ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ‘আগুন’ দ্বৈরথ

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২ মার্চ ২০১৯

  ভারত-অস্ট্রেলিয়া ‘আগুন’ দ্বৈরথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশে কিংবা প্রতিপক্ষের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মুখোমুখি শেষ দুটি ওয়ানডে সিরিজেই জিতেছে ভারত। ঘরের মাঠে ভয়ঙ্কর বিরাট কোহলিদেরই তাই এই সিরিজে নিশ্চিত ফেবারিট হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে স্বাগতিকদের ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে এ্যারন ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপ সামনে রেখে শক্তিধর দুই দলের পাঁচ ওয়ানডের সিরিজটাকে তাই অনেকেই ‘আগুন’ দ্বৈরথ হিসেবে দেখছেন। যেখানে একদিকে হিটম্যান রোহিত শর্মা, সুপার বিরাট কোহলি, কুলম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনি, চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব, ফর্মের তুঙ্গে থাকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর সঙ্গে জমবে লড়াই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ডি অর্চি শর্ট, নাথান কুল্টার নাইলদের। হায়দরাবাদে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায়। বিশ্বকাপের আগে সিরিজ জিতে নিজেদের শতভাগ চাঙ্গা রাখতে মরিয়া ভারত। এমনটাই জানিয়েছেন কোচ রবি শাস্ত্রী, ‘হেরে যাওয়া টি২০ সিরিজ নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। তবে এটি ঠিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। কিন্তু আমাদের আসল পরীক্ষা ওয়ানডেতে। কারণ এই ফরমেটে আমরা দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছি। এছাড়া সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে ভাল করতে হলে সেরা ফর্ম ধরে রাখতে হবে এবং জয়ের মধ্যে থাকতে হবে। এই সিরিজটি আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের দলও চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া খেলোয়াড়দের আরও একবার ভাল করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি ছোট ছোট সমস্যাগুলোও সমাধান করা হবে।’ অন্যদিকে টি২০ সিরিজের দুর্দান্ত পারফর্মেন্স সফরকারীদের বাড়তি প্রেরণা যোগাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেন, ‘টি২০ সিরিজে আমরা দারুণ খেলেছি। ভারতের মাটিতে এভাবে সিরিজ জয় সত্যিই প্রশংসনীয়। এই সিরিজ জয় আমাদের অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। ওয়ানডেতে ভাল করতে এই আত্মবিশ্বাস কাজে দিবে। তবে এই সিরিজটি আমাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হবে। এখানে আমরা বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। এর মধ্যেও সিরিজ জয়ই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে সিরিজটি বেশ কঠিন হবে। নিজেদের মাঠে ভারত ওয়ানডেতে অনেক বেশি শক্তিশালী দল। তাদের বিপক্ষে অনেক বেশি ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে ছেলেদের।’ অস্ট্রেলিয়ার মাথাব্যথার কারণ হতে পারে ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং। অতিথিদের প্রেরণা অবশ্যই টি২০ সিরিজের পারফর্মেন্স। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে স্বাগতিকদের ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে ফিঞ্চবাহিনী। বিশাখাপত্তমে লো-স্কোরিং প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে ম্যাচ হারে টিম ইন্ডিয়া। ওই জয়ের পেছনেও বড় ধরনের অবদান ছিল ম্যাক্সওয়েলের। ১২৭ রানের টার্গেটে দলের ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থ তখন ব্যাট হাতে ৪৩ বলে ৫৬ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। অবশ্য বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন পেসার কুল্টার নাইল। দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক কোহলির ৩৮ বলে অপরাজিত ৭২ রানের সঙ্গে লোকেশ রাহুলের ২৬ বলে ৪৭ ও মহেন্দ্র সিং ধোনির ২৩ বলে ৪০ রানে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯০ রান করে ভারত। ১৯১ রানের টার্গেট একক প্রচেষ্টায় স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। ৫৫ বলে ১১৩ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটর জয় এনে দেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। টি২০ হারে হতাশ হলেও ওয়ানডে নিয়ে ভারত যে খুব বেশি চিন্তিত নয় শাস্ত্রীর কথায় সেটিই ফুটে উঠেছে। ৫০ ওভার ফরমেটে দুর্দান্ত ফর্মে তারা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ জয়ের পর টানা তিনটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জিতেছে ভারত। দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবং বিদেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে কোহলিবাহিনী। তাই দুর্দান্ত ফর্মকে কাজে লাগিয়ে আরও একটি সিরিজ পকেটে পুরতে চায় ভারত। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে নিজেদের আরও একবার ঝালিয়ে নিতে মরিয়া ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডেতে এ পর্যন্ত দু’দুল ১৩১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে ভারত ৪৭টি এবং অসিরা জিতেছে ৭৪টিতে। ২০১৭ সালে দেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে এবং সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় কোহলির দল।
×