কপি হয়। জাকারবার্গের খোলা চিঠিতে ওই হামলার বিশেষ কোন নাম দেয়া হয়নি। Ñবিবিসি
×