ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

প্রেস গ্যালারি থেকে পার্লামেন্ট ফ্লোর

প্রকাশিত: ০৯:০০, ১৬ মার্চ ২০১৯

প্রেস গ্যালারি থেকে পার্লামেন্ট ফ্লোর

তেজগাঁও থেকে শেরেবাংলা নগর- চার দশকেরও বেশি সময় আমার যাতায়াত- ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের স্টাফ করসপন্ডেন্ট হিসেবে এবং গত ৩ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে। বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা। ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে সংসদ ভবনে ঢুকছিলাম। কয়েকজন তরুণ সাংবাদিক বেশির ভাগই বুম হাতে টিভি চ্যানেলের, সামনে এসে দাঁড়াল। তাদের প্রশ্ন ‘ভিন্নরূপে সংসদে যাচ্ছেন, কেমন লাগছে?’ কি উত্তর দেব? তবু একটু মজা করলাম- ‘চার দশক ধরে গ্যালারিতে বসে সংসদের সংবাদ লিখেছি, পত্রিকার মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরেছি। দীর্ঘদিন এমপি-মন্ত্রীদের দেখে দেখে লোভ সামলাতে পারছিলাম না। ওপরে ওঠার জন্য লাফ দিলাম, কিন্তু পড়ে গেলাম নিচে, ফ্লোরে। এখনও বুঝে উঠতে পারছি না আমার সেই স্বপ্নের জগতে পা রাখলাম, না-কি নিচে পড়ে হাত-পা ভাঙল।’ এরই মধ্যে গত ১১ মার্চ একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন সমাপ্ত হলো। একদিন ছাড়া সব ক’টি দিন উপস্থিত ছিলাম। ৭ মার্চ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণ দিবসের সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য এলাকার গল্লাক ডিগ্রী কলেজের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কারণে ঐ দিন সংসদের কার্যপ্রণালীতে অংশ নিতে পারিনি। আমি কলেজের গবর্নিং বডির সভাপতি। দেখলাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের আধিক্য, তাদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মাদ্রাসাগুলোর আধুনিকায়ন করার প্রক্রিয়ায় মেয়েরা মাদ্রাসায় ভর্তি হচ্ছে দলে দলে। নারীরা আজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে। দীর্ঘদিন তাদের অবরোধবাসিনী করে রাখা হয়েছিল। সেই অবরোধের দেয়াল ভেঙ্গে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত থেকে শামসুন্নাহার, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম জাহানারা ইমাম, শেখ হাসিনা, সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের পথ ধরে গ্রামের মেয়েরাও ঘর থেকে বেরিয়ে চারদিকে দৃষ্টি দিতে শুরু করেছে। গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসির গ-ি পেরোতে পারলে হয়ে উঠছে অদম্য অপ্রতিরোধ্য। প্রসঙ্গক্রমে একটি কথা মনে পড়ে গেল। আমার গ্রাম ফরিদগঞ্জের বালিথুবায়। আমরা সতীর্থরা মিলে ‘বালিথুবা ইয়ূথ ক্লাব’ নামে একটি ক্লাব গড়েছিলাম। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ৩২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। খেলাধুলা, সিনেমা দেখা, নাটক মঞ্চস্থ করা, বই পড়া ইত্যাদি তারুণ্যের আবেগের জায়গায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একদিন হাইস্কুল করব বলে পণ করে কালবিলম্ব না করে কাজে হাত দিলাম। ১৯৬৭ সালে এক দোচালা টিনের ঘরে ক্লাস সিক্স চালু করে শুরু করলাম। আমাকে করা হলো প্রধান শিক্ষক (অবৈতনিক)। গ্রামীণ জনগণের আন্তরিকতা ও সহায়তায় ঘরের পরিধি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর এক ক্লাস করে বাড়তে থাকল। কিন্তু মেয়ে স্টুডেন্ট ভর্তি হচ্ছিল না। একমাত্র ছাত্রী আমার ছোট বোন তখন ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলো। তাকে দেখিয়ে বাড়ি বাড়ি (ছাত্রীদের) গেলাম, অভিভাবকদের বিশেষ করে ছাত্রীদের