ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন্ধ হোক হাহাকার

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২১ মার্চ ২০১৯

বন্ধ হোক হাহাকার

ইংরেজীতে প্রবীণদের- ঝবহরড়ৎ ঈরঃরুবহ বলে, ০১ অক্টোবর ‘বিশ্ব প্রবীণ দিবস’ পালিত হলেও আমাদের প্রবীণগণ ¯্রফে ‘বুড়া-বুড়ি’! নচিকেতা চক্রবর্তীর কটাক্ষ: ‘...স্বামী-স্ত্রী আর এ্যালসেশিয়ান- জায়গা বড়ই কম আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।’ ২০৫০এ বাংলাদেশে ষাট বছরের বেশি বয়সী মানুষ হবে চার কোটি। এদের অনেকেই মহিলা; জননীÑ ‘যার পদতলে স্বর্গোদ্যান।’ কিন্তু তারাই পারিবারিক পরিবেশে নিগৃহীত, অবহেলিত, নির্যাতিত: ‘সন্তান পরিত্যক্তা’! অথচ সন্তানের জন্য মায়ের কষ্টের তুলনা হয় না- ‘আধ পিঠ খাইলো মায়ের গুয়ে আর মুতে আধ পিঠ খাইলো দারুণ মাঘ মাস্যা শীতে। বিদেশ বিবাসে যদি পুত্র মারা যায় দেশে না জানিবার আগে জানে কেবল মায়’ (মৈমনসিংহ গীতিকা: ‘মহুয়া’)। এখন পিতামাতা অনেক ভাবেই উপেক্ষিতÑ যেন ‘কঠিন ঝামেলা’। পরিবারে কারও কারও স্বার্থ-ভাবনায়, অসুস্থ-অক্ষম জননীদের অবস্থা সবচেয়ে বিপন্ন। অথচ তারাই জীবন-যৌবনের সর্বস্ব সন্তানের জন্য লুটিয়ে দিয়েও নিদানেরকালে বড়ই একা, অপাঙক্তেয়। প্রণীত হয়েছে ‘পিতা মাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩’। আইনে, ‘ভরণ-পোষণ অর্থ খাওয়া-দাওয়া, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বসবাসের সুবিধা এবং সঙ্গ প্রদান’। আইনের ০৩ নম্বর ধারার সারসংক্ষেপ: (১) সন্তানকে পিতামাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করতে হবে। (২) একাধিক সন্তানের ক্ষেত্রে, সন্তানগণ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে পিতামাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করবে। (৩) পিতামাতার ভরণ-পোষণ নিশ্চিতকল্পে সন্তানের একইস্থানে, একসঙ্গে বসবাস নিশ্চিত করতে হবে। ‘পিতামাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩’এর ধারা-উপধারা সন্তান কর্তৃক লঙ্ঘন, অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য অনুর্ধ এক লাখ টাকা অর্থদ-ে দ-িত, অনাদায়ে তিন মাস কারাদ-ে দ-িত হবে। পিতামাতার ভরণ-পোষণে বাধাদান/অসহযোগিতার জন্য সন্তানের স্ত্রী/স্বামী/নিকট আত্মীয়ও উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনে সহায়তাকারী হিসেবে গণ্য এবং আইনে বর্ণিত দ-ে দ-িত হবে। তবুও কাক্সিক্ষত পরিবর্তন না হবার কারণ, অপরাধটি আমলযোগ্য (পড়মহরুধনষব), জামিনযোগ্য (নধরষধনষব) ও আপোসযোগ্য (পড়সঢ়ড়ঁহফধনষব)। কাজেই প্রত্যাশা, আইনের কঠোরতম প্রয়োগের মাধ্যমে ‘সন্তান পরিত্যক্তা জননী’র হাহাকার বন্ধ হোক। কাপাসিয়া ডিগ্রী কলেজ, গাজীপুর থেকে
×