ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষার বাকি তিনদিন

রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাননি কারিগরির ২২ হাজার পরীক্ষার্থী

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২৯ মার্চ ২০১৯

 রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাননি কারিগরির ২২ হাজার পরীক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বাকি আছে মাত্র তিনদিন। অথচ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি বিএম পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাননি অন্তত ২২ হাজার পরীক্ষার্থী। ঘটনার জন্য দায়ী কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রেশন কার্ড না দিয়ে কেবল প্রবেশপত্র দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আগারগাওয়ে কারিগরি বোর্ডে দিনভর বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা। এদিকে শত শত পরীক্ষার্থীকে বিপদে ফেলে বিদেশ সফরের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা চেয়ারম্যানের অবর্তমানে দিনভর প্রতিবাদ করেছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরসহ বোর্ড চত্বরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন। অথচ চেয়ারম্যান আছেন দেশের বাইরে। বিভিন্ন কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, পরীক্ষার্থী ও বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত পরীক্ষার এক থেকে দুই মাস আগেই সকল কলেজকে তাদের শিক্ষার্থীদের ছবিযুক্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেয় শিক্ষা বোর্ড। অধ্যক্ষরা বোর্ডে এসে তাদের শিক্ষার্থীদের ছবিযুক্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে যান। এর পর পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রও সংগ্রহ করেন শিক্ষকরা। পরীক্ষায় জালিয়াতি এড়ানোর জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্রের সঙ্গে ছবিযুক্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ হাজার পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ডও সরবরাহ করতে পারেনি বোর্ড। কদিন ধরে শত শত শিক্ষক ও শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন কার্ডের জন্য বোর্ডে ধর্ণা দিলেও কোন সমাধান দিতে পারেননি কর্মকর্তারা। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. সুশীল কুমার পাল বুধবার বোর্ডে আসা লোকজনের সঙ্গে উল্টো খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষরা। এসব ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বোর্ডে জড়ো হয় তারা। কিন্তু এক পর্যায়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছবিযুক্ত রেেিজস্ট্রেশন কার্ড না দিয়ে কেবল প্রবেশপত্র দেয়ার ঘোষণা দিলে প্রতিবাদে স্বোচ্চার হন সকলে। সন্ধ্যায় আন্দোলন চলাকালে যশোর থেকে আসা এক অধ্যক্ষ জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের সঙ্গে আমাদের ছাত্ররাও এসেছে। আমাদের সঙ্গে শেয়াল-কুকুরের মতো আচরণ করছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। অধ্যক্ষ তাদের সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিতে পারছে না। এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের জন্য হয়েছে। এত বড় সমস্যার সমাধান না করে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি গেছেন ইতালি ভ্রমণে। এসব কারণে আরও অসন্তোষ বাড়ছে। অধ্যক্ষ জানান, রেজিস্ট্রেশন কার্ড না হলে যে কেউ জালিয়াতি করে পরীক্ষা দিতে পারে। হলে ভুয়া পরীক্ষার্থী একজন আরেকজনের পরীক্ষা দেবে। এসব কারণেই ছবি রাখা হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন কার্ডের বিষয়ে পরে জানানো হবে। প্রবেশপত্র দেয়া হচ্ছে। বাড়ি চলে যান। বগুড়া থেকে আসা শিক্ষার্থী হাসান বলেছেন, আমাদের জীবন নষ্ট করে ওনারা বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও কিছু করছেন না। এক প্রশ্নের জবাবে এ পরীক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষার আগে সকলে আছে পড়ালেখায় ব্যস্ত, আর আমাদের ঢাকায় এসে বসে থাকতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের দরজায়। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।
×