মা’দের বললাম, আপনার মেয়েকে হাইস্কুলে দিন। এসএসসি পাস করতে পারলে বিএ পাস জামাই তো পাবেন, মেয়েটা ভাল থাকবে। এতে খুব কাজ হলো। মায়েরা মেয়েদের স্কুলে দিতে থাকলেন। আজ আমাদের বালিথুবা স্কুলে শতকরা ৭০ জন মেয়ে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও প্রাণচাঞ্চল্য-বেশ কয়েক বছর ধরে বিদ্যুত চলে গেছে ঘরে ঘরে। ঘরে ঘরে টিভি, হাতে হাতে মোবাইল সেট মানুষের মধ্যে যে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তাতে করে গ্রাম শহর হয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা সর্বক্ষেত্রে ছেলেমেয়েরা ইউনিফরম পরে স্কুলে যায়। ছেলেরা তো রীতিমতো কেডন পায়ে জিন্স পরে যাওয়া-আসা করছে। গ্রামের পথে পথে সকাল-বিকেল সুন্দর ইউনিফরম পরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে আসা-যাওয়া সে এক অভাবনীয় দৃশ্য। কখনও-সখনও কোথাও দু’একটি ইভটিজিং-এর ঘটনা যে ঘটছে না তা নয়। তবে গ্রামীণ পরিবেশ এখন শিক্ষার উপযোগী। বিশেষ করে নারী শিক্ষার। তবে গ্রামের হাসপাতালগুলোতে যেমন ডাক্তারের অভাব তেমনি স্কুলে ভাল শিক্ষকের অভাব দেখা যায়। শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ভাল শিক্ষকরা গ্রামের দিকে যেতে চায় না, এমনকি গ্রামের ছেলেও গ্রামে থাকতে চায় না। হাইস্কুল বা কলেজগুলোতে নারী টিচারদের জন্য আসাবিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে ভাল ভাল টিচার গ্রামেও পাওয়া যেত। নারী টিচারদের হাতে স্টুডেন্টরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বেশি। আবেগাপ্লুত হয়ে অনেক কথা বলে ফেললাম। অবশ্য প্রথম দিন সংসদ ভবনে ঢোকার সময় সাংবাদিক বন্ধুদের প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি। আজ বলতে ইচ্ছে করছে সংসদ সদস্য হওয়ায় আমি শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে পেরেছি- ‘বালিথুবা স্কুলে জরাজীর্ণ ভবনটি ডেমোলিশ করে নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয়ার জন্য।’ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যত শীঘ্র সম্ভব তিনি লোক পাঠাবেন এবং জরিপ করে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু দুই মাস অতিক্রান্ত হলো, এখনও কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এখানে উল্লেখ করা দরকার ভবনটি তিন বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। আমাদের সামনে জগন্নাথ হল ট্রাজেডির ইতিহাস রয়েছে। পার্লামেন্টে বসতে পেরেছি বলে আমার নির্বাচনী এলাকা ফরিদগঞ্জের পূর্বাঞ্চলের (অবহেলিত এলাকা) দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরতে পেরেছি। এ অবস্থানের জন্য যাদের কাছে ঋণী তা অকপটে স্বীকার করতে পেরেছি। গত ৩০ ডিসেম্বর সুন্দর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নির্বাচিত হয়েছি। সেই নির্বাচনকে নিয়ে একটি মহল সুচতুরভাবে অসত্য রটনা শুরু করেছিল। তারা খুব দ্রুত কতগুলো জিনিস উত্থাপন করে। যখন দেখল সমস্ত পৃথিবী প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তখন আস্তে আস্তে নাক নিচের দিকে নিয়েছে। কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন টক শোক করেন এবং লেখেন। প্রথমে যখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের কথা বলতেন, তাঁর সরকার যখন উন্নয়ন করে এগিয়ে চলেছে, তখন তারা বলত, ‘গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হবে না।’ কিন্তু ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮-এর নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে হলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে আবার জাতির দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, তখন তাদের আর সেই কথাটিও থাকল না। আমি জানি না তারা এখন কোথায় আছেন। ইদানীং তাদের খুব কম দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ২০০১ এবং ২০০৮-এও মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচিত হয়ে আসতে পারিনি। এবার নির্বাচিত হয়ে এসে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। একইসঙ্গে আল্লাহ পাকের প্রতি শুকরিয়া। প্রধানমন্ত্রী একটি কথা সব সময় বলেন, যে জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে সে জাতি এগিয়ে যায়, এগিয়ে যাবেই। যেমন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ আসলেই আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারছে না এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। দেশটাকে বড় আন্ডা রমাইন্ড করেছিল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে, ৫ লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। দেশটি স্বাধীন হয়েছে। এখানে বহু মুক্তিযোদ্ধা আছেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব আছেন, তাঁরা সবাই জানেন কিভাবে নয় মাস জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত পথে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল। তিনি ৭ মার্চ যে ভাষণটি দিয়েছিলেন তাতে কিন্তু একটি গেরিলা যুদ্ধের রূপরেখা দিয়েছিলেন। একজন সামরিক জেনারেল না হয়েও তিনি একটি গেরিলা যুদ্ধের সামরিক নির্দেশনা দিলেন, যে পথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশে জঙ্গীবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বীজ রোপণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়া সেদিন জঙ্গীবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার যে চারা গাছটি রোপণ করেছিলেন যা বিষবৃক্ষে পরিণত হতে চলেছিল। ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর সফল নেতৃত্বে সেই বিষবৃক্ষের ডালপালা আজ আর কিছুই নেই। এটি এখন ঠু-া মরা গাছ। জিয়াউর রহমানকে বলা হয় তিনি নাকি স্বাধীনতার ঘোষক। মুক্তিযুদ্ধের ওপর হাজার হাজার গ্রন্থ রচিত হয়েছে। একটি গ্রন্থেও পাওয়া যাবে না যে, একটি যুদ্ধে (অপারেশন) তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাহলে এই ভদ্রলোক কলকাতায় বসে কি করেছিলেন এটি অনুসন্ধানের বিষয়। তার স্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখে শুনতাম যত উন্নয়ন হয়েছে সব বিএনপি আমলে। এক কলামে লিখেছিলাম, অন্তত একটি উন্নয়নের ছবি দয়া করে বিজ্ঞাপন আকারে হলেও পত্রিকায় ছাপুন, দেখতে চাই। কিন্তু কোন সাড়া পাইনি। আমরা বুক ফুলিয়ে নির্বাচন করতে পেরেছি। কারণ, বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একটি মানুষও না খেয়ে থাকেন না। একটি মানুষও জুতা বা স্যান্ডেল ছাড়া চলেন না। আমরা এখন এই পর্যায়ে এসেছি। বিদ্যুতের কথা কি বলব। কয়েকদিন আগে একটি নির্বাচনী সমাবেশ থেকে ফিরছিলাম। পথে দেখলাম ভ্যান গাড়িতে চলেছেন ‘আলোর ফেরিওয়ালা’। এখন ডেকে ডেকে গ্রামে বিদ্যুত দিচ্ছেন! কার বাড়িতে বিদ্যুত নেই, কার ঘরে বিদ্যুত নেই আসুন, আমরা বিদ্যুত দেব। