ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হতাহত জানতে ড্রোন ব্যবহার

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২৯ মার্চ ২০১৯

 হতাহত জানতে ড্রোন ব্যবহার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কামাল আতার্তুক রোড থেকে গুলশানগামী সড়ক, মূল রাস্তাসহ পুরো এলাকায় মানুষ আর মানুষ। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাঁশি বাজিয়ে-অনুরোধ করেও তাদের সরাতে পারছেন না। পাঁচ শতাধিক সেনা সদস্য, পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু উৎসুক মানুষের কারণে আগুন নেভানোসহ অন্যান্য কাজে তারাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তবে অনেকে আবার সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ কাঁধে কাঁধে রেখে আগুন নেভাতে সহযোগিতা দেন। অন্যদিকে, বিকেলের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ধোঁয়ার কারণে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ভবনের ভেতরে অগ্নিকা-ে আহত কিংবা নিহত কেউ আছেন কি-না এসব জানার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হয়। আগুন নেভানোর পর এমন ঘটনা এটাই প্রথম বলে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এ্যাভিনিউয়ে ২২তলা ভবনে লাগা আগুন বিকেলের দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকেল পাঁচটা ৪৫ মিনিটে আগুনের প্রভাব কমতে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগে। বহুতল ভবনটিতে দ্য ওয়েভ গ্রুপ, হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস, আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড ছাড়াও অর্ধশতাধিক অফিস রয়েছে। আগুনের ঘটনায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এদিকে, অগ্নিকা-ের পরপরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। এমনকি হেলিকপ্টারেও চালানো হয় উদ্ধার কাজ। কিন্তু আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এফআর টাওয়ারের নিচে ভিড় জমাতে শুরু করে উৎসুক জনতা। তাদের কেউ ছবি তুলছেন কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। কেউ আবার আসছেন লাইভে। তাদের কারণে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের। ওই ভবনে আটকেপড়া মানুষের স্বজনরাও ভিড় জমিয়েছে নিচে। জনতার ভিড়ে তারাও পড়ছেন। এদিকে সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেও অনেককে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিতে দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ দিয়ে অযথা পানি বের হতে দেখলেই তারা সেখানে জোড়াতালি দিয়ে আটকাচ্ছেন। পানি নষ্ট হতে দিচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার পানির পাইপ কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করছেন। প্রত্যক্ষদর্শী, গণমাধ্যম কর্মী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বর্ণনা মতে, যেসব উৎসুক জনতা কোন কারণ ছাড়াই দাঁড়িয়ে কেবল ছবি তুলছেন ও তাকিয়ে দেখছেন উদ্ধার তৎপরতায় তারাই বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন। চাইলে তারা প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করতে পারতেন না হলে জায়গাটা ফাঁকা রেখে উদ্ধার কাজ নির্বিঘ্ন করতেও সহায়তা করতে পারতেন। বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঘটনাস্থলে ভিড় করা উৎসুক জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, এখান থেকে সরে যান। এখানে অযথা ভিড় করবেন না। এতে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজ করতে পারছে না। আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। এখান থেকে সরে যাওয়াটাই সহযোগিতা। এখানে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাজ করছেন। আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আশা করছি, দ্রুতই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
×