ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থ ধাপে ১২৩ উপজেলায় ভোট ৩১ মার্চ

প্রকাশিত: ১১:১১, ২৯ মার্চ ২০১৯

 চতুর্থ ধাপে ১২৩ উপজেলায় ভোট ৩১ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপজেলা নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের চেয়ারম্যান পদে ৩৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলে এই ধাপে ৮৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ইসি সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ ধাপে সব পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, এমন উপজেলা পরিষদের সংখ্যা রয়েছে ১৫। ফলে এসব উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ছে না। আগামী রবিবার চতুর্থ ধাপে ১২৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে। গত ১০ মার্চ থেকে সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে উপজেলায় নির্বাচন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফায় ১০ মার্চ, দ্বিতীয় দফায় ১৮ মার্চ এবং তৃতীয় দফায় ২৪ মার্চ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাচনের তিন ধাপে ৩২৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ ধাপে ১২৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে ৩১ মার্চ। চতুর্থ ধাপের হিসেবে দেখা যায়, সব মিলিয়ে ৮৮ জন বিনাভোটে জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ৩৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২২ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান ২৭ জন। তার আগে তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৫ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৪৮ জন এবং প্রথম ধাপে ২৮ জন বিনাভোটে জয়ী হন। সব মিলিয়ে ১০৮ জন চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এই হিসেবে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন। এছাড়াও প্রায় প্রত্যেক ধাপেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ায় অনেক উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন হয়নি। এর মধ্যে প্রথম ৩ উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে ৬ স্তরে উপজেলায় সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কারণে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। চতুর্থ ধাপে এসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া উপজেলার সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। ইসি সূত্রে জানা গেছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় চতুর্থ ধাপে ১৫ উপজেলায় ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। সব পদেই বিনাভোটে নির্বাচিত হওয়া উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোলা সদর, মনপুরা, চরফ্যাশন, যশোরের শার্শা, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, ঢাকার সাভার, কেরানীগঞ্জ, কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বার, চৌদ্দগ্রাম, নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও ফেনীর পরশুরাম। ২৪টি উপজেলায় শুধু চেয়ারম্যান পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এসব উপজেলার মধ্যে রয়েছে ভোলার দৌলতখান, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া, যশোর সদর, খুলনার ফুলতলা, বটিয়াঘাটা, বাগেরহাট সদর, মোংলা, চিতলমারী, কচুয়া, রামপাল, শরণখোলা, ময়মনসিংহ সদর, ফুলবাড়িয়া, ঢাকার দোহার, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি, নোয়াখালীর সেনবাগ, সোনাইমুড়ি, সুবর্ণচর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, ফেনীর ফুলগাজী, সোনাগাজী, দাগনভূঁইয়া, ছাগলনাইয়া ও দিনাজপুর সদর। শুধু ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ উপজেলায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নোয়াখালীর চাটখিল, ফেনী সদর, খুলনার দাকোপ, পিরোজপুরের নাজিরপুর, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও বাগেরহাটের ফকিরহাট। শুধু মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যে ১২ উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। এসব উপজেলার মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালী সদর, ভোলার দৌলতখান, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া, বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, ঢাকার ধামরাই, কুমিল্লার বরুড়া, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, ফেনী সদর। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রমজানের আগে আগামী ৩১ মার্চ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হচ্ছে। এর পর রমজানের পরে পঞ্চম শেষ দফায় নির্বাচন হবে। তবে পঞ্চম দফায় নির্বাচনের জন্য এখনও তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে রমজানের পর আগামী ১৮ জুন শেষ ধাপে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। একই দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও বিনাভোটে জিতে চলেছেন। বিএনপি এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ভোটে না আসায় মূলত উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা রয়েছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। যারা দলটি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তারা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন। যারা দল থেকে মনোনয়ন পাননি তারা বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এর বাইরে কোন কোন উপজেলায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এবারের উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়ার হার আগের চেয়ে অনেক কম। গত তৃতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ হারে। দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৪৩ দশমিক ৩২ শতাংশ হারে। এর আগে ২০০৯ সালের তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ভোট গ্রহণের হার ছিল ৭০ শতাংশের ওপরে এবং ২০১৪ সালে ছিল ৬০ শতাংশের ওপরে।
×