ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৭৩৭ ম্যাক্স বিমান উড়বে না

প্রকাশিত: ১১:২৫, ১৫ মার্চ ২০১৯

৭৩৭ ম্যাক্স বিমান উড়বে না

বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমান না উড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি বুধবার এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন। আর বিমানটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংও ৭৩৭ বিমানের সবকটির উড্ডয়ন স্থগিত করেছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রায় সব এয়ারলাইন্স বিমানটির উড্ডয়ন বন্ধ রেখেছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে ফেডারেল এভিয়েশন এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। সংস্থাটি জানায়, তারা গত বছর অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় বোয়িংয়ের বিমান দুর্ঘটনার সঙ্গে ইথিওপিয়ায় দুর্ঘটনার যে মিল রয়েছে সে তথ্য তারা জানতে পেরেছে। এদিকে বিমান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং জানায়, তারা তাদের ৩৭১টি বিমানের সব উড্ডয়ন স্থগিত করবে। এর আগে টেক্সাসের রিপাবলিকান সিনেটর এবং এভিয়েশন বিষয়ক সিনেট সাব-কমিটর প্রধান টেড ক্রুজ এফএএকে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান না উড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বিমান বিধ্বস্ত নিয়ে সিনেটে শুনানি করারও প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডায়ানে ফেইনস্টেইন ও ডেমোক্র্যাটের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এবং ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনও এ বিমান না উড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ইথিওপিয়ায় বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বিধ্বস্ত ঘটনায় ১৫৭ আরোহী নিহত হন। এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বোয়িং ৭৩৭ বিমান উড়ানো স্থগিত করে। খবর গার্ডিয়ানের। জরুরী বার্তা জারি করে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন থেকে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান উড্ডয়ন থেকে বিরত থাকবে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব বিমান এখন উড্ডয়ন রয়েছে, সেগুলো ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান হলে গন্তব্যে পৌঁছবার পর ভূমিতে থাকবে।’ ট্রাম্প বলেন, মার্কিন নাগরিক ও অন্যদের নিরাপত্তা প্রধান উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, বিমানেই সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা উচিত... এবং তারা সেগুলো খুঁজে বের করবেন। বোয়িং জানায়, কোম্পানির তৈরি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের নিরাপত্তার প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কিন্তু সতর্কতা হিসেবে বিমান না উড়ানো এবং এগুলোতে ভ্রমণের জন্য যাত্রীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তারা সাময়িকভাবে ৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের সব বিমানের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। তবে কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রশাসন (এফএএ) এক বিবৃতিতে জানায়, ইথিওপিয়ায় বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের সঙ্গে গত বছর অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ায় বিধ্বস্ত ৭৩৭ বিমানের তথ্যের মিল তারা লক্ষ্য করেছেন। এফএএ-এর এক জরুরী আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুটি দুর্ঘটনার সাদৃশ্যে নিশ্চিত হওয়া যায়, আরও ব্যাপক তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা উদ্ঘাটনে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল প্রশাসনে বোয়িং ও মার্কিন বিমান চলাচল নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এবং বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের কার্যক্রম বন্ধের জন্য কংগ্রেস ও লেবার ইউনিয়নের ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, চীন, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান উড্ডয়ন থেকে বিরত রয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার মিসর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামও ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করছে। বিমান না উড়ানোর সিদ্ধান্তে মার্কিন ভ্রমণকারীদের মধ্যে বিশৃঙ্খল মনোভাব দেখা গেছে। কারণ যখন বোযিং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান না উড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়, তখনও কয়েকটি বিমান আকাশে উড়ছিল। আর এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী ফ্লাইটগুলো পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। নিউইয়র্কের লা গার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকে মিয়ামী অভিমুখী ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের তিনটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সেখানে বহু মার্কিন যাত্রী আটকে পড়েছেন। ম্যারি বেলামোটা নামে ডোমিনিক রিপাবলিকের এক যাত্রী বলেন, ‘বিপজ্জনক বিমানে ওঠার চেয়ে কিছু সমস্যা মোকাবেলা করাও ভাল। (আমি হতাশ কারণ আমার সব পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া আমার আর কী বা করার আছে।) অন্য যাত্রীরাও হতাশা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তারা স্বস্তি পাচ্ছেন এই ভেবে যে, ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে না, ঝুঁকিপূর্ণ বোয়িংয়ে ভ্রমণ করতে হচ্ছে না। জ্যামাইকায় একটি শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া যাত্রী শ্যারন জেন্টলস বলেন, ‘আমি খুশি। আমি কোনভাবেই ওই বিমানে উঠতে চাই না। আমি আনন্দিত যে, তারা বিমান না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি এখন নিরাপদ।
×