ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ১২:০২, ৭ মার্চ ২০১৯

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

বি.এস.এস,বি-এড (১ম শ্রেণি) সিনিয়র শিক্ষক, কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়, সেনবাগ, নোয়াখালী। Email: [email protected] তৃতীয় অধ্যায় ॥ প্রথম পরিচ্ছেদ (বিরূপ আবহাওয়া-সহিষ্ণু ফসল ও ফসলের জাত) সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। নবম শ্রেণির কৃষি শিক্ষা ক্লাসে আতহার আলী স্যার শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির প্রবণতা মানচিত্রে প্রদর্শন করতে বললেন। শিক্ষার্থীরা একটি মানচিত্রে লবণাক্ততা বৃদ্ধির প্রবণতা প্রদর্শন করল। ক. গ্রীন হাউজ ইফেক্ট কী? খ. লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসল বা ফসলের জাতের আবাদ এলাকা বাড়াতে হবে কেন? গ. মানচিত্রে শিক্ষার্থীদের দেখানো অঞ্চলে উদ্ভিদের অভিযোজন কলাকৌশল বিশ্লেষণ কর। ঘ. ‘শিক্ষার্থীদের দেখানো এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বিশেষ ভূমিকা রাখতে পার’- বর্ণনা কর। ক. তাপ শোষণের মাধ্যমে গ্রীন হাউজ গ্যাসগুলোর (কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি) বায়ুম-লকে উত্তপ্ত করে তোলার প্রভাবকে গ্রীন হাউজ ইফেক্ট বলে। খ. লবণাক্ত মাটি থেকে সাধারণ জাতের ফসল পানি সংগ্রহ করতে পারে না। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ততার মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সমস্যা মোকাবেলার জন্য উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত সহিষ্ণু ফসলের জাতের আবাদ এলাকা বাড়াতে হবে। গ. মানচিত্রে শিক্ষার্থীদের দেখানো অঞ্চল হলো উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা। মানচিত্রের দেখানো এলাকার উদ্ভিদকে টিকে থাকতে হলে উদ্ভিদের কোষরসের ঘনত্ব মৃত্তিকা পানির ঘনত্ব থেকে বেশি হতে হবে। প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য উদ্ভিদের বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে খাপ খাইয়ে নেয়ার কৌশলই হলো অভিযোজন। উদ্ভিদ কোষের রসস্ফীতি বজায় রাখার জন্য মাটি হতে বিভিন্ন প্রকার আয়ন (শ+, ঘধ+) আহরণ করে লবণাক্ততার এ বাধা অতিক্রম করে। কিছু প্রজাতির পাতায় এক ধরনের লবণ জালিকা থাকে যার মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ন বের করে দিতে পারে। আবার কোন কোন প্রজাতির উদ্ভিদ পাতার আয়তন বাড়িয়ে শরীরে লবণের ঘনত্ব কমিয়ে নেয়। কিছু গাছের পাতার কোষে অতিরিক্ত আয়ন জমিয়ে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। কিছু কিছু উদ্ভিদ আছে যার মূলের কোষে রসস্ফীতি বজায় রাখার জন্য কোষ গহ্বরে বিভিন্ন প্রকার জৈব দ্রব্য জমা করে রাখে। এভাবে মানচিত্রে শিক্ষার্থীদের দেখানো এলাকার বিভিন্ন উদ্ভিদ বিভিন্ন অভিযোজন কলাকৌশল অবলম্বন করে প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের টিকিয়ে রাখে। ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষার্থীরা মানচিত্রে উপকূলীয় অঞ্চল নির্দেশ করে। পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, বরগুনা ইত্যাদি জেলা বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এ অঞ্চলের মাটিতে লবণাক্ততার প্রভাব খুব বেশি দেখা যায়। ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও কম বৃষ্টিপাতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ধারা আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আরও অনেক এলাকায় লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফসল উৎপাদনে লবণাক্ততার ভয়াবহ প্রভাবের বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে জানাবে। উপকূলীয় অঞ্চলে আমন মৌসুমে বিআর ২৩, ব্রি ধান ৪০, ব্রি ধান ৪১ এবং বোরো মৌসুমে ব্রি ধান ৪৭, বিনা ধান ৮ জাতের লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান এবং অন্যান্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের চাষ জনপ্রিয় করতে এসব ফসলের চাষ পদ্ধতি চিত্রের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে প্রদর্শনের কার্যক্রম খুব কার্যকরী। এতে এলাকাবাসী নিজে উৎসাহিত হয়ে এসব নতুন জাতের ফসল চাষ করে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখবে এবং অন্যকেও উৎসাহিত করবে। এভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকদের ভাল ফসল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
×