ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এমন ঘটনায় মস্তিষ্ক কাজ করে না ॥ শ্রীনিবাস

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১৬ মার্চ ২০১৯

 এমন ঘটনায় মস্তিষ্ক কাজ করে না ॥ শ্রীনিবাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে যখন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা নামাজ পড়ার জন্য পৌঁছেন সে সময় দলের সঙ্গেই ছিলেন দলের পারফর্মেন্স বিশ্লেষক শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ গজ দূরে ছিল বাংলাদেশের টিম বাস। সেখান থেকেই প্রথমে বন্দুকের গুলির শব্দ শুনতে পান খেলোয়াড়রা। কয়েক মুহূর্ত পর তারা একজন নারীকে তাদের সামনে পড়ে যেতে দেখেন। কয়েকজন খেলোয়াড় তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এরপরই দেখতে পান কয়েকজন ভীত সন্ত্রন্ত হয়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছেন, কেউ কেউ ছিলেন রক্তাক্ত। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন শ্রীনিবাস। তিনি জানান, এ ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতিতে আতঙ্কে মস্তিষ্ক কাজ করে না। সেটিই ঘটেছিল ক্রিকেটারদের সঙ্গেও। মসজিদে উপুর্যপরি গুলি চলছে এমনটা জেনে বাসের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে বসে ছিলেন ক্রিকেটাররা। সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বাংলাদেশ দলের পারফর্মেন্স এ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস বলেন, ‘আমরা প্রথমে তেমন কিছু বুঝতে পারিনি। এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে ভয়ের সঙ্গে আপনার মস্তিষ্ক কোন কাজ করে না। আমাদের সবার ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটাই হয়েছিল।’ মুম্বাইয়ের সফটওয়্যার প্রকৌশলী শ্রীনিবাসও বাসে বসে থাকার সময় বুঝতেই পারেননি যে এটা সন্ত্রাসী হামলা, ‘মসজিদ থেকে কয়েক মিটার দূরে ছিলাম আমরা এবং হঠাৎ করে বন্দুকের গুলির আওয়াজ শুনতে পেলাম। খেলোয়াড়রা তো বটেই, আমিও বুঝতে পারিনি আসলে কী ঘটছিল। হঠাৎ দেখলাম একজন নারী রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। আমরা ভেবেছি হয়তো সে অসুস্থ। ছেলেদের কয়েকজন বাস থেকে নেমে তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিল।’ তবে এর কিছুক্ষণ পরেই পুরো ঘটনাটি বুঝে যায় বাসে থাকা সবাই। এ বিষয়ে শ্রীনিবাস বলেন, ‘আমরা কয়েক মুহূর্ত পর বুঝতে পারলাম যা ভাবছি তারচেয়েও বড় ঘটনা ঘটে গেছে। জীবন বাঁচাতে কয়েকজনকে দৌড়াতে দেখছিলাম এবং সব জায়গা ছিল রক্তে ভেজা। আচমকা আমাদের সবাইকে বাসের মেঝেতে শুয়ে পড়তে বলা হলো। আমি জানি না কতক্ষণ আমরা ওভাবে শুয়ে ছিলাম।’ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই পুলিশ আসে এবং টিম বাসের পেছনের দরজা দিয়ে খেলোয়াড়রা বের হন। হাগলি পার্ক দিয়ে পৌঁছান মাঠে। শ্রীনিবাস আরও জানান, ‘আমরা খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফরা এ ঘটনায় হতভম্ভ হয়ে পড়েছিলাম। আমরা কেউই বুঝতে পারছিলাম না কি করা দরকার। আমরা সবাই দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি। খেলোয়াড়রা বাংলাদেশে ফিরে যাবে, আমিও ভারতে ফেরার টিকেটের অপেক্ষা করছি।’
×