ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ই-কমার্স কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করেছে

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২০ মার্চ ২০১৯

ই-কমার্স কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করেছে

ফিরোজ মান্না ॥ ই-কমার্স দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করেছে। ই-কমার্স বা ডিজিটাল শিল্পকে আরও ভাল করে গড়ে তুলতে চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে ইন্টারনেট, লেনদেনের ব্যবস্থা, ডেলিভারি সুবিধা ও বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই চারটি বিষয় সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বেগবান হবে। সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্সে ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে বিশ্বাস রাখতে হবে। পণ্যটি আসবে, যা অর্ডার করা হয়েছে তা ঠিক আছে। এছাড়া পণ্যের মানও ঠিক রাখতে হবে। বর্তমানে আমরা যে ব্যবসার কথাই চিন্তা করি না কেন, প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে ওই ব্যবসার উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। বর্তমানে প্রায় দুই হাজারের মতো উদ্যোক্তা ই-কমার্স নিয়ে কাজ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াকেও ই-কমার্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন শুধু ছবি শেয়ার করা কিংবা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না সোশ্যাল মিডিয়াকে, এটা মানুষের কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক যে কর্মকাণ্ড, সেটাকেও কিন্তু বেগবান করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন মানুষ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন। এটা ইতিবাচক। সোশ্যাল মিডিয়া আমরা কিভাবে ব্যবহার করব, সেটা নির্ভর করছে ব্যবহারকারীর ওপর। আমরা ইচ্ছে করলে ভাল কাজেও ব্যবহার করতে পারি, আবার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যিক কাজে বা সমাজবিরোধী কাজেও ব্যবহার করতে পারি। কিংবা অন্য কাউকে ক্ষতি করতেও সেটা ব্যবহার করা যায়। তবে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইতিবাচক হিসেবেই দেশের বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করছেন। নিজেদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী হিসেবে মনে করবেন না, আমাদের স্বপ্ন বড় থাকতে হবে। কিভাবে ব্যবসাকে আরও প্রসারিত করা যায় সেই চিন্তা থাকতে হবে। আপনাদের ই-কমার্স সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার দেবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটেছে। ই-গবর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ক্ষেত্রে দেশ উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে গেছে। দেশ এখন বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে অনেক ওপরে উঠে এসেছে। ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১১৫তম। এই হিসেবে দেশ এখন র‌্যাংকিংয়ের দিক থেকে ৩৫ ধাপ এগিয়ে রয়েছে। এই অগ্রগতির অংশীদার বর্তমান সরকার ও দেশের জনগণ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে উঠছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশ পুরোপুরি ডিজিটাল হবে এমন ভিশন নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের দোরগোড়ায় সরকারের সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেয়া হবে। যাতে একজন নাগরিকও এই সেবা থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত কানেক্টিভি তৈরি করা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ প্রায় শেষ। এই কাজটি শেষ হলে শহর ও গ্রামের সঙ্গে কোন পার্থক্য থাকবে না। দেশের সব মানুষ ইন্টারনেটে সমান সুযোগ ভোগ করবেন। দেশের এই অগ্রগতি আন্তর্জাতিক পরিম-লে প্রসংশা পেয়েছে। দেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক বিশ্বে অনেক ওপরে উঠেছে। দেশের এমন অবস্থান ধরে রাখতে ই-গবর্নমেন্ট বা ডিজিটাল গবর্নমেন্টস তৈরির জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। এটুআই শুরু থেকেই ই-গবর্নমেন্টস কম্পোনেন্ট অনলাইন সার্ভিস চালু করেছে। অনলাইন সূচককে মাথায় রেখে আইসিটি টুলস ব্যবহার করে এবং জনগণের হাতের কাছে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এ কারণে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ই-গবর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট র‌্যাংকিংয়ে তিনবার এগিয়ে গেছে। এর পেছনে যারা কাজ করেছেন, তারা হলেন এটুআই, ব্যানবেইস, বিটিআরসি, পরিসংখ্যান ব্যুরো, আইসিটি বিভাগ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো, ইউআইএস, ইউএনডেসাসহ আন্তর্জাতিক মানের সব প্রতিষ্ঠানের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। দেশের মানুষ আজ তার সুফল পাচ্ছেন। অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন আইটিইউ পরিচালিত জরিপে ১৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৩৫তম। ২০১১ সালে যা ছিল ১৩৯তম। তবে এই র‌্যাংকিংয়ে ভুটান (১১৮), মালদ্বীপ (৭৩), মিয়ানমারের (১৩৪) অবস্থান বাংলাদেশেরও ওপরে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ কয়েকটি দেশকে পেছনে ফেলে র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও দক্ষতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আগামীতে এই সূচক আরও অনেক ওপরে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।
×