ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার পোস্ট অফিস ডিজিটাল পোস্ট হবে

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৪ মার্চ ২০১৯

পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার পোস্ট অফিস ডিজিটাল পোস্ট হবে

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের ২ হাজার ৮৭৯টি জরাজীর্ণ পোস্ট অফিস ভবন সংস্কার করার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ভিশিন ২০২১-এর মধ্যে এসব পোস্ট অফিস ডিজিটাল পোস্ট হিসেবে জনসেবা দেবে। পর্যায়ক্রমে দেশে ১০ হাজার পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল পোস্ট করা হবে। প্রথম ধাপের ২ হাজার ৮৭৯টি পোস্ট অফিসের কাজ শুরু করা হয়েছে। এই ভবনগুলোর বেশিরভাগই জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী। প্রথম পর্যায়ে ৬টি বিভাগে ৬টি জিপিও ভবন, ২৪ জেলায় জেলা পোস্ট অফিস ভবন, ঢাকা মহানগর এলাকায় ৮টি এবং রাজশাহী মহানগর এলাকায় ১টিসহ মোট ৯টি সাব পোস্ট অফিস ভবন সংস্কার করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ তথ্য জানিয়েছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রথম ধামে ২ হাজার ৮৭৯টি পোস্ট অফিসের সংস্কার করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার পোস্ট অফিসকে সংস্কার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিটি পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল পোস্ট করতে হবে। এখান থেকে নাগরিকরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের সুবিধাও পোস্ট অফিস থেকে মানুষ নিতে পারবেন। পুরনো জরাজীর্ণ কোন ভবন থাকবে না। পোস্ট অফিস কেন জরাজীর্ণ থাকবে। দেশের সবচেয়ে পুরনো একটি সংস্থাকে আধুনিকায়ন করার জন্য যা যা করণীয় তার সব কিছু করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ডাক অধিদফতর সরকারী ডাক সেবাদানকারী একটি পুরনো সংস্থা। পোস্ট অফিসের সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। কিছু কিছু পোস্ট অফিস বিদ্যমান স্পেসও বর্তমান চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সব মিলিয়ে ডাকে পাঠানো জিনিসপত্র অক্ষুণ্ণ রাখাসহ জনগণের আমানতের অর্থের নিরাপত্তা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজস্ব বাজেটের আওতায় ডাকঘরগুলো সংস্কার করা হলেও অতি পুরনো বেশ কিছু ডাকঘর ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই এসব জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো পোস্ট অফিসকে সংস্কার করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জরাজীর্ণ পোস্ট অফিস ভবন সংস্কার সংক্রান্ত একটি প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পে উল্লেখ করা হয়েছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ডাক অধিদফতরের নিজস্ব জমিতে সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদরসহ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ও ফরিদপুর জেলা সদরে জিপিও ভবন জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে। এছাড়া ২৪ জেলায় জেলা ডাকঘর, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৮টি এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় ১টি উপ-ডাকঘরসহ বনানীতে ডাক জীবনবীমা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে পার্সেল ও লজিস্টিক গ্রহণ, সর্টিং ও বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় স্পেস এবং অর্থ মজুদের ভল্ট রুমসহ উন্নত গ্রাহকসেবা দেয়ার উপযোগী অবকাঠামোগত সুবিধার জন্য প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ডাক বিভাগ থেকে জমা দেয়া ‘ডাক অধিদফতরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় ডাক অধিদফতর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য পোস্ট অফিসের অবকাঠামোসহ নানা কিছুর উন্নয়ন করা হবে। বর্তমানে দেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে ৪টি বিভাগে জিপিও ভবন রয়েছে। দেশের জেলা শহরগুলোয় পুরনো ডাকঘরগুলোকেই জেলা ডাকঘর হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে। অন্যদিকে, ডাক অধিদফতর বিভিন্ন ডাকসেবার পাশাপাশি এজেন্সি সেবা হিসেবে অর্থ বিভাগের কতিপয় আর্থিক সেবা, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক, ডাকঘর সঞ্চয়পত্র, ডাক জীবনবীমা সেবা ইত্যাদি দিয়ে আসছে। বর্তমানে ডাক জীবনবীমা পলিসি গ্রহণকারীর সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি, এ সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। কিন্তু বীমা গ্রহণকারীদের উন্নত ও দ্রুত সেবা দেয়ার জন্য অধিদফতরের এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অবকাঠামো সুবিধা গড়ে উঠেনি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পোস্ট অফিসে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় ডাকসেবা খাতে সাধারণ চিঠিপত্র কমে গেছে। তবে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ায় দেশে ও বিদেশে পার্সেল ও লজিস্টিক পরিবহন সেবার পরিধি বেড়েছে। কিন্তু ডাক অধিদফতরের বিদ্যমান পুরনো ডাকঘরগুলোয় বিভিন্ন আকৃতির ও ওজনের পার্সেল ও লজিস্টিক গ্রহণ, প্রসেসিং ও বিতরণের প্রয়োজনীয় জায়গা নেই। জিপিও ভবন নির্মাণ করা হবে ৬টি। জেলা ডাকঘর নির্মাণ করা হবে ২৪টি। উপ-ডাকঘর নির্মাণ করা হবে ৮টি এবং ডাক জীবনবীমা ভবন নির্মাণ নির্মিত হবে ১টি। এ ছাড়া, এ প্রকল্পের আওতায় অন্য আনুষঙ্গিক ভৌত কাজ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে।
×