ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ৯ মার্চ ২০১৯

 সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ মহিলা জজ এ্যাসোসিয়েশনের ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সুপ্রীমকোর্ট সবসময়ই নারী-পুরুষের সমতা ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারীর সমান অংশগ্রহণের নীতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে। শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালের সদস্য এবং সিনিয়র জেলা জজ তানজীনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি জিনাত আরা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ, বিচারপতি ফাতেমা নজীব প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, নারীর সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর সাফল্য ও অগ্রগতি ইতিবাচক। পোশাক শিল্পে নারীদের ভূমিকা সব মহলে প্রশংসিত। নারী অধিকার রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংবিধানে নারী অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের কর্মে ও পেশায় সমতা বিধানের কথা সন্নিবেশ করা আছে। ১৯৭৪ সালে প্রথম বিচার বিভাগে নারী বিচারক নিয়োগের বাধা বিলুপ্ত করা হয়। শুরু হয় অধঃস্তন আদালতে নারী বিচারকদের পথচলা। সরকার ২০০১ সালে হাইকোর্টে এবং ২০১১ সালে আপীল বিভাগে সর্বপ্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ দেয়। তাছাড়া, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণেই বিচার বিভাগে নারীদের অংশগ্রহণ অন্যান্য পেশার মতোই লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ৫৩ জন নারী বিচার বিভাগে যোগদানের পর বর্তমানে মোট বিচারকের প্রায় সাড়ে ২৭ শতাংশই নারী বিচারক রয়েছেন। এই সংখ্যা ইউরোপ, আমেরিকা বা আমাদের প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বেশি। তাই বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কিভাবে হয়রানিমূলক মামলা কমিয়ে স্বল্প ব্যয়ে ও সময়ে মানুষকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়, তা খেয়াল রাখতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী।
×