ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বর্ষা মৌসুমে হুমকির মুখে স্থানীয় স্থাপনা

রাজশাহীর পদ্মায় বালু উত্তোলনের হিড়িক

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৫ মার্চ ২০১৯

রাজশাহীর পদ্মায় বালু উত্তোলনের হিড়িক

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ প্রশাসনের কড়াকড়ি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের তদারকি সত্ত্বেও রাজশাহীর পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। জেলার বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের হিড়িক। উপজেলার পদ্মা নদীর চকরাজাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় আগামী বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় স্থাপনাও ভাঙ্গনের হুমকিতে। এ কারণে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান চরবাসী। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। চরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় পদ্মার বৈরাগীচরের মিঠু মণ্ডল, সাইদ মণ্ডল, জমির মণ্ডল, সাবুল খামারু কয়েক বছর ধরে বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীর চকরাজাপুরসহ কয়েকটি স্থানে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত খননযন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল। সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বালু উত্তোলন করা অবস্থায় একটি ড্রেজার ও চারটি নৌকা জব্দ করা হয়। এছাড়া ৮ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারপর কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। তবে প্রশাসনের তৎপরতা নেই ভেবে গত শনিবার দুপুর থেকে তারা আবারও বালু উত্তোলন শুরু করেছে বলে জানা গেছে। চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ডালিম মেম্বার বলেন, বালুদস্যুরা যেভাবে বালু উত্তোলন করছে, তাতে আগামী বর্ষায় একাধিক গ্রামে ভাঙ্গন শঙ্কা দেখা দিতে পারে। বালু উত্তোলনে বাধা দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করার পর থেকে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়েছি। চকরাজাপুর ইউনিয়নের নারী সদস্য ও পলাশিফতেপুর চরের ফাতেমা খাতুন বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে জমিতে বালু পড়ে নষ্ট হচ্ছে। এলাকার ফসলি জমি অনাবাদি হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনে বৈধতা নেই। অবৈধ বালু উত্তোলনের ব্যাপারে আমরা সব সময় তৎপর। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি অবৈধ বালু উত্তোলন করা অবস্থায় একটি ড্রেজার ও চারটি নৌকা জব্দ করা হয়। এছাড়া ৮ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারপরও আবার বালু উত্তোলন করলে পুনরায় ব্যবস্থা নেব। প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি বাঘায় পদ্মা নদীর বালুঘাট পরিদর্শনে গিয়ে অবৈধ বালুদস্যুদের হামলার শিকার হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমরুল কায়েশ, তার নিরাপত্তা প্রহরী পলিন ও গাড়ি চালক রাজু। এরপর স্থানীয় প্রশাসন আরও কঠোর হলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না বালু উত্তোলনকারীদের দৌরাত্ম্য।
×