ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সোনার চালান আসছে আকাশপথে, ধরা পড়ছে সড়কে

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ৬ মার্চ ২০১৯

সোনার চালান আসছে আকাশপথে, ধরা পড়ছে সড়কে

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মহানগর ও জেলা পুলিশের দুটি পৃথক অভিযানে ধরা পড়া স্বর্ণের বার আটকের ঘটনা এখন টক অব দ্য টাউন। কিন্তু চুপসে আছে সিভিল এভিয়েশন ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ। ধরা পড়া সাতশ স্বর্ণের বার ইউনাইটেড স্টেটস অব আরব আমিরাতের (ইউএই) তৈরি। ফলে পুলিশ নিশ্চিত নৌ কিংবা সড়ক পথে আসেনি এসব স্বর্ণের বার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতারকৃত চারজনকে পুলিশ স্বর্ণ চোরাচালানের বাহক হিসেবে এফআইআর দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে। সে হিসাব অনুযায়ী স্বর্ণ ও গাড়ির মূল মালিক ও পাচারকারীদের খুঁজছে এমন দাবি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের। এদিকে গ্রেফতারকৃত চারজনকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিরসরাইয়ের দুজনকে ৫ দিন আর সিআরবির ২ জনকে ৪ দিন আদেশ দেয়া হয়েছে। তবে পুলিশের একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, সিএমপি ও জেলা পুলিশের যৌথ সিদ্ধান্তে এ চারজনকে স্বর্ণ চোরাচালানের বাহক হিসেবে মামলায় দেখানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বর্ণ পাচারকারীরা নিজেদের বাহক দাবি করলেও পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে তারা নিজেরা এর আগে অনেকবার চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণের বার দুবাই থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে ও পরে তা ঢাকায় নিয়ে যায়। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, পাচারকারীরা ২৪ ক্যারেট মানের ৬০০ পিস স্বর্ণের বার ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথেই পুলিশ তাদের আটক করে। মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানাধীন সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের এসপি নুরে আলম মিনা সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এসব বার দুবাই থেকে আনা। গ্রেফতারকৃতরা বাহক। আমরা এদের গড ফাদারদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের বাহক দাবি করেছে। তবে রিমান্ডে আনার পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে। এরপর তদন্তে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। গত রবিবার অবৈধ স্বর্ণ বহনের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এ চেকপোস্ট বসায়। জোরারগঞ্জ থানাধীন উত্তর সোনাপাহাড় এলাকার চিনকি আস্তানা এলাকায় আকস্মিক অভিযান চালায় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। দুপুরে চট্টগ্রাম হতে ঢাকাগামী (চট্টমেট্রো-ঘ-১৮-২১৪৪) নম্বরের মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার পাজারো জিপ গাড়িকে থামিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এর আগে তল্লাশিকালে জিপের তেলের টাঙ্কির পাশে শক্তভাবে বাঁধা অবস্থায় ৬০টি প্যাকেট পাওয়া যায়। প্যাকেটগুলো খোলার পর প্রতিটি প্যাকেটে ১০টি করে সর্বমোট ৬০০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। এসব স্বর্ণের আনুমানিক ওজন ৬০ কেজি এবং বাজারমূল্য ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় গাড়িচালক চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনার মোবারক পাড়া এলাকার আলী হোসেনের ছেলে করিম খান প্রকাশ কালু ও গাড়ির যাত্রী একই এলাকার মৃত শহীদুল ইসলামের ছেলে রাকিব। তাদের গাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বারের বিষয়ে কোন সঠিক তথ্য দিতে যেমন পারেনি তেমনি কোন ধরনের কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি তারা। ফলে পুলিশ এসব স্বর্ণ চোরাচালানের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে।
×