ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বার্কলের জোড়া গোলে বড় জয় ইংল্যান্ডের

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২৭ মার্চ ২০১৯

বার্কলের জোড়া গোলে বড় জয় ইংল্যান্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচের মাত্র ৩০ মিনিট না পেরোতেই পর্তুগালকে বড় একটি ধাক্কা হজম করতে হয়েছে। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় মাঠের বাইরে চলে যান সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। এর আগেই মাত্র ৭ মিনিটে গোল হজম করে সার্বিয়ার কাছে পিছিয়ে পড়েছিল। তারপর এলো রোনাল্ডোর মাঠ থেকে বাইরে চলে যাওয়ার বড় আঘাত। তবে এরপরও ইউরো বাছাইয়ে শেষ পর্যন্ত সার্বিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে পর্তুগাল। তবে একই গ্রুপের ইউক্রেন ২-১ গোলে লুক্সেমবার্গকে হারিয়ে শীর্ষে উঠেছে। একই দিনে মন্টিনিগ্রোর বিপক্ষে শুরুতে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়লেও রস বার্কলের জোড়া গোলে ৫-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ‘এ’ গ্রুপের অপর ম্যাচে বুলগেরিয়া ১-১ গোলে কসোভোর সঙ্গে ড্র করে। ‘এইচ’ গ্রুপে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আইসল্যান্ডকে। এছাড়া একই গ্রুপে একই ব্যবধানে তুরস্ক উড়িয়ে দিয়েছে মলদোভাকে। আর আলবেনিয়া প্রথম জয় পেয়েছে এন্ডোরার বিপক্ষে ৩-০ গোলে। ইউরো বাছাইয়ের ‘বি’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচে পর্তুগাল গোলশূন্য ড্র করেছিল ইউক্রেনের বিপক্ষে। দ্বিতীয় ম্যাচে লিসবনে নিজেদের মাঠে তারা মুখোমুখি হয় শক্তিশালী সার্বিয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু ম্যাচের ৭ মিনিটেই গোল খেয়ে বসে পর্তুগীজরা। ডুসান টাডিচ পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে নেন সার্বিয়াকে (১-০)। এরপর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না। এর মধ্যে ৩০ মিনিটের সময় আরেকটি বড় আঘাত আসে পর্তুগীজদের শিবিরে। আক্রমণের অন্যতম চালিকাশক্তি ফরোয়ার্ড রোনাল্ডো বল নিয়ে ছুটতে ছুটতেই মাটিতে পড়ে যান। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় শেষ পর্যন্ত তাকে মাঠই ছাড়তে হয়। দুশ্চিন্তাটা বাড়লেও সেটিকে স্বস্তির পর্যায়ে আনেন ড্যানিলো পেরেইরা। ৪২ মিনিটে তিনি ২৫ গজ দূর থেকে একটি তীব্র শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল (১-১)। গতবার প্রথমবারের মতো ইউরো শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল। কিন্তু এবার ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা যেন শুরু থেকেই ছন্দহীন। ইউক্রেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর তাই সার্বিয়ার বিপক্ষে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল তারা। কিন্তু সমতায় ফিরে আসতেই যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাদের। সেটি সম্ভব হলেও দ্বিতীয়ার্ধেও আর গোল পায়নি দলটি। অবশ্য এ্যান্টোনিও রুকাভিনার হাতে বল লাগার পর রেফারি বাঁশি বাজালে পর্তুগীজরা ধরেই নিয়েছিল পেনাল্টি পেয়েছে তারা। বক্সের কাছাকাছি থেকে আন্দ্রে সিলভার হেড তার হাতে লেগেছিল। কিন্তু সেটিকে আর পেনাল্টি দেননি রেফারি, ভিএআর প্রযুক্তিতে তা নিশ্চিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। একই গ্রুপে ইউক্রেন ২-১ গোলে লুক্সেমবার্গকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন শীর্ষে। পর্তুগাল ২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় আর লুক্সেমবার্গ প্রথম ম্যাচে লিথুয়ানিয়াকে হারানোয় এখন দ্বিতীয় অবস্থানে ৩ পয়েন্ট নিয়ে। ‘এ’ গ্রুপে ইংল্যান্ডও শুরুতেই পড়ে গিয়েছিল বিপাকে। মন্টিনিগ্রোর কাছে ম্যাচের ১৭ মিনিটেই হজম করেছিল গোল। ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট এদিন শুরুতে নামিয়েছিলেন ডেক্লান রাইস ও কালাম হাডসনকে। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারকো ভেসোভিচ বাঁকানো শটে জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করে মন্টিনিগ্রোকে এগিয়ে নেন ১-০ ব্যবধানে। তবে সফরকারী ইংল্যান্ড এরপরই নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। আর শেষ পর্যন্ত যখন মাঠ ছেড়েছে তখন ৫-১ গোলের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে। এ কারণে চলতি ইউরো বাছাইয়ে সবচেয়ে ভাল অবস্থান নিয়েই শীর্ষস্থানে উঠে গেছে দুই ম্যাচ পর। ৩০ মিনিটে মাইকেল কিন তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করেন। বার্কলের ফ্রি কিক থেকে তীব্র হেডে এভারটনের এ ডিফেন্ডার গোল করেন (১-১)। এরপর বার্কলে নিজেই গোল করেন আরেকটি। ৩৯ মিনিটে তার গোলে এগিয়ে যায় ইংলিশরা (২-১)। দ্বিতীয়ার্ধে আর মন্টিনিগ্রোকে সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৫৯ মিনিটে রহিম স্টার্লিংয়ের দেয়া বল থেকে আবার লক্ষ্যভেদ করেন এ তরুণ (৩-১)। তারপর যেন আরও দুরন্ত হয়ে ওঠে ইংলিশরা। ৭১ মিনিটে হ্যারি কেন গোল করলে ব্যবধান আরও বাড়ে (৪-১)। ৮১ মিনিটে রহিম নিজেই আরেকটি গোল করে ইংলিশদের বড় জয় নিশ্চিত করেন (৫-১)। প্রথম ম্যাচেও ইংল্যান্ড ৫-০ গোলে চেক প্রজাতন্ত্রকে হারিয়েছিল ইংলিশরা। এই গ্রুপে বুলগেরিয়া মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে। প্রথম ম্যাচের পর এবারও তারা ১-১ গোলে ড্র করে কসোভোর সঙ্গে। ‘এইচ’ গ্রুপে ফরাসীদের শক্তির সঙ্গে পেরে ওঠেনি আইসল্যান্ড। ৪-০ গোলে তারা বিধ্বস্ত করেছে দ্বীপ দেশটিকে। অলিভার জিরুড ৬৮ মিনিটে দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করে ফ্রান্সের পক্ষে ফুটবল ইতিহাসের তৃতীয় সর্বাধিক গোলের মালিক হয়েছেন। ৩২ বছর বয়সী এ তারকার এখন ৮৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে মোট গোলসংখ্যা ৩৫। তার পেছনে এখন ডেভিড ট্রেজেগুয়েট (৩৪ গোল)। ওপরে আছেন মিশেল প্লাতিনি ৪১ ও থিয়েরি অঁরি ৫১ গোল নিয়ে। এর আগেই ফ্রান্সের হয়ে গোলের উৎসব শুরু করেছিলেন স্যামুয়েল উমতিতি। তিনি মাত্র ১২ মিনিটেই প্রথম গোলটি এনে দেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। তৃতীয় গোলটি এসেছে তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপের কাছ থেকে। এ্যান্টোনি গ্রিজম্যানের পাস থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি ম্যাচের ৭৮ মিনিটে (৩-০)। ৮৪ মিনিটে এই গ্রিজম্যানই ফরাসীদের পক্ষে আরেকটি গোল করেন (৪-০)। ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফরাসীরা শীর্ষে আছে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকার কারণে। তুরস্কও একইদিনে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে মলদোভাকে। কিন্তু গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় ৬ পয়েন্ট নিয়েও দুইয়ে তারা। এই গ্রুপে আরেকটি ম্যাচে আলবেনিয়া ৩-০ গোলে এ্যান্ডোরাকে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম জয় পায়। প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের কাছে তারা ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল।
×