ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ১-০ মিয়ানমার

মিয়ানমারকে হারিয়ে মূলপর্বে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৫১, ২ মার্চ ২০১৯

 মিয়ানমারকে হারিয়ে মূলপর্বে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ অনেকদিন ধরেই রোহিঙ্গা শরণার্থী ফেরত পাঠানো নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বেশ কূটনৈতিক লড়াই চলছে বাংলাদেশের। আর এবার সেই দেশটিতেই এএফসি অনুর্ধ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে (রাউন্ড-২, গ্রুপ ‘বি’) খেলতে গেছে বাংলাদেশের অনুর্ধ-১৬ নারী জাতীয় ফুটবল দল। শুক্রবার স্বাগতিক মিয়ানমারের মুখোমুখি হয় লাল-সবুজরা। মাঠের লড়াইয়ে বাংলার বাঘিনীরাই শেষ পর্যন্ত হেসেছে বিজয়িনীর হাসি। তারা জিতেছে ১-০ গোলে। যে কোন লেভেলের ফুটবলে এটাই বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের প্রথম জয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। আর এই জয় দারুণ এক সুখবর বয়ে এনেছে গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যাদের জন্য। কেননা এই জয়ে তারা এই আসরের মূলপর্বে খেলা নিশ্চিত করলো এক ম্যাচ হাতে রেখেই। মূলপর্বের আসর অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডে। এই ম্যাচের আগে একই গ্রুপের আরেকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যাতে চীন ৭-০ গোলে ফিলিপিন্সকে হারিয়ে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে চীন ৫-০ গোলে হারিয়েছিল মিয়ানমারকে। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে চীন ‘বি’ গ্রুপে আছে শীর্ষ অবস্থানে। যদিও বাংলাদেশও অর্জন করেছে সমান ৬ পয়েন্ট। কিন্তু তাদের গোল চীনের চেয়ে ১টি কম (১১টি, নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ১০-০ গোলে হারায় ফিলিপিন্সকে)। চীন-বাংলাদেশ উভয় দলই এখনও গোল খায়নি। আগামী রবিবার এই চীনের সঙ্গেই শেষ গ্রুপ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে চীন ড্র করলে চীন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে এবং বাংলাদেশ জিতলে বাংলাদেশই হবে গ্রুপসেরা। প্রতি গ্রুপ থেকে ২টি করে মোট ৪টি দল থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য মূলপর্বে খেলবে। এএফসি অনুর্ধ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে মোট ছয়টি গ্রুপ আছে। প্রতি গ্রুপে ৫টি করে মোট ৩০ দেশ খেলবে। ছয় গ্রুপের ছয় চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা দুই রানার্সআপ দল মোট আটটি দল খেলবে পরবর্তীপর্বে। এই আট দলের সঙ্গে সরাসরি খেলবে আগেই যোগ্যতা অর্জন করে বসে থাকা চার দেশÑ স্বাগতিক থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান (তবে থাইল্যান্ড স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি মূলপর্ব খেলবে বলে তাদের বদলে ওই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ পেয়েছে ইরান)। এই পর্বেই খেলার আশা পূরণ হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বারের মতো। এই আসরে (এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব, সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল) নিজেদের মাঠে ২০১৬ সালেও বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারপর এই আসরের মূলপর্বে (২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত) অংশ নেয়। মূলপর্বে অংশ নিয়েছিল আট দল। বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বে খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ আসরে মূলপর্বে যেতে একটি ধাপ পেরোতে হয়েছিল। কিন্তু এবার দল বেশি থাকায় দুটি ধাপ পেরোতে হবে বাংলাদেশকে। শুক্রবার মান্দালয়ের মান্দালার থিরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মিয়ানমার-বাংলাদেশ ম্যাচটি যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। দু’দলই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ করে খেলে। তবে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা এবং গোলরক্ষক রূপনা চাকমার চমৎকার নৈপুণ্যে কোন গোল হজম করেনি। মিয়ানমার দল যথেষ্ট ফাউল করে খেলার চেষ্টা করে। খেলার শেষদিকে বাংলাদেশের স্ট্রাইকার শামসুন্নাহার জুনিয়র আহত হয়ে মাঠ ছাড়ে। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর ৬৭ মিনিটে কর্নার থেকে গোল বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয় এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা। তার বাঁ পায়ের উড়ন্ত-বাঁকানো কর্র্নার মিয়ানমারের গোলরক্ষকের হাত ফস্কে জালে চলে গেলে উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলার বাঘিনীরা (১-০)। খেলার শেষদিকে তহুরা খাতুন গোলরক্ষককে একা পেয়ে যে শট নেয় তা অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে গেলে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। চীন এবং বাংলাদেশের কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে মূলপর্বে ওঠার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে মিয়ানমারের।
×