ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে আসামি শিরিনের পরিবর্তে আদালতে অন্য নারী

প্রকাশিত: ০১:২০, ৩০ মার্চ ২০১৯

যশোরে আসামি শিরিনের পরিবর্তে আদালতে অন্য নারী

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি শিরিনকে না পেয়ে রেখা নামের এক মহিলাকে ধরে শিরিন পরিচয়ে আদালতে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে। রেখা পক্ষের আইনজীবীর দাবি, তাকে হয়রানি করতে পুলিশ এ ধরনের কাজ করেছেন। এছাড়া আদালতে তারা রেখার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দাখিল করে এ দায় থেকে অব্যাহতি পেতে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আদালত বিষয়টি আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে অধিকতর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ সুপার যশোরকে নির্দেশ দিয়েছেন। সুত্র জানায়, ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল চাঁচড়া রায়পাড়ার ইসমাইল কোলোনিতে অভিযান চালিয়ে নিজ বসতবাড়ি থেকে ওই এলাকার শিরিন বেগমকে ২৫ পুড়িয়া হেরোইনসহ আটক করে পুলিশ। এঘটনায় তৎকালীন কোতোয়ালি থানার এস আই কুমকুম নাজমুন নাহার বাদী হয়ে শিরিন ও তার স্বামী একই এলাকার রব পকেটমারের ছেলে শহিদুল ইসলামকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট অতিরিক্ত দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ে শিরিনা বেগমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো চার মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন এবং অপর আসামি শিরিনের স্বামী শহিদুলকে এ মামলা থেকে অব্যহতি প্রদান করে আদালত। পরে শিরিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরয়ানা জারি করে আদালত। পরে গত ২০ মার্চ থানার এস আই আমিরুজ্জামান ওয়ারেন্ট মুলে এই আসামি ধরে এনে আদালতে সোপর্দ করেন। ওই আসামি শিরিন না তিনি রেখা মর্মে বলে আদালতকে জানান। একই সাথে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের অনুলিপি প্রদান করার পর আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরের দিন এসআই আমিরুজ্জামান ও আসামিকে তলব করে ২৪ মার্চ পরবর্তী আদেশের দিন দেন আদালত। এদিন আসামি রেখার পক্ষথেকে জানানো হয়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি শিরিন পুলিশের ভয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। রেখা ঝিনাইদহ শহরের মশিউর রহমান সড়কের লাল্টু শেখের মেয়ে ও আলমগীর হোসেনর স্ত্রী বলে আদালতকে জানানো হয়। রেখাকে হয়রানি করতে পুলিশ ধরে এনে শিরিন বলে সাজানো হয়েছে এবং এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়। এদিকে এদিন রাষ্টপক্ষের কৌশুলী দাবি করেন, আসামি পক্ষ শিরিন খাতুনকে রেখা খাতুন হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছে। এই রেখা খাতুনই মূলত শিরিন খাতুন বলে রাষ্টপক্ষের কৌশুলী দাবি করেন। পরে আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারের তদন্ত প্রতিবেদন ৪ এপ্রিলের মধ্যে দাখিলের জন্য আদেশ দেন এবং আসামি রেখাকে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। বর্তমানে শিরিন তথা রেখা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডে বন্দি রয়েছেন।
×