ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দুই মাসে রেমিটেন্স ২৯০ কোটি ডলার

প্রকাশিত: ১১:০৩, ৬ মার্চ ২০১৯

দুই মাসে রেমিটেন্স ২৯০ কোটি ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জানুয়ারি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স আসার পর ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা কমেছে। তবে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় রেমিটেন্স কিছুটা কম হলেও গতবছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে প্রায় ১৭ কোটি মার্কিন ডলার। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠায়। ফেব্রুয়ারি মাসে তা কিছুটা কমে নেমে আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স এসেছিল ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। একই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গতবছরের প্রথম দুই মাসে রেমিটেন্স আসে ২৫২ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স আসে যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ও ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এই দুই মাসে মোট রেমিটেন্স আসে ২৯০ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। গত জানুয়ারি মাসে এ যাবতকালের এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আসে। এর আগে প্রবাসীরা এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স পাঠিয়েছিল ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। ওই সময়ে দেশে রেমিটেন্স আসে ১৪৯ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে অর্থাৎ গত জুলাই-১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি-১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিটেন্স আসে ৯৪৬ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৯০ কোটি মার্কিন ডলার বা ১০ শতাংশ। সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে গত জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগস্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নবেম্বর ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার, গতবছরের জানুয়ারি মাসে ১৫৯ কোটি ডলার, সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। রেমিটেন্স বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে হওয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা কমেছে। তবে, গতবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। এটা একটা ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষ করে অবৈধ হু-ি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্যালেন্ডার বছর হিসাবে, ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০১৫ সালে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স আছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার কোটি ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূতভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হু-ির মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে করে গত দুই অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে। এ কারণে রেমিটেন্স বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়।
×