ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শত্রু মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলাম

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২৮ মার্চ ২০১৯

শত্রু মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলাম

উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সৃষ্টির সূচনা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। এই দিনটিকে সামনে রেখে দীর্ঘ নয় মাস ইতিহাসের পাতা বাঙালীর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। এই সময়ে বাংলাদেশের লাল-সবুজের স্বাধীন পতাকা ওড়ানো হয়। বাংলার দামাল ছেলেরা দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে ট্যাঙ্ককের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। পোড়া লাশের গন্ধ ও মায়ের কান্না সহ্য করতে না পেরে এই দেশের বীর সন্তানরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পরেও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। বরং বাংলার জনগণের ওপর আরও বেশি অত্যাচার শুরু করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালীর ওপর ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর নৃশংস আক্রমণ চালায়। বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম-শোষণ-বঞ্চনার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শব্দ দু’টি এক ও অভিন্ন। একজন ছাত্রনেতা মুজিব থেকে নানা সংগ্রাম আর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি হয়েছেন জাতির পিতা। বাঙালীর মহান ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর নির্বাচন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে লড়েছেন তিনি। এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঙালীর স্বাধীনতার মূলভিত্তি ৬ দফার। এই ৬ দফার মূলভিত্তির উপর দাঁড়িয়েই ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনে জয়লাভ এবং ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। এটা ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। আসলে প্রকৃতিগতভাবেই গড়ে ওঠা প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার তথা স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা ও অধিকার হতে বঞ্চিত হওয়ার কারণে মানুষের ভেতরে নানা রকম টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়ে অস্থিরতার ভাব পরিলক্ষিত হয়। এভাবে অধিকার বঞ্চিত মানুষ হতাশ হতে হতে কোন এক সময় তা বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে পড়ে। যেমন ব্রিটিশ বেনিয়ারা ভারত উপমহাদেশকে নানা কৌশলে ও বাণিজ্যের অজুহাতে গ্রাস করে এ দেশবাসীকে জিম্মি করে অত্যাচার-অবিচার-নির্যাতন-নিপীড়ন করে এদেশের সম্পদ লুট ও অধিকার ছিনিয়ে নেয়। এদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দেয়ার উপক্রম হলে ভারতবাসী তার হৃত স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফিরে পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর জীবনমরণ আন্দোলন ও সংগ্রাম করে। অবশেষে এ দেশ থেকে তাদের বিতাড়িত করে। অত:পর. ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের দুটি অংশ পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। জন্মের পর হতেই পশ্চিম পাকিস্তানের নীতি বর্জিত প্রভাবশালীরা নানাভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে শোষিত ও মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে থাকে। জনসংখ্যায় পূর্ব পাকিস্তান সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এদেশের বাঙালী জাতিকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে করতে কোণঠাসা করে ফেলার কারণে বাঙালী জাতির যখন অস্তিত্ব হারানোর উপক্রম হয় তখন তারা তার অধিকার ও বাক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার জন্য মারমুখী আন্দোলন ও সংগ্রাম শুরু করে। এভাবে ’৫২, ৫৪, ৬৯, ৭০-এর আন্দোলন সংগ্রাম ও এক সাগর তাজা রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু তার জীবনবাজি রেখে আমাদের জন্য স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জনের ভিত রচনা করেন। তার নেতৃত্বে বাঙালী স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে। বাংলাদেশের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার আন্দোলন ও সংগ্রাম অর্জনের এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল, বাঙালী জাতি এবং বাঙালীদের মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠা করে সুষম বণ্টনের মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নের লক্ষ্যে একটি সমৃদ্ধিশালী জাতি হিসেবে শক্তিশালী একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা। যেখানে মানুষে মানুষে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্য ও ভালবাসার সেতু বন্ধনের মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হবে। যেখানে সুখে শান্তিতে থাকার একটি আদর্শ নির্মল আবাসভূমি সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। ১৯৭০ সালে নির্বাচনী রায়ে আমাদের সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ হলেও দুর্বৃত্ত পরায়ন ইয়াহিয়া বাঙালীর নিশ্চিত প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করে নির্মম অত্যাচার, অবিচার, জেল-জুলুমের ভীতি চালিয়ে বাঙালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার এক মহাষড়যন্ত্র শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে ২৫ মার্চ কালরাতে দুর্বৃত্ত ইয়াহিয়া খানের বর্বর বাহিনী হায়নার মতো অতর্কিত হামলা চালিয়ে হাজার হাজার নিরাপরাধ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে। বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে আটক করে বাঙালীকে নেতৃত্বহীন করার এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র করে ঘাতকরা। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের কথা আগেই জানতেন। তাই তো তিনি ৭ ই মার্চের ভাষণে সকল ধরনের প্রস্ততির নির্দেশনা দিয়ে রাখেন। ২৫ মার্চ ১২:৩০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানম-ি ৩২ নং বাড়ি থেকে ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জাতির পিতার ইংরেজীতে স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটির বাংলা অনুবাদ হলোÑ ‘এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন, বাংলাদেশের জনগণ তোমরা যে যেখানে আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি বাংলার যে ভাষণটি দিয়েছিলেন সেটি হলো ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিয়ার ঘঁাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছি।’ তার পাকিস্তানি বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। এর আগে জাতির পিতা ৭ মার্চে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান) দাঁড়িয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই ভাষণের মাধ্যমে জাতি যে কোন সময় স্বাধীনতার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। আর সেটি শুরু হলো ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। ৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। সহযোদ্ধাদের মতে আমি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। আমি বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম ও জনগণের জন্য নিবেদিত এবং সাংগঠনিক দক্ষতার আকর্ষণে তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ১৯৬৬ থেকে একাত্ম হই। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এবং আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য চাকরি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করি। অতঃপর মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য ভারতে ট্রেনিং গ্রহণ করি। এক পর্যায়ে যুদ্ধকালে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভারতের হাসপাতালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সহৃদয় সহায়তায় চিকিৎসায় বেঁচে যাই। আমার নিজের আত্মত্যাগ, দুঃখ-কষ্ট থাকা সত্ত্বেও দেশ স্বাধীনের পর আমাদের প্রাণপ্রিয় ও ভালবাসার প্রতীক বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতার স্থপতিকে কাছে পেয়ে আমরা স্বাধীনতার প্রকৃত ও সত্যিকার স্বাদ উপভোগ করতে পারায়, তখন সকলেই উৎফুল্ল-আনন্দিত ছিলাম। আমরা সেদিন পরিবার-পরিজনের মায়া-মমতা ত্যাগ করে নিজের সংগ্রামী যুদ্ধ জীবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও মাতৃভূমি মুক্ত করার অদম্য সাহসে দেশ স্বাধীন করতে অস্ত্র ধরেছিলাম। স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও কাক্সিক্ষত সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি রাষ্ট্র গড়ে তোলতে পারিনি। যে চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও সংগ্রাম দানা বেঁধে উঠেছিল এবং ১৯৭১ সালে যেভাবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল আজ কেন জানি তার খুব অভাব। অনেক ক্ষেত্রে নিজ আদর্শ এবং নৈতিকতার ক্ষেত্রেও অমিল। নিজেদের মধ্যে হানাহানি, মারামারি, কখনও কখনও খুন-খারাবি, সামাজিক অবক্ষয় যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে শান্তিতে বসবাস যেন দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। এমন দেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেননি। দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যা বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে করেছিলেন। দেশের আইনশৃঙ্খলাসহ সামাজিক পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে, তথাপি আমাদের নিরাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের দ্বার প্রান্তে আমরা। দেশ অনেক এগিয়েছে তা সকলেই জানি। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখলাম, বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় ১৫৬টি দেশের ১২৫তম। অবস্থান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও আমার কাছে এটি প্রত্যাশার নয়। বাংলাদেশে প্রচুর সম্পদ আছে কিন্তু দুর্নীতির কারণে আমরা তা ব্যবহার করতে পারছি না। দেশে এখনও অনেক ভাল সমাজদরদী মানুষ আছে। দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত কিন্তু সুযোগের অভাবে তারা পেছনে পড়ে নিষ্ক্রিয় থাকে। তাদের সামনে আসার সুযোগ করে দিতে হবে। নানা রকম দুর্বৃত্ত পরায়ন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতা বিরোধীদের দল ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হচ্ছে, তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তারা আমাদের সামনে এগোতে সব সময় বাধা। এই বাধা দূর করেই এগিয়ে যেতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মকে ভবিষ্যতের উপযুক্ত সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার গুরুদায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে এবং এখনই। যাত্রাপথ অনেক কণ্টকাকীর্ণ হলেও অহিংস শান্তিপূর্ণ সুশৃঙ্খল আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের উন্নয়নকল্পে গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জাতিগত ভেদাভেদ দূর করা ও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিহত করার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেয়া জরুরী সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জরুরী হলোÑ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের ছোট একটি দেশে ১৭-১৮ কোটি লোকের বাস তা বিশ্বের অনেক দেশ বিশ্বাসই করতে চায় না। জনসংখ্যা একদিকে সম্পদ হলেও অন্যদিকে জনসংখ্যার আধিক্য সুনাগরিক হিসাবে শান্তিপূর্ণ বসবাসের জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমান অবস্থায় যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এদেশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বেকার সমস্যা এখন সারা বিশ্বের সমস্যা। কিন্তু আমাদেরটা আরও জটিল। প্রধানমন্ত্রী বেকারত্ব দূর করতে নানা সময় নানা আশার বাণী শুনিয়েছেন, তার বাস্তবায়ন এখন জরুরী। ভবিষ্যত প্রজন্মের বেকার সমস্যা ও আর্থিক অনটনের কারণে উপায়ান্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে মারমুখী হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, নিরাপত্তা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বাঁচানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই সময় থাকতেই এ সকল বিষয় সুবিবেচনা করে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরী। পরিশেষে বলবো, আজ ৪৮টি বছর কেটে গেলেও ২৬ মার্চ দিনটি বাঙালীর বুকে এখনও ভীতি জাগায়। ওই দিনটির বিভীষিকাময় ঘটনাগুলো জাতি ভুলতে পারে না। ভুলতে পাবে না কোন দিন। কারণ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রক্তমাখা স্মৃতি। লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক পরিচালক বিআরটিএ
×