ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হোয়াইট ওয়াশের শঙ্কায় পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৩১ মার্চ ২০১৯

হোয়াইট ওয়াশের শঙ্কায় পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হোম ভেন্যু আরব আমিরাতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে টানা তিন হারে সিরিজ খোয়ানোর পর দেশে থাকা বোর্ড (পিসিবি) কর্তাদের নিজ বাসভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিশ্বজয়ী অধিনায়ক অত্যন্ত ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘৪০ বছর ক্রিকেট খেলেছি, আমাকে শেখাতে আসবেন না। দেশের জন্য কাজ করুন।’ শোয়েব মালিকের পরিবর্তে ইমাদ ওয়াসিমকে অধিনায়ক করে চতুর্থ ওয়ানডেতে মাঠে নামে পাকিস্তান। সেঞ্চুরি হাঁকান মোহাম্মদ রিজোয়ান (১১২) এবং অভিষিক্ত আবিদ আলি (১০৪)। তারপরও জয়ের মুঠোয় থাকা ম্যাচটা তারা হেরে গেছে ৬ রানে, একেবারে ‘পাকী স্টাইলে’! অস্ট্রেলিয়ার ২৭৭/৭Ñএর জবাবে ২৭১/৮Ñএ থেমে গেছে ইনিংস। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে অজিদের জয়ের নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৯৮)। হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা এড়াতে দুবাইয়ে আজই পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান। জোড়া সেঞ্চুরির পরও দলের হার, ওয়ানডেতে এমন ঘটনার মাত্র চতুর্থ উদাহরণ এটি। এমন অভিজ্ঞতা ভারতের হয়েছে দু-বার, জিম্বাবুইয়ের একবার। রান তাড়ায় শুরুটা ভাল হয়নি পাকিস্তানের। শূন্য রানে ফেরেন ওপেনার শান মাসুদ। থিতু হয়ে বিদায় নেন হারিস সোহেল। চাপে পড়ে যাওয়া দলকে টানেন অভিষিক্ত আবিদ ও রিজোয়ান। শুরুতে একটু সময় নেয়া আবিদ রানের গতি বাড়ান পরে। অভিষেকে পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা এই ওপেনার রিজোয়ানের সঙ্গে গড়েন ১৪৪ রানের জুটি। ১১৯ বলে ৯ চারে ১১২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলা আবিদকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরোধ ভাঙ্গেন এ্যাডাম জ্যাম্পা। পরের কোন ব্যাটসম্যান পারেননি পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। ৭ উইকেট হাতে নিয়েও শেষ ৭ ওভারে ৪৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি দলটি। কিপার-ব্যাটসম্যান রিজোয়ান ছিলেন বলে আশা টিকে ছিল। শেষ ৩ ওভারে দলটির প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। কিন্তু ৪৮ ও ৪৯তম ওভার থেকে তারা নিতে পারে মাত্র ৮ রান। এই সময়ে ফিরে যান সাদ আলি ও অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম। সিরিজে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া রিজোয়ান ১০২ বলে ৯ চার ও এক ছক্কায় ১০৪ রান করে শেষ ওভারে ফিরে গেলে আর পেরে ওঠেনি পাকিস্তান। শেষের দারুণ বোলিংয়ে নাটকীয় জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। পেসার নাথান কুল্টার-নাইল ৩ উইকেট নেন ৫৩ রানে। মার্কাস স্টয়নিস ২০ রানে নেন ২ উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪২ বলে ৩৯ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংসে সফরকারীদের ভাল শুরু এনে দেন এ্যারন ফিঞ্চ। তবে ইনফর্ম অধিনায়কের বিদায়ের পর শন মার্শ, পিটার হ্যান্ডসকম ও মার্কাস স্টয়নিস দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। দারুণ ছন্দে থাকা উসমান খাজা তুলে নেন আরেকটি ফিফটি। ৭৮ বলে ৬ চারে ৬২ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনারকে এলবিডব্লিউ করে বিদায় করেন ইয়াসির শাহ। ১৪০ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে পথ দেখান ম্যাক্সওয়েল। দারুণ সঙ্গ পান কিপার-ব্যাটসম্যান এ্যালেক্স ক্যারির কাছ থেকে। দ্রুত জমে যায় তাদের জুটি। বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া ম্যাক্সওয়েল নিজের সেঞ্চুরির কথা ভাবেননি। তাই তো ঝুঁকিপূর্ণ দুই রান নেয়ার চেষ্টায় তার রান আউটে ভাঙে ১৩৪ রানের চমৎকার জুটি। তিন ছক্কা ও নয় চারে ৮২ বলে ৯৮ রান করে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। এ নিয়ে সিরিজে টানা তিন ম্যাচে রানআউটে কাটা পড়লেন অজি হার্ডহিটার উইলোবাজ! তৃতীয় ওয়ানডেতে ৭১ রান করে একই ফাঁদে পড়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পাওয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান এ্যালেক্স ক্যরি বিদায় নেন ৩ চারে ৫৫ রান করে।
×