ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টেস্ট ক্রিকেটে এমসিসির প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১৬ মার্চ ২০১৯

 টেস্ট ক্রিকেটে এমসিসির প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এমসিসি বা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব। আপাতদৃষ্টে এটি একটি ক্রিকেট ক্লাব হলেও খেলাটির ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জাড়িয়ে। রীতিমতো সংস্থায় পরিণত হওয়া বৃটিশ ক্লাবটি ক্রিকেটের আইন প্রণেতা হিসেবে পরিচিত। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দাপটে অবশ্য এর গুরুত্ব এখন অনেকটাই কমে এসেছে। সাদা পোশাকের টেস্ট ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করতে আইসিসি বিভিন্ন রকমের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। সেখানে আরও কিছু নতুনত্ব চাইছে এমসিসি। তার মধ্যে রয়েছে ফ্রি হিট, শট ক্লক এবং আন্তর্জাতিক-ঘরোয়া ক্রিকেটে একই মানের ও একই ব্রান্ডের বলের ব্যবহার। এমসিসির এমন প্রস্তাবে যারপরনাই ক্ষুব্ধ ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কার সংস্থাটিকে এক হাত নিয়েছেন। গাভাস্কার বলেন, ‘এখন তো আমরা শুনছি যে, এমসিসি বলের মান ঠিক করে দেয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। এর পরে তো উইকেট কেমন হবে অথবা ব্যাটের মাপ কি হওয়া উচিত সে সবও ওরা ঠিক করে দিতে পারে। ক্রিকেটের সবকিছুই ওরা একই মাপকাঠিতে এনে ফেলুক না!’ এরপরই তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে যোগ করেন, ‘বিদেশের মাঠে গিয়ে জেতাটা সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ থাকে ক্রিকেটারদের জন্য। কারণ অন্য রকম পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবেলা করে জিততে হয়। সব কিছু সমমানের হয়ে গেলে সে চ্যালেঞ্জটার কী হবে?’ তিনি বলেন, এমসিসি ওয়ার্ল্ড কমিটি অনেকটা মুম্বাইয়ের ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়া, কলকাতার ন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাব মতো। যারা সবসময় বলে, আমাদের কথা শুনতে হবে। এমসিসিও সে রকম। ওরা বলছে, আইসিসি কমিটির চেয়েও ওদের কমিটির কথা বেশি শুনতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকে আবার এমসিসিকে গুরুত্বও দেয়।’ ভারতে ক্রিকেট খেলা হয় এসজি বলে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডে ডিউক, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা খেলে কোকাবুরা বলে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটাররাও বিভিন্ন বলে খেলার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিশেষ করে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি এবং অফস্পিনার আর অশ্বিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাদের বেশি পছন্দ ডিউক বল। গাভাস্কার বলেন, ‘দেশের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে খেলার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে টেস্ট ক্রিকেটের মাধুর্য। সেটাকে প্রাধান্য দিতেই হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি ক্রিকেটের মূল আনন্দ মিশে থাকে বিভিন্ন পরিবেশে ক্রিকেটাররা কেমন খেলছে তার ওপরে। রসিকতার সুরে সানি বলেন, বিভিন্ন দেশের কথা বাদ দিন। এক একটা গলিতেই তো এক এক রকম পরিবেশ। কোন গলিতে বল সোজা মারা যায় না, কারণ সামনে পুলিশ থাকে। কোন গলিতে হয়তো খেলা চলার সময় মাছওয়ালা চলে আসে, যে ঘটনা অন্য গলিতে ঘটে না। টেস্টের জনপ্রিয়তা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আইসিসি এরই মধ্যে ফ্লাডলাইটের আলোয় ডে-নাাইট টেস্টের প্রচলন করেছে। সংস্থাটি এরপরও বিশ্বব্যাপী টি২০ লীগ এবং রঙিন পোশাকের ক্রিকেটের দাপটে টেস্ট নিয়ে চিন্তিত। অথচ গত সপ্তাহেই এক জরিপে এমসিসি জানায়, টেস্ট ক্রিকেট এখনও জনপ্রিয়। যেটিকে আরও চাঙ্গা রাখতে কিছু প্রস্তাব আনে ক্লাবটি। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রঙিন পোশাকের মতো টেস্টেও ‘নো’ বলের জন্য ব্যাটসম্যানকে ‘ফ্রি’ হিট দেয়া, স্লো-ওভার রেট বন্ধ করতে ‘শট ক্লক’ বা ঘড়ি ধরে ওভার নিয়ন্ত্রণ করা এবং ঘরোয়া-আন্তর্জাতিক সর্বত্র একই ধরনের বল এবং পিচের ব্যবহার।
×