ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যবিপ্রবিতে র‌্যাগিং বর্বরতা, মানসিক সমস্যায় এক ছাত্র

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ১৪ মার্চ ২০১৯

 যবিপ্রবিতে র‌্যাগিং বর্বরতা,  মানসিক সমস্যায়  এক ছাত্র

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ প্রথম বর্ষের নবীন দুই ছাত্রকে শহরের ছাত্রাবাসে ডেকে নেন দ্বিতীয় বর্ষের (সিনিয়র) ছাত্র অলি উল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান। এরপর আটকে রেখে ওই দুই নবীন শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করা হয়। সারারাত ধরে চলে এই নির্যাতন। একপর্যায়ে এক ছাত্র অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। আজও স্বাভাবিক হয়নি। তাকে ক্লাসেও ফেরানো যায়নি। ওই শিক্ষার্থী একজন মনোবিজ্ঞানীর অধীনে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটে যশোর শহরের আরবপুর এলাকার একটি ছাত্রাবাসে। অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী সবাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্র। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রথম বর্ষের ন্যূনতম ১২ শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক অফিসে আদেশে র‌্যাগিংয়ে জড়িত ৯ ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজনকে আজীবন, একজনকে দুই বছর এবং অপর ছয়জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের আরবপুর এলাকার একটি ছাত্রাবাসে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের দুই ছাত্রকে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে আটকে দুই ছাত্রের জামা কাপড় খুলে অন্তর্বাস পরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। প্রথমে তাদের জিজ্ঞেস করা হয় কখনও যৌন সম্পর্ক করেছে কি না। এরপর বলা হয় বান্ধবীকে কখনও চুমু খেয়েছে কি না। উত্তর না বললে। তাদের হাতে ছোট স্কেল ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর বলা হয় তাদের পুরুষাঙ্গ মেপে আনতে। সেটি করলে নানাভাবে প্রশ্ন করা হয়। এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে ওই দুই নবীন ছাত্রকে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করা হয়। সারা রাত ধরে তাদের উপর এভাবে নির্যাতন চলে। এক পর্যায়ে এক ছাত্র অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। সিনিয়রদের মধ্যে একজন প্রতিবাদ করলে, তাকে অন্তর্বাস পরিয়ে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ওই ঘটনায় একজন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তিনি বর্তমানে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। এমন ৫টি ঘটনার উল্লেখ করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এইসব ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত থাকায় ৯শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
×