ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুরান ঢাকায় টাস্কফোর্সের অভিযান চলবে- তবে অযথা হয়রানি নয়

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৭ মার্চ ২০১৯

পুরান ঢাকায় টাস্কফোর্সের অভিযান চলবে- তবে অযথা হয়রানি নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকা থেকে সব ধরনের কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা অপসারণে টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং ব্যবসায়ীরা যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হন সেই বিষয়ে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। অপরদিকে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গোডাউন সরানো হবে ও একইসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে পুরান ঢাকায় ক্ষতিকারক কেমিক্যাল বিক্রি বা মজুদ করছে কি না তা বের করতে ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এছাড়া পুরান ঢাকা থেকে সব ধরনের কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা অপসারণে ডিএসসিসি গঠিত টাস্কফোর্স অনিয়ম ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ও কেমিক্যাল কারখানা সরাতে ছয় মাসের সময় চেয়েছেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা। বুধবার সকালে নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ অডিটরিয়ামে পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসায়, সঙ্কট ও সম্ভাবনা : করণীয় ও বর্জনীয়’ বিষয়ক মুক্ত আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আলি আহমেদ খান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান এমপি বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গুদাম সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু যে কোন কারণে তা হয়নি। এখান থেকে এসব গোডাউন আমাদের সরাতে হবে। কোন ধরনের ব্যবস্থা না নিয়ে ধাক্কা দিয়ে তো তাদের বের করে দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের জাতীয় অর্থনীতিতে অনেক অবদান রয়েছে। ৯ বছর আগে ব্যবসার ধরন যা ছিল এখন আরও বেড়েছে। এটা ঠিক হয়নি। কারণ আমাদের বোঝা উচিত ছিল আমাদের এখান থেকে সরতে হবে। সালমান রহমান বলেন, এখন অগ্নিকা-ের জন্য ক্ষতিকর ২৯ দাহ্য পদার্থের তালিকা করা হয়েছে। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আরও বাড়ানো হবে। কিন্তু এটি ৩২ এর বাইরে যাবে না। তিনি বলেন, নিমতলীর ঘটনার পরে যেই পদক্ষেপগুলো নেয়ার কথা ছিল, সেগুলো নেওয়া হলে আজ চকবাজারে এই ঘটনা ঘটত না। আমাদের সেই ভুল থেকে শিখতে হবে। সেই সময়ে যে পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল তা আমরা এবার নেব। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, পুরান ঢাকার দুর্ঘটনা আমি দেখেছি। এই বিভৎস চিত্র নগর কর্তৃপক্ষ মেনে নিতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী মেনে নিতে পারেননি। আমরা চাই এই টাস্কফোর্স ঝুঁকি নিরসন করে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেবে। টাস্কফোর্স যখন গঠন করেছি তখন তার কার্যপরিধি নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২৯টি ছাড়াও অনেক দাহ্য পদার্থ আছে। মেয়র খোকন বলেন, টাস্কফোর্স এই জন্য গঠন করি নাই যে, পুরান ঢাকা থেকে সব ব্যবসায়ীদের তাড়িয়ে দেব, তাদের ব্যবসায় বুলডোজার চালিয়ে দেব, তাদের লাঞ্ছিত করব। টাস্কফোর্সের উদ্দেশ হচ্ছে ঝুঁকি নিরসণের মধ্য দিয়ে নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তারপরও আমি টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছি যে, কোন ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা যাবে না। অগ্নিকা-ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ অপসারণ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে কোনভাবেই কোন ব্যবসায়ীকে হয়রানি বা দাহ্য পদার্থ নয় তার বিরুদ্ধে অভিযান করা হবে না।
×