ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনা তাঁতপল্লীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

প্রকাশিত: ১১:৪০, ১৪ মার্চ ২০১৯

শেখ হাসিনা তাঁতপল্লীর  অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১৩ মার্চ ॥ দৈনিক জনকণ্ঠে সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর পদ্মা সেতু সংলগ্ন জেলার শিবচর এলাকায় ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’র নির্ধারিত স্থানে অবৈধভাবে রাতারাতি গড়েওঠা শত শত ঘরবাড়ি ও স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে প্রশাসন। বুধবার দুপুর ৩টার দিকে শিবচর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ উচ্ছেদ অভিযান চালায়। প্রথম দিনের অভিযানে অর্ধশতাধিক অবৈধ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন। জানা গেছে, গত বছর ১ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ’শেখ হাসিনা তাতপল্লী’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। প্রকল্পটির জন্য জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে ৬০ একর ও শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবায় ৪৮ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিসে রেকর্ডীয় ভূমির মালিকদের দাগভিত্তিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। এমন তথ্য নাওডোবা ও কুতুবপুরে ছড়িয়ে পড়লে ওই জমির মালিক ও একশ্রেণীর দালাল চক্র ক্ষতিপূরণের বাড়তি বিলের লোভে অবৈধভাবে রাতারাতি শত শত ঘরবাড়ি ও স্থাপনা নির্মাণ ও গাছপালা রোপণ শুরু করে। শিবচরের কুতুবপুর অংশে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’ প্রকল্প সরকার কর্তৃক ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় দালাল চক্র ও দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। গত ২৬ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী এলাকায় অবৈধ স্থাপনা জনসম্মুখে অবাধে উঠতে দেখে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও তাঁত বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করে প্রকল্পটি অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে জাতীয় সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করার হুঁশিয়ারি দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চান। এ ব্যাপারে বর্তমানে জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এখানে প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’র জন্য প্রস্তাবিত জমি। এই জমিতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নতুন নতুন ঘরসহ নানা স্থাপনা তৈরি করে জমি অধিগ্রহণের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এসব দেখেও মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন ও তাঁত বোর্ড নীরব রয়েছে। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে মনে করি এখানে তাঁতপল্লী করা ঠিক হবে না। আমি সংশিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। গত ২৮ জানুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠে এ সংক্রান্ত একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পর পরই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং শুরু হয়। বুধবার থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নামে প্রশাসন। অভিযান পরিচালনা করেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন, শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান ও শিবচর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল নোমান। শিবচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল নোমান বলেন, পদ্মা সেতু সংলগ্ন মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী’র নির্ধারিত স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। অভিযানে প্রায় ৫০টির বেশি অবৈধ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
×