ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলহাজ টেক্সটাইলকে ৫৫ কোটি টাকা প্রদানের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ৭ মার্চ ২০১৯

আলহাজ টেক্সটাইলকে ৫৫ কোটি টাকা প্রদানের নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ অগ্রণী ব্যাংক ও আলহাজ টেক্সটাইলের মামলার আদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি ইমান আলীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী অগ্রণী ব্যাংককে আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বাকি ২৮ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে আগামী ৭ এপ্রিল আদেশ দেবেন সুপ্রীমকোর্ট। অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে এর আগে আলহাজ টেক্সটাইল মিলসের এফডিআর সংক্রান্ত মামলার রায় দেন উচ্চ আদালত। এতে বলা হয়েছে, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলহাজ টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষকে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থ পরিশোধ করে সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের এমডিকে নির্দেশ দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে আলহাজের পাওনা অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীকালে এর বিরুদ্ধে আপীল করে অগ্রণী ব্যাংক। উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে এফডিআর করা অর্থ যথাসময়ে ফেরত না দেয়ায় ব্যাংকটির বিরুদ্ধে মামলা করে আলহাজ টেক্সটাইল। অগ্রণী ব্যাংকের ঈশ্বরদী ব্রাঞ্চের কাছে এ কোম্পানির মোট ৫২ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৩৭৫ টাকা দাবি ছিল। পাওনা টাকা আদায়ে আলহাজ টেক্সটাইল আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালত কোম্পানির পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং ব্যাংকটিকে বাকি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক আদালতের নির্দেশ সম্পূর্ণ না মেনে আট কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা কোম্পানিকে প্রদান করে। পরে বাকি টাকা পাওয়ার জন্য কোম্পানিটি পুনরায় আদালতের শরণাপন্ন হয়। আলহাজ টেক্সটাইল সরকারী প্রতিষ্ঠান বা বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে কোম্পানিটিকে বেসরকারীকরণ করা হয়। এর ফলে দুই কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ৮০৫ টাকা ঋণ হিসেবে আসে, যা কোম্পানিটিকে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু দেখা যায়, এ ঋণ হয়েছিল বিটিএমসির সময়ে। তাই এ টাকা পরিশোধের জন্য সরকার, বিটিএমসি, বিটিএমএ এবং ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে কোম্পানি, বিটিএমসি ও ব্যাংকের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিমতে ঋণ পরিশোধের জন্য স্পেশাল ফান্ড গঠন করা হয়। ফান্ডটির ক্যাশ ক্রেডিট কোম্পানির পক্ষ থেকে দেয়া হবে এবং সুদ ব্যাংক থেকে পরিশোধ করা হয়। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ফান্ডটিতে দুই কোটি ৯ লাখ টাকা জমা করা হয়। পরবর্তীকালে চুক্তি অনুযায়ী স্পেশাল ফান্ডটি ফিক্সড ডিপোজিটে রূপান্তর করা হয় এবং লিয়েন মার্ক করে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে রাখা হয়। ৩১ মে ২০০৮-এ বিটিএমসির ঋণ পরিশোধ সম্পন্ন হয়। আর এ ঋণ পরিশোধের পর হিসাবে মোট ২৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪২ হাজার ১৭৮ টাকা অবশিষ্ট থাকে। ফিক্সড ডিপোজিটের এ টাকা থেকে ব্যাংক কোম্পানিকে পাঁচ কোটি সাত লাখ ৬৪ হাজার ৭৯১ টাকা পরিশোধে সম্মত হয়। তাই কোম্পানিটি এফডিআরে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয় এবং ২০০৯ সালে ব্যাংকের বিরুদ্ধে রিট করে। ২০১১ সালে আদালত সুদসহ এফডিআরের টাকা কোম্পানিকে পরিশোধের জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দেন।
×