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুতকর্মীরা যাচ্ছেন। যেমন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সারের জন্য কৃষক এখন গুলি খেয়ে মরে না। সারের মালিকরা, দোকানদাররা কৃষকের পেছনে দৌড়ায়। সরকারের লোকেরা কৃষকের পেছনে দৌড়ায়। এমনি অবস্থায় আমরা নির্বাচন করেছি। নির্বাচন করতে আমাদের এতটুকু দ্বিধা ছিল না। কিন্তু লক্ষ্য করলাম বিএনপি প্রথমদিকে নির্বাচনে নামলেও পরে আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকতে শুরু করে। আমরা যখন বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলছিলাম, তো আপনাদের নেতা কে এবং নির্বাচনে জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এর কোন জবাব তারা দিতে পারেনি। তাছাড়া তাদের দলে জামায়াতের অবস্থান কি হবে সে ব্যাপারে তারা পরিষ্কার কোন জবাব দিতে পারেনি। ঠিক এভাবে বিএনপি আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে এক পর্যায়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য জনগণ বেরিয়ে এসে একচেটিয়া আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেন। জনগণ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ বছরে দেশ যে পর্যায়ে তুলে এনেছেন সেখানে আর অন্য কোন দলের নৈতিক অধিকার নেই সরকার পরিচালনা করার। তারা অযোগ্য, তারা অসৎ, তারা দুর্নীতিপরায়ণ এবং এটা আজ আদালতেও প্রমাণিত। বিএনপির প্রধান নেতা তো আজ দুর্নীতির দায়ে কারাভোগ করছেন। গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা অনুযায়ী কোন দুর্নীতিপরায়ণ ও সন্ত্রাসী দলের সদস্য হতে পারবে না। বিএনপি এই ধারাটি পরিবর্তন করে দুর্নীতিবাজ তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানায়। তারেক রহমান দুর্নীতির দায়ে এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। বিদেশে পলাতক। লন্ডনে বসে জাতির পিতার নাম নিয়ে আঙ্গুল উঁচিয়ে আপত্তিকর কথা বলেন। আমরা শুনেছি, জামায়াত-শিবিরের লোকেরা সব কিছু তৈরি করে হোটেল ভাড়া করে বক্তৃতা দিতে দেয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব- তারেক রহমানকে বাংলাদেশে এনে দন্ড কার্যকর করুন। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি এটা দ্রুত করা দরকার। এখন আমার এলাকা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে যদি বলি তাহলে ৪৩ বছর পর এই প্রথম নৌকা প্রতীক নিয়ে এখানে এসেছি। এই ৪৩ বছরে যারা সেখানে নির্বাচিত ছিলেন তাদের মধ্যে অন্তত একটি নাম উচ্চারণ না করে পারছি না। সে নাম রাজাকার মাওলানা মান্নান। দেশব্যাপী কুখ্যাত। তারপরে বিএনপির যিনি ছিলেন তিনিও কম ছিলেন না। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। আমরা তখনও বিরোধী দলে ছিলাম। চাঁদপুর-রায়পুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক হাইওয়েটি প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সুন্দরভাবে পাকা করে দিয়েছেন। এই রাস্তার মাঝে একটি বেইলি ব্রিজ খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। আমি চেষ্টা করাতে সেটি আজ পাকা ব্রিজ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে চাঁদপুরে গিয়ে সেই ব্রিজটি উদ্বোধন করে দিয়েছেন। এমনিভাবে এলাকায় অনেক কাজ করেছেন। তবে এলাকার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও খারাপ। রাস্তাগুলো দিয়ে কোন যানবাহনে চলাচল করা কষ্টদায়ক। হেঁটে চলতে গেলেও অনেক সময় পড়ে যেতে হয়। পূর্বাঞ্চলের যে অংশটি চাঁদপুর-হাজিমারা সেচ প্রকল্পের বাঁধের বাইরে সেই এলাকা বর্ষার অন্তত ৬ মাস পানির নিচে ডুবে থাকে। রাস্তাঘাট নেই বললেই চলে। বদরপুর, বাঁশ্রীপাড়া, মুন্সিরহাট, বাঁশারা, মনতলা, চকালিয়া- এসব অঞ্চলের সঙ্গে অন্ততপক্ষে থানা সদরের পাকা সড়ক যোগাযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুগ্রহ কামনা করে এখানেই শেষ করতে চাই। ঢাকা ॥ ১৪ মার্চ ২০১৯ লেখক : সংসদ সদস্য, ২৬৩ চাঁদপুর-৪, ফরিদগঞ্জ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি [email protected]
×