ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিকড় জনহৃদয়ে ॥ আওয়ামী লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৮ মার্চ ২০১৯

শিকড় জনহৃদয়ে ॥ আওয়ামী লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বারবার অপচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কেউ আওয়ামী লীগকে শেষ করতে পারেনি। কারণ এই আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলার জনগণের হৃদয়ে প্রোথিত। এটা দ্বারা প্রমাণিত হয়, যারা প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, জনগণের অধিকারের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে, তাদের শেষ করা যায় না। আর যারা উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, তাদের গোড়ায় মাটি থাকে না। ক্ষমতা ছাড়া তাদের অস্তিত্বই থাকে না, এটা এখন প্রমাণিত। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। বাঙালীর মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে, স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে। এই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেয়ার জন্য চেষ্টা করেছে আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া। কিন্তু পারেনি। কারণ আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলার মানুষের সঙ্গে এমনভাবে প্রোথিত, এত চেষ্টায়ও এই সংগঠনকে শেষ করতে পারেনি। একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও উন্নতি হয় তা প্রমাণিত। আর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের কোন উন্নয়ন হয় না তাও প্রমাণিত। কারণ তারা এদেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস করে না। জাতির পিতার আদর্শের পথ ধরে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চলার জন্য দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। গত এক দশকে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ কোনদিন ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে পালন করব, স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, লে কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, দক্ষিণের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আমিরুল হক মিলন ও এস এম কামাল হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন অধ্যাপিকা মেরিনা জাহান কবিতা। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাঙালীকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করে রেখেছিল। কারণ তারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা কেন বাঙালী জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে দেবে? তিনি বলেন, আগে বাংলাদেশ মানেই ভিক্ষুকের দেশ, খরা-বন্যা-প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে অবহেলা করত। কিন্তু গত ১০ বছরে দেশের সেই চিত্র পাল্টে গেছে। গোটা বিশ্বে আর কেউ বাংলাদেশকে এখন অবহেলার চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সমানে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা মহাকাশ জয় করেছি, বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি, স্থায়ী সীমান্ত নিশ্চিত করেছি। অর্থাৎ মহাকাশ থেকে সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত বিচরণ করতে পারি, সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজেরা ভোগ বিলাস করেছে, নিজেরা অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছে। দেশের উন্নয়ন করতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলুক তা তারা চায়নি। বক্তৃতার শুরুতেই বাঙালী জাতির মুক্তির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওই আমলে সামরিক বাহিনী, প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে পাকিস্তান কর্তৃক বাঙালীকে বঞ্চিত করার চিত্র তুলে ধরেন তিনি। বলেন, পাট, চা, তামাক থেকে শুরু করে সব অর্থকরী ফসল আমরা উৎপাদন করে রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম, আর সেসব নিয়ে যেত পাকিস্তানীরা। তিনবার রাজধানী পরিবর্তন করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। কখনও করাচি, কখনও রাওয়ালপিন্ডি, কখনও ইসলামাবাদ। এই পরিবর্তনে যত টাকা খরচ হত, আমাদের দিতে হত, কিন্তু ভোগ করত তারা। পাকিস্তানের কিন্তু ছিল মরুভূমি। আমাদের অর্থ নিয়ে তারা মরুভূমিতে ফুল ফুটিয়েছিল, আর আমাদের তারা মরুভূমিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম-আন্দোলন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের এই বৈষম্যনীতির অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের শেষ সৈন্য বিতাড়ন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে, ওয়ারলেসের মাধ্যমে এই ঘোষণা কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন। ওয়ারলেসের এই বার্তার কথা পাকিস্তান জানার পর তাঁকে ৩২ নম্বর থেকে ধরে নিয়ে গেল। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলো, তাঁকে ফাঁসি দেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সহযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মিত্র বাহিনীর সহযোগিতা পেলাম। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর কাছে ৯৬ হাজার পাকিস্তানী সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। আন্তর্জাতিক চাপে ইয়াহিয়ার পতন হলো, ভুট্টো রাষ্ট্রপতি হলেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তি পেলেন। ১০ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে এলেন। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তিনি আমাদের সংবিধান দিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মিত্রবাহিনী বাংলাদেশ ছেড়ে গেল। পৃথিবীর কোন দেশে মিত্রবাহিনী ফেরত যাওয়ার নজির নেই। বাংলাদেশ একমাত্র ব্যতিক্রম। এটা সম্ভব হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন স্বাধীনচেতা নেতৃত্ব এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মতো স্বাধীনচেতা নেতৃত্বের কারণে। ৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন থেকেই জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭০ সালের নির্বাচন নিয়েও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু জানতেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী বাঙালীর হাতে ক্ষমতা দেবে না, পরবর্তীতে যুদ্ধ অনিবার্য। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু আগে থেকেই যুদ্ধের সময় অস্ত্র কোথায় থেকে আসবে, ট্রেনিং কে দেবে, শরণার্থীদের আশ্রয় কে দেবে, দেশের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা কেমন হবে তা আগে থেকেই ঠিক করে রেখে গিয়েছিলেন। আন্দোলনকে পাকিস্তানীরা যাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করতে না পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ২৫ মার্চ আক্রান্ত হওয়ার পরই বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বাঙালী জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধ করে এদেশকে স্বাধীন করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশগঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১২৬টি দেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি এনেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র থেমে ছিল না। একে একে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়। ব্যাংক লুট করা হয়, পাটের গুদামে আগুন দেয়া হয়। ষড়যন্ত্রকারীরা এ জন্য হাত করে আমাদের কিছু লোককেও। রাজাকার-আলবদরদের সঙ্গে সর্বহারা কিছু কমিউনিস্টও যেন একাকার হয়ে গেল। স্বাধীনতাবিরোধী এবং পাকিস্তানকে সমর্থনকারী দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ ষড়যন্ত্রের কারণেই বাঙালীর জীবনে ১৫ আগস্ট ঘটেছিল। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাঙালীকে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর নেতৃত্ব-নির্দেশনায় বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পর পর বঙ্গবন্ধু দেশ গঠনে মনোনিবেশ করেছিলেন, কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাঁকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে পরাজিত শক্তি বাঙালী জাতিকে নিঃশেষ করে ফেলার চেষ্টা চালায়। এরপর ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর যে অবদান তা মুছে ফেলা হয়েছিল, স্বাধীনতাযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পারেনি। কারণ সত্যকে মিথ্যা দিয়ে কখনও ঢেকে রাখা যায় না। ৭৫ পরবর্তী ২১ বছর স্বাধীনতাবিরোধীরা সরাসরি বা সরাসরি নয়, এভাবে ক্ষমতায় ছিল। তখন দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়। ঋণখেলাপী সংস্কৃতির মাধ্যমে একটি এলিট শ্রেণী তৈরি করে অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে। তোষামোদী, খোশামোদী, চাটুকারের দল সৃষ্টি করা হয়েছিল। বাকশাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরও নানা ষড়যন্ত্র চলেছে। বাঙালীর বিজয় তারা মেনে নিতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হলেও একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধী এবং মুক্তিযুদ্ধে যেসব দেশ পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল তাদেরও ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই বাঙালী জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে এক প্লাটফরমে নিয়ে এসে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। অনেকে তাকে বাকশাল বলতেন। এর মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলেছিলেন। ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে ১৯টি জেলার পরিবর্তে সকল মহকুমাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জেলা গবর্নর পদও সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন, ধাপে ধাপে যখন দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই বাঙালীর জীবনে নেমে আসে ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যাতে ভবিষ্যতে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য শিশু রাসেলসহ সবাইকে হত্যা করা হয়। মাত্র ১৫ দিন আগে আমরা দু’বোন বিদেশে যাওয়ায় আমরা প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৬টি বছর আমাদের দেশে আসতে দেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, মার্শাল অর্ডিন্যান্স দিয়ে এবং প্রতিরাতে কারফিউ দিয়ে যারা দেশ চালায় সেখানে গণতান্ত্রিক ধারা থাকে কীভাবে? সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ১৯টি ক্যুর মাধ্যমে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার ও সৈন্যকে হত্যা করা হয়। প্রায় ১০ বছর ধরে কারফিউ দিয়ে দেশ চালিয়েছে তারা। দেশের মানুষের ভোটের ও স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। দীর্ঘ ২১টি বছর ধরে তারা এভাবে দেশ চালিয়েছে। দেশের কোন উন্নয়ন তারা করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। জনগণ তখন সত্যিকারের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করে। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করেছে বলেই দেশ এখন অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এদেশের যা কিছু অর্জন তা সবই এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। তাই সারাদেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই যে দেশের মানুষের কল্যাণ ও দেশের উন্নতি করতে পারে তা আজ প্রমাণিত হয়েছে। এটাও প্রমাণিত হয়েছে, ক্ষমতা ছাড়া অনেকের (বিএনপি-জামায়াত) অস্তিত্বও টিকে থাকে না। দেশকে আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক পথকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
×