ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিকে শেষ আটে জুভেন্টাস

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৪ মার্চ ২০১৯

 রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিকে শেষ আটে জুভেন্টাস

জাহিদুল আলম জয় ॥ দলটির নাম এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ বলেই শঙ্কা ছিল। অটুট রক্ষণভাগের জন্য বিখ্যাত তারা। তার ওপর প্রথম লেগ জিতে এগিয়ে ছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষ জুভেন্টাসেও যে আছে একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। যিনি একাই এক শ’। সবচেয়ে বড় কথা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের অবিসংবাদিত সেরা তারকা। এ কারণেই তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে দৃষ্টি ছিল পুরো দুনিয়ার। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেছেন রোনাল্ডোই। মঙ্গলবার রাতে পর্তুগীজ তারকার চোখ ধাঁধানো রেকর্ডগড়া হ্যাটট্রিকে ভর করে অতিথি এ্যাটলেটিকোকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিক জুভেন্টাস। যে কারণে এ্যাটলেটিকোর মাঠে প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারলেও ক্ষতি হয় ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের। কেননা দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে আসরের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট কেটেছে ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির দল। একই রাতে আরেক ম্যাচে নিজেদের বড় জয়ের রেকর্ড গড়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে ফেবারিট ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সিটিজেনরা ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অতিথি জার্মান ক্লাব শালকে জিরো ফোরকে। প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে জয় ছিল ৩-২ গোলে। যে কারণে দুই লেগ মিলিয়ে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের জয় ১০-২ গোলে। ২০১৮ সালে ৩৪ বছর বয়সী রোনাল্ডোকে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে জুভেন্টাস। লক্ষ্য একটাইÑ দীর্ঘ ২৩ বছর পর ইউরোপ সেরা হওয়া। গত চার বছরে দুইবার ফাইনালে হেরে রানার্সআপ হওয়ায় তাদের ক্ষুধাটা আরও বেশি। কিন্তু প্রথম লেগে হেরে যাওয়ায় বিদায়ের শঙ্কায় ছিল জুভরা। কিন্তু ফিরতি লেগে রোনাল্ডোর অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যে ট্রফি জয়ের দৌড়ে ভালভাবেই টিকে রইলো ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের শুরু থেকেই ফেডেরিকো বার্নারডেশি ও মারিও মানদুকিচকে নিয়ে পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা রোনাল্ডো আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে থাকেন। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটাই বলের দখল ছিল স্বাগতিকদের। এই অর্ধে সর্বমোট নয়টি শট গোলপোস্টে করে জুভেন্টাস। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে জুভেন্টাসের জার্সিতে ৫০০ ম্যাচ খেলার গৌরব অর্জন করেছেন দলটির বর্তমান অধিনায়ক জিওর্জিও চিয়েল্লিনি। ম্যাচ শুরুর চতুর্থ মিনিটেই চিয়েল্লিনি গোল করেছিলেন। কিন্তু সেটি বাতিল করা হয়। ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তায় দেখা যায় গোলের আগে রোনাল্ডো এ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাককে ফাউল করেন। একের পর এক আক্রমণ করা স্বাগতিকরা প্রত্যাশিত গোল পায় ম্যাচের ২৭ মিনিটে। বার্নারডেশির নিখুঁত ক্রসে চোখ ধাঁধানো হেডে লক্ষ্যভেদ করেন সুপারস্টার রোনাল্ডো। এরপর আরও কয়েকটি সুযোগ নষ্ট হয় স্বাগতিকদের। বিরতির পর ৪৮ মিনিটে আবারও স্বাগতিদের উল্লাসে ভাসান পর্তুগীজ তারকা। জুয়াও কানসেলোর ক্রসে এবারও রোনাল্ডো হেডে অতিথিদের জাল কাঁপান। রোনাল্ডোর জোরালো হেড বারপোস্টের অনেকটা ভেতর থেকে ফেরান এ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক। কিন্তু সহকারী রেফারির সহায়তায় গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। ভিডিও রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, রোনাল্ডোর হেড পোস্ট পেরিয়ে অন্তত আধহাত ভেতরে প্রবেশ করে। এই গোলটির পর দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ গোলে সমতা বিরাজ করে। এমন অবস্থায় যে দল গোল পাবে তারাই পরের রাউন্ডে যাবে। উজ্জীবিত জুভেন্টাস একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে ফল পায় ৮৬ মিনিটে। এ সময় ডি বক্সের মধ্যে বার্নারডেশিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন অতিথিদের এ্যাঞ্জেল কোরেইরা। ফলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ডাচ রেফারি বিওন কুইপার্স। স্পট কিক থেকে কাক্সিক্ষত গোল করে জুভেন্টাসকে বাঁধভাঙ্গা উৎসবে মাতোয়ারা করেন রোনাল্ডো। ম্যাচ শেষে জুভেন্টাস কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রি বলেন, ছেলেরা দারুণ পরিণত একটি ম্যাচ খেলেছে। ম্যাচটিতে নিজেদের সেরাটা দেয়ার জন্য সবাই মুখিয়ে ছিল। আমি তাদের অভিনন্দন জানাতে চাই। ঠিক এটাই আমরা প্রথম লেগে প্রত্যাশা করেছিলাম। এই ধরনের ম্যাচে অনেক ঝুঁকি থাকে। খেলোয়াড়দেরও মানসিকভাবে দারুণ চাঙ্গা থাকতে হয়। আরেক ম্যাচে ক্লাব ফুটবলে ইউরোপ সেরার মঞ্চে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে ম্যানসিটি। তাদের গোলোৎসবের জয়ে জোড়া গোল করেন সার্জিও এ্যাগুয়েরো। একটি করে গোল করেন লেরয় সানে, রাহিম স্টার্লিং, বার্নার্ড সিলভা, ফিল ফোডেন ও গ্যাব্রিয়েল জেসুস।
×