ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে দারিদ্র্য কমছে’

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ৭ মার্চ ২০১৯

‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে দারিদ্র্য কমছে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের নেয়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর কারণে বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার কমে আসছে। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী দেশে বর্তমানে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৩৬ লাখ। এর মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৮ ভাগ অনুযায়ী ৩ কোটি ৫৫ লাখ লোক দরিদ্র। এর মধ্যে অতিদরিদ্র জনসংখ্যার পরিমাণ মাত্র ১১.১৩ ভাগ বা ২ কোটি। সরকার দরিদ্র জনসংখ্যার মান উন্নয়নের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচী শুরু করেছে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করে যাচ্ছে। বুধবার খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর লক্ষ্য অর্জন, বর্তমান পেক্ষাপট ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বিষয়ে আয়োজিত এক সেমিনারের বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। বলেন, এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ৬৪ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১৩ শতাংশ। এই কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার চেষ্টা করছে। ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির এক নম্বর লক্ষ্য দারিদ্র্যের অবসান এবং ২ নম্বর লক্ষ্য ক্ষুধামুক্তিসহ সব ধরনের লক্ষ্য অর্জন করার উদ্যোগ নিয়েছে। ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ ও ‘পিকেএসএফ’-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ (এসএসপিএস কর্মসূচী) মোহাম্মাদ খালেদ হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত আন্তরিক। এই কর্মসূচী নিয়ে যেসব সমস্যা ও সুপারিশ তুলে ধরা হলো তা নিয়ে পরবর্তীতে আন্তরিকভাবে বিবেচনা করব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ মোহাম্মাদ খালেদ হাসান বলেন, ১৯৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলেই যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে যুক্ত হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা সোপান বা উত্তরণ। সামাজিক বীমা ব্যবস্থা চালু হলেও এর উপকারভোগী এখন পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার। এ কর্মসূচীতে মানবসম্পদ উন্নয়নকে এখন গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে যে বাজেট রয়েছে তাও ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে কি-না সেটা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এজন্য দরকার যথাযথ তদারকি ও সমন্বয়। যে সম্পদ রয়েছে সেটারও সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় আমাদের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর উদ্দেশ ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মহসিন আলী বলেন, ইতোমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তিতে ছাত্রদের কোটা বৃদ্ধি পেয়েছে, সরাসরি ব্যক্তি (জিটুপি) পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়েছে, মাতৃত্বকালীন ভাতার চক্রকাল ২ বছর থেকে ৩ বছর করা হয়েছে, ভিজিডি কর্মসূচীর উপকারভোগীদের ‘আয়বর্ধক কার্যল্ডম’ বাস্তবায়নে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে।
×