ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির দুঃখ প্রকাশ প্রত্যাখ্যান

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ৩১ মার্চ ২০১৯

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির দুঃখ প্রকাশ প্রত্যাখ্যান

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ববির ভিসি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছে। শনিবার সকালে তারা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচী ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে ভিসি প্রফেসর ড. ইমামুল হক তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও সেটা শিক্ষার্থীরা কৌশল হিসেবে উল্লেখ করেন। দুঃখ প্রকাশের নামে ভিসি কৌশলী বক্তব্য দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা ভিসির এমন দুঃখ প্রকাশকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি ক্ষমা প্রার্থনা করে যে দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন তা অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে করা হয়েছে। তিনি আমাদের রাজাকারে সন্তান বলে এখন তা অস্বীকার করছেন। তার বক্তব্য নাকি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি সত্যকে আড়ালের চেষ্টা করছেন। তাকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যেতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলেও উল্লেখ করেন। শুক্রবার রাতে ঢাকার কলাবাগানে লিয়াজু অফিসে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভার মাধ্যমে ভিসি প্রফেসর ড. ইমামুল হক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে দেয়া তার বক্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সভা শেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভিসির উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ রুমি স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো ই-মেইল বার্তায় উল্লেখ করা হয় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির অনুষ্ঠানে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই- আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করিনি বরং যারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের এমন কার্যক্রম রাজাকারসদৃশ মর্মে মন্তব্য করেছি। উক্ত ‘শব্দটি’ আমি কোনভাবেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে বলিনি। এরপরেও যদি আমার উক্ত বক্তব্যে কোন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, তবে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখার স্বার্থে আমি সব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি। ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ক্লাস ও পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে যাচ্ছে। এভাবে দীর্ঘসময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলে আরও পিছিয়ে পড়তে হবে। যা পরবর্তীতে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। তাই খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সুধীজন, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পরিস্থিতির সমাধান করা হবে। এজন্য সিন্ডিকেট সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান বলেন, খুব শীঘ্রই তারা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বসার ব্যবস্থা করবেন। উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই ক্যাম্পাসে ভিসির অপসারণসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